Advertisement
Advertisement
ফরসা হওয়ার চিকিৎসা

নিমেষে ফর্সা হতে চান? মুশকিল আসান করুন এইভাবেই

জেনে নিন উপায়।

Now attract attention, use this skin whitening injection
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:September 10, 2019 12:46 pm
  • Updated:September 10, 2019 1:17 pm  

গায়ের রং নিয়ে চাপা কষ্ট ঝেড়ে ফেলুন। ফর্সা হওয়ার উপায় জানালেন স্কিনভিটা ক্লিনিকের কর্ণধার, ডার্মাটোলজিস্ট ও কসমেটোলজিস্ট ডা. শচিন ভার্মা। শুনলেন পৌষালী দে কুণ্ডু।

রোজের অফিস যাতায়াত করতে গিয়ে  রোদের তেজে গায়ের রংটা পুড়ে গিয়েছে বলে মন খুঁতখুঁত? সমুদ্রে দাপাদাপি করার পর চোখে-মুখে পড়া ট্যানের ছাপ উঠতে চায় না বলে জলে নামেন না? ছোট থেকেই গায়ের চাপা রং নিয়ে মনে চাপা দুঃখ আছে? ট্যানের আতঙ্কে ফুলহাতা জামা পরে সি-বিচে বসে থাকতে হবে না আর। সূর্যের উত্তাপ গায়ে মেখেও ত্বকের রং আগের মতোই রাখা যাবে। কিছু বিশেষ সানস্ক্রিন ব্যবহার আর ইনজেকশনের মাধ্যমে মাস কয়েক ট্রিটমেন্ট করলেই গায়ের রঙ উজ্জ্বল হয়ে যাবে। রূপ-লাবণ্য, গ্ল্যামার চুঁইয়ে পড়বে। আর চিকিৎসার খরচও মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেই।

Advertisement

ঝকঝকে-টুকটুকে রং ফিরে পাওয়া সত্যি কি সম্ভব? বহু মানুষ এমন প্রশ্ন নিয়ে আমার কাছে আসেন। বিশেষ করে চাপা রঙের জন্য অনেকে মানসিক কষ্ট ভোগেন। ফর্সা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাজারচলতি অনেক ক্রিম মেখেও এঁদের বেশিরভাগেরই স্বপ্নভঙ্গ হয়। আসলে এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে গায়ের রঙের জন্য পরিজনদের কটাক্ষ-মন্তব্য শুনতে হয়, বিয়ে ভেঙে যায়, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রের চাকরির পরীক্ষায় সফল হতে পারে না ডাস্কি ছেলেমেয়েরা। এটা সামাজিক সমস্যা। সমাজের এই মানসিকতার পরিবর্তন ভীষণ জরুরি। আমি প্রথমেই একটা কথা বলে দিই, চাপা রং ভীষণ সুন্দর। নিজেকে ভালবাসতে শিখুন। গায়ের রং নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকলে রোগীদের আমি নিজে কাউন্সেলিং করি। তারপর শুরু করি ট্রিটমেন্ট।

ফর্সা হওয়ার চিকিৎসা কীভাবে হয়, সেই কথা বলার আগে পাঠককে স্পষ্ট জানিয়ে রাখি, একবার ট্রিটমেন্ট করার পর বিশেষ সতর্কতা না মানলে ফল দীর্ঘমেয়াদি পাওয়া যায় না। আর কালো ত্বকও কখনওই একবারে ধবধবে সাদা হয়ে যায় না। তবে অনেকটাই উজ্জ্বল করা সম্ভব। আর তার জেরে রোগীর লুকের সত্যিই বিশাল পরিবর্তন হয়। তার উদাহরণ বলিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় এক নায়িকা। অতীতে বেশ শ্যামবর্ণের ছিলেন। সম্প্রতি বেশ কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁর স্কিন কালারের আমূল পরিবর্তন।

রঙের ফারাক কেন?
কেউ ফর্সা হবেন না কালো হবেন, কারও গায়ের রং শ্বেতাঙ্গদের মতো হবে না কি এশিয়দের মতো হবে তা নির্ভর করে স্কিনে থাকা মেলানোসাইট কোষের উপর। এই কোষের মেলানিন রঞ্জক গায়ের রং কেমন হবে তা ঠিক করে। শ্বেতাঙ্গ অর্থাৎ আমেরিকান, ইউরোপিয়ানদের দেহে ফিওমেলানিন রঞ্জক থাকে। এঁদের স্কিন সেলে মেলানিনের পরিমাণ ও তার ঘনত্ব কম। এশিয়, ভারতীয়, আফ্রিকানদের শরীরে ইউমেলানিন রঞ্জক থাকে। এই ধরনের স্কিন সেলে মেলানিনের পরিমাণ ও ঘনত্ব বেশি। তাই গায়ের রং শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় চাপা হয়। ছোট থেকেই যাঁদের গায়ের রং চাপা তাঁদের স্কিনে মেলানিনের ঘনত্ব বেশি।

ট্যান কেন পড়ে?
রোদে ২-৩ ঘণ্টা দাঁড়ানোর পরেই চামড়া কালচে হয়ে ট্যান পড়ে যাওয়ার সমস্যাকে ইমিডিয়েট পিগমেন্ট ডার্কেনিং (আইপিডি) বলে। এক্ষেত্রে কী হয়? মেলানোসাইট কোষ মেলানিন তৈরি করে মেলানোসোম নামে একটা বলের মতো অংশে জমা করে। ওই বলের মধ্যে মেলানিন রং থাকে। রোদে গেলে মেলানোসোম থেকে বেশি মেলানিন রিলিজ হতে থাকে। তখনই গায়ের রং ডার্ক হয়ে যায়। আবার বাড়িতে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলেই স্কিন কালার আগের মতো হয়ে যায়। কিন্তু যাঁরা রোজ ছাতা, সান স্ক্রিন ছাড়া রোদে যান বা সি-বিচে ঘুরতে যান তাঁদের আইপিডি হয় না। সে ক্ষেত্রে ট্যান প্রায় ১০-১৫ দিনের সঙ্গী হয়ে যায়। একে সাসটেন পিগমেন্ট বলে। এক্ষেত্রে ওই বলটা থেকে ক্রমাগত মেলানিন বেরতে থাকে। রোজ এভাবে স্কিন রোদে পুড়লে ট্যান স্থায়ীও হয়ে যেতে পারে।

রোদ ছাড়াও ডিএলই-র মতো স্কিনের কিছু অসুখ থাকলেও মেলানিনের ঘনত্ব বেশি হয় ও বেশি নির্গত হয়। বিশেষ করে খারাপ মানের প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করলে মেলানিন বেশি ছড়িয়ে যেতে থাকে। মেক-আপ থেকে অ্যালার্জি ডার্মাটাইটিস হলেও মেলানোসোমের কিছু পরিবর্তন হয় যার ফলস্বরূপ স্কিন কালো হতে থাকে। এছাড়া শরীরে হরমোনের ভারসাম্যের তারতম্য হলেও কিছু মেটাবলিক চেঞ্জ হয়, যে কারণেও স্কিন ডার্ক হয়। কিছু ওষুধের সাইড এফেক্ট হিসাবে মেলানোসাইট বেশি উদ্দীপিত হলেও একই সমস্যা হয়।

তাই পিগমেন্ট যাতে ডার্কেনিং না করে তার জন্য অতিরিক্ত রোদে বেরবেন না। রোদে বেরনোর আগে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ মেনে সানস্ক্রিন মাখুন। মেকআপ ব্যবহার করলে ভাল মানের কি না দেখে নিন। এছাড়া নিয়মিত বিশিষ্ট ডার্মাটোলজিস্টের কাছে বিশেষ কিছু ফেসিয়াল ট্রিটমেন্ট করলেও ট্যান কেটে যায়। ত্বক উজ্জল থাকে।

ফর্সা হতে ইঞ্জেকশন
ত্বকের রং নিয়ে সন্তুষ্ট না হলে গ্লুটাথায়ান ইনজেকশনের সাহায্যে ফর্সা হওয়া সত্যি সম্ভব। ১৫ দিন বা এক মাস অন্তর এই ইনজেকশন ছ’মাস পর্যন্ত নিতে হয়। এতে মেলানোসাইট থেকে মেলানিনের উৎপাদন কমে যায়। এই সময়ের মধ্যেই ত্বকের রং উজ্জ্বল হতে শুরু করে। তবে কয়েক বছর অন্তর এই চিকিৎসা পুনরায় করাতে থাকলে শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন পুরোপুরি হয়ে তার দেহের রঞ্জক ইউমেলানিন থেকে ফিওমেলানিনে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে। না হলে ইনজেকশন নেওয়া শেষ হওয়ার পর ছ’মাস পর্যন্ত কিছু ওষুধ খেতে দেওয়া হয়। ওষুধ খেলে ও রোদে কম বেরলে কয়েক বছর স্কিন উজ্জ্বল থাকবে। তারপর উজ্জ্বলতা একটু কমে গেলেও আগের মতো একদম চাপা রং আর হবে না।
পরামর্শে : ৯৮৩০৬৭২২২৪

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement