সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পার্টনারের সঙ্গে কেমিস্ট্রি জমছে না! হরমোনের ওঠা-নামা? নানা কারণেই কমতে পারে মিলনের ইচ্ছে। তখন কী করবেন? অকপট রুবি জেনারেল হসপিটালের এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা. অজিতেশ রায়
কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু দশা। আরাম শুধু লেপ-কম্বলের তলায়। লেপের ওমের সঙ্গে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর শরীরী উষ্ণতা মিলেমিশে গেলে গরম হতে বাধ্য শরীর। ঝিমিয়ে পড়া যৌন জীবন নিমেষে হয়ে উঠবে কালো তেজি ঘোড়া। দাম্পত্য সুখের হয় শুধু জায়া-পতি নয়, লিবিডোর গুণেও। ভালবাসার মাখামাখি-শরীরী চাহিদা-তৃপ্তির দেওয়া নেওয়া দৃঢ় করে বিছানার সম্পর্কের ভিত। কিন্তু সেই সুখরস কমে গেলে? অনীহায় পাস ফিরে শুলে? মিলন অসম্পূর্ণ হলে? তিলে তিলে ভাঙন অনিবার্য। একটা বয়সের পর পুরুষ ও মহিলার যৌন ইচ্ছা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বিছানার সম্পর্ক শিথিল হলে সাবধান।
ইচ্ছা কমার কারণ ও চিকিৎসা
লিবিডো বা যৌন ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ইরেকটাইল ডিসফাংশন – পুরুষের মানসিক বা সাইকোলজিক্যাল সমস্যার জন্য এই সমস্যা বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে লিবিডো থাকা সত্ত্বেও লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা হয়। মেলামেশায় সমস্যা হয়। মূলত স্বামী-স্ত্রী বা পার্টনারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতি হলে, দু’জনের মধ্যে কলহ হলে, ডিপ্রেশনে থাকলে বা কাজের চাপ থাকার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। আবার অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট ওষুধ খেলেও একই অসুবিধার মুখোমুখি হতে পারে। এর সঙ্গে অতিরিক্ত ওজন থাকলে, অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান করলে, হাই ব্লাড সুগার, হাই ব্লাড প্রেশার থাকলেও লিঙ্গ উত্থানে সমস্যায় পড়তে হতে পারে পুরুষকে।
এক্ষেত্রে দু’জনে মিলে বসে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিলে, মানসিক চাপমুক্ত হলে, মেলামেশার ভাল পরিবেশ পেলে ডিসফাংশনের সমস্যা কেটে যায় আপনা থেকেই। প্রয়োজনে স্ট্রেস কমানোর ওষুধ দেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে কাউন্সেলিং করলেও সমস্যামুক্তি সম্ভব। ডিপ্রেশনের ওষুধ থেকে সমস্যা হলে অন্য ওষুধ দিতে হবে চিকিৎসককে। মদ-ধূমপান-ওজনের সমস্যার কারণে এমন হলে নিয়মিত ব্যায়াম ও পরিশীলিত জীবনযাপন করলেই ওষুধ ছাড়াই ঠিক হয়ে যায় সমস্যা। ভায়াগ্রা জাতীয় বেশ কিছু ওষুধও এই ধরনের অসুবিধায় ভাল কাজ করে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নেবেন না। না হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বিপদ অবশ্যম্ভাবী।
লিবিডো নেই, সঙ্গে ইরেকটাইল ডিসফাংশন – পুরুষের এই সমস্যা থাকলে সতর্ক হোন। ডাক্তার দেখান দ্রুত। এক্ষেত্রে দেখা হয় টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমেছে কি না, প্রোল্যাক্টিন হরমোনের মাত্রা বেড়েছে কি না। পিটুইটারি গ্রন্থিতে বা শুক্রাশয়ে গন্ডগোল থাকলেও শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি হবে না। এর ফলে যৌন ইচ্ছাও কমে যাবে। টেস্টিস না হরমোন গ্রন্থির সমস্যা তা শনাক্ত করে প্রয়োজনে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি করলেই রোগী একদম স্বাভাবিক হয়ে যাবেন।
লিবিডো ঠিক আছে, হরমোনের সমস্যা নেই, তবু ডিসফাংশন – ইরেকশন ও ইজাকুলেশন দুটোই ঠিক মতো হয় অটোনমিক নার্ভের জন্য। নার্ভের গন্ডগোল থাকলে ইরেকশনে সমস্যা হয়। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস থাকলে নিউরোপ্যাথির কারণেও নার্ভের সমস্যায় ইজাকুলেশনে সমস্যা হতে পারে। আবার পেনিসে রক্তবাহী শিরায় অর্থাৎ ভাসক্যুলার সাপ্লাইয়ে কোনও গন্ডগোল থাকলেও ইরেকটাইল ডিসফাংশন হয়। রক্ত সংবহন ঠিক মতো না হওয়ায় পুরুষ লিঙ্গের উত্থান ঠিক মতো হবে না।
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরুর আগে পেনাইল ডপলার টেস্ট করে দেখা হয়, পেনিসে ঠিকমতো রক্ত সংবহন হচ্ছে কি না কিংবা রক্ত অতি দ্রুত ফিরে আসছে (ভেনাস লিকেজ) কি না। এই দুই সমস্যা থাকলেও লিঙ্গ উত্থিত হবে না। ভেনাস লিকেজ থাকলে রোগীকে ভ্যাকুয়াম ডিভাইস ব্যবহার করতে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.