সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের গৃহবন্দি জীবনে অনেকেই সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে দিশেহারা। স্কুল ছুটি, কোচিং, প্রাইভেট টিউশন সবই বন্ধ। অতঃপর শিশুদেরও না চাইলে ঘরেই থাকতে হচ্ছে। বর্তামানে যা অবস্থা তাতে কবে স্কুল-কলেজ খুলবে, তা এই মুহূর্তে বোঝাও দায়! অন্যদিকে বাবা-মাকেও অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। উপরন্তু বাড়ির পরিচালকদের ছুটি। কাজেই অফিস-সংসারের কাজ, রান্নাবান্না সব সামলে হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও একেবারে দশভূজার মতোই সন্তানদের পড়াশোনার বিষটিও খেয়াল রাখতে হচ্ছে আপনাকে। আর এই পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের সামলানো যে চারটিখানি কথা নয়, তা বলাই বাহুল্য।
একঘেয়ে রুটিনে অনেক মা-বাবাই তাই বিরক্ত হয়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন। তাই প্রথমেই বলব, বাড়ির ছোটদের সামলাতে সবার আগে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। আর হ্যাঁ, একটা রুটিন (Quarantine Routine) সেট করে নেওয়া আবশ্যক! তাই কোয়ারেন্টাইনে সন্তানদের সামলাতে আপনার সুবিধার জন্য রইল কিছু জরুরি টিপস।
প্রথমত, সকালে ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়েই পড়া-পড়া করবেন না! এতে বাচ্চাদের দিনের শুরুটাই মন খারাপ থেকে হয়। এই সময়টা খুব জটিল ওদের মনঃস্তত্ত্বটাও বুঝতে হবে আপনাকে। চট করে বকাবকি কিংবা মারধর একেবারেই নয়। পছন্দের ব্রেকফাস্ট বানিয়ে বুঝিয়ে বলুন।
প্রতিদিন স্কুল বন্ধ থাকলেও নিয়ম মেনে পড়তে বসাতে হবে। নাহলে পড়তে বসার অভ্যাস চলে যাবে। তাই মাথায় রাখুন কিছু জিনিস। প্রথমত, আপনি পেশাগতভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকা যদি না হন, তাহলে ভুল হতেই পারে, সেটা মেনে নিয়েই চলুন। স্কুল বা কোচিংয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করুন দরকারে। দ্বিতীয়ত, নিজেকে অন্যদের মা-বাবার সঙ্গে তুলনা করবেন না সন্তানের সামনে। বাচ্চাদের কখনোই তেড়েফুরে বলতে যাবেন না যে, -“দেখো তোমার জন্য আমি কী কী করছি..” মাথায় রাখুন ওরাও কিন্তু ঘরে আটকে। এসব শুনে সন্তান হতাশায় না ভোগে।
তৃতীয়ত, কড়া রুটিন কিংবা শাসনের মধ্য বাচ্চাদের রাখবেন না। ওরা বিরক্ত হয়ে গেলে কিন্তু মুশকিল! তাই মাঝেমধ্যে একটু ফ্লেক্সিবল হোন। যেমন, দুপুরবেলা পড়া না থাকলে সিনেমা দেখুন, গান শুনুন। সঙ্গে বিশ্রামটাও জরুরী। নাহলে একটানা অনলাইন ক্লাস আর টিভি চোখের ক্ষতি করতে পারে। বিকেলটা কাটান অন্যভাবে। বাড়ির ছাদে সন্তানদের নিয়ে যান, গল্প করুন। তার সঙ্গে চা-কফি, খুচরো খাবার দিব্যি চলবে। ছাদে বাগান থাকলে, ওদেরও গাছ পরিচর্যার কাজে লাগান। গান চালিয়ে নাচ বা মিউজিক্যাল চেয়ারও খেলতে পারেন। ঘরে বন্দি থাকতে কারও ভাল লাগে না, তাই ওদেরও খুশি রাখার চেষ্টা করুন। আর হ্যাঁ কিছু সময় আপনার নিজের জন্যও রাখুন। ওটা একান্তই আপনার। কারণ, নিজের রিক্রিয়েশনেরও দরকার। তা না হলে, সবদিক একসঙ্গে সামলানো খুব মুশকিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.