Advertisement
Advertisement

Breaking News

মশা

মশা মারতে কামান নয়, ভেষজ ধূপ তৈরি করে সফল বর্ধমানের বিজ্ঞানীরা

নোনা আতার পাতা গুঁড়ো থেকে এমন অভাবনীয় সাফল্য বলে দাবি গবেষকদের৷

Researchers of Burdwan make anti mosquito insense sticks
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 2, 2019 5:31 pm
  • Updated:August 2, 2019 9:43 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মশা নিধন গবেষণায় ফের সাফল্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের গবেষকদের। ন্যানো টেকনোলজি প্রয়োগ করে মশার লার্ভা নিধনের আগেই সাফল্য পেয়েছিলেন এখানকার গবেষকরা। এবার মশককূলের বিনাশে ভেষজ ধূপ তৈরি করেছেন গবেষকরা। ধূপগুলির কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। ধূপের ধোঁয়ায় মারা পড়বে মশা। একইসঙ্গে ধূপে ব্যবহৃত উপাদানের সাহায্যে মশার লার্ভাও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব করেছেন গবেষকরা।

[আরও পড়ুন: বক্সার জঙ্গলে ফের ট্রেন চালকের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল হাতিদের]

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক গৌতম চন্দ্র এনিয়ে বহু গবেষণায় সাফল্য পাওয়া বিজ্ঞানী। তাঁর নেতৃত্বে বর্ধমান মহিলা কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুব্রত মল্লিক মশা নিধনে এই ভেষজ ধূপ তৈরিতে সাফল্য পেয়েছেন। নোনা আতা, যা আতার এক ধরনের প্রজাতির পাতা থেকে তৈরি হয়েছে এই মশাবিনাশকারী ধূপ। নোনা আতার বৈজ্ঞানিক নাম অ্যানোনা রেটিকুলাটা (Annona Reticulate)। ইংরেজিতে ‘কাস্টার্ড অ্যাপেল’ বলা হয়ে থাকে। গৌতমবাবু জানান, ‘এই নোনা আতার পাতা গুঁড়ো করে তার সঙ্গে কাঠের গুঁড়ো ও চারকোল পাউডার মেশানো হয়। তারপর বেলের আঠা বা বেল গাছের আঠা মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। লেই বানিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে শুকিয়ে নিতে হবে। প্রতিটি টুকরোর ওজন চার গ্রাম মত হবে। সাধারণ মাপের একটি ঘরে এই টুকরো জ্বালালে মশার জ্বালা থেকে মুক্তি নিশ্চিত।

Advertisement

গবেষকরা আরও জানাচ্ছেন, নোনা আতার পাতার নির্যাস মশার লার্ভা ও পিউপা নিধনে সহায়ক। আবার যে জলে মশারা ডিম পাড়ে, সেখানে নোনা আতার পাতার নির্যাস ঢেলে দিলে সেখানে আর তারা ডিম পাড়তে চায় না। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে তা প্রমাণিতও হয়েছে। এবার মশা নিধনে নোনা আতার পাতার গুঁড়ো দিয়ে ধূপ তৈরিতে সাফল্য মিলেছে যাতে মশা নিধন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ ঘনফুট মাপের কাচের পরীক্ষাগার রয়েছে। সেখানে ১০০টি স্ত্রী মশা ছেড়ে দিয়েছিলেন গবেষকরা। তারপর ওই হার্বাল ধূপের একটা টুকরো জ্বালিয়ে দেন। প্রায় ২৫ মিনিট ধূপটি জ্বলে। তাতেই সবকটি স্ত্রী মশা নিচে পড়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সবগুলিই মারাও যায়। এই গবেষণায় স্ত্রী মশা বেছে নেওয়ার কারণ একটাই৷ তারাই একমাত্র মানুষের দেহ থেকে রক্ত চুষে খায়।

[আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘিরে ক্লাসের মধ্যেই পড়ুয়াদের হাতাহাতি, রঘুনাথগঞ্জে ধুন্ধুমার]

তবে এই ভেষজ ধূপ তৈরিতে সময় লাগে কিছুটা। নোনা আতার পাতা সংগ্রহ করে তা শুকোতে ১৫দিন মত সময় লাগে। পাতা শুকোলে তা মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিয়েছিলেন গবেষকরা। তারপর অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে ধূপ তৈরি করেন। গৌতমবাবু বলেন, “এই ভেষজ ধূপ তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। বাজারচলতি রাসায়নিক ধূপের মত ক্ষতিকারক নয়। আবার মশার বিনাশে খুবই কার্যকরী।” ইতিমধ্যে এই গবেষণা ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফার্মা অ্যান্ড বায়োসায়েন্স-এ প্রকাশিত হয়েছে।প্রশংসিতও হয়েছে। বলা যেতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মুকুটে নতুন পালক সংযোজিত হল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement