সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হৃদরোগ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। কে যে কখন হৃদরোগে আক্রান্ত হবে, আগে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। তবুও সাধারণভাবে ধরে নেওয়া হয়, পুরুষেরাই সবথেকে বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। অর্থাৎ হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত রোগসমূহ পুরুষদের জন্যই তোলা থাকে। আপাতদৃষ্টিতে এই বক্তব্যের সমর্থনে সাড়া মিললেও মহিলাদেরও হৃদরোগের প্রবণতা রয়েছে। মেনোপজের পরেই মহিলারা সব থেকে বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। অল্প বয়সে ধুমপানের নেশা থাকলে মনোপজের পর সেই নেশাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। একেবারে মূর্তিমান হৃদরোগের মতো মহিলাদের জীবনে হানা দেয়। তথ্য বলছে, মেনোপজের পরে মহিলাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। তবে সবকিছুর মূলে রয়েছে হরমোন সংক্রান্ত সমস্যা।
মহিলাদের শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে ইস্ট্রোজেন হরমোন। মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেন নিঃসরণের পরিমাণ আচমকাই কমে যায়। তার ফলে নানারকম উপসর্গ শুরু হয়। মহিলাদের স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় ইস্ট্রোজেন হরমোন। তবে মেনোপজের পরে মহিলাদের শরীরে ঠিক কি কি পরিবর্তন হচ্ছে, তা এখনও বিশেষজ্ঞদের গবেষণাধীন।
যাঁরা সবসময় স্বাস্থ্যকর জীবনদর্শন মেনে চলেন, তাঁদের প্রসঙ্গ আলাদা। তবে বংশগত হৃদরোগের প্রবণতা থাকলে সচেতন হওয়াটা জরুরি। অন্তত মেনোপজের পরে। পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে, মহিলাদের মেনোপজের পরে স্ট্রোকের একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়। বিপদ এড়াতে আগেভাগেই সচেতন হওয়া জরুরি। ৫০ বছরের পর মহিলাদের ৫০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ কিন্তু হৃদরোগই। সাধারণত ধুমপায়ী মহিলারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন খুব শিগগির। একই সঙ্গে হাইপারটেনশন। বংশগতভাবে কোলেস্টেরলও থাকতে পারে। সেইসব মহিলাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলস্বরূপ শুধু হৎপিণ্ডই নয়, পাতলা হয়ে যায় হাড়ের গঠনও। হাড় পাতলা হতেই যখন তখন ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মধ্য ৪০ ও পঞ্চাশের কোঠায় থাকা মহিলাদের খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত। খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকতেই হবে। এইসময় সবজি, ফল, চর্বিহীন দুগ্ধজাত দ্রব্য, মুরগির মাংস, মাছ, বাদাম খুব উপাদেয়। মেনোপজের পরে যে ঘাটতি মহিলাদের শরীরে তৈরি হয়, তার অনেকটাই পূরণ করে দেয় এই খাদ্যভ্যাস। শুধু খাবারদাবারই নয়, এই সময় হৃদরোগকে বাই বাই বলতে গেলে বেশকিছু শারীরিক কসরতেরও প্রয়োজন রয়েছে। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, সাইকেল চালানো, নাচ, সাঁতার কাটার মাধ্যমে কমতে পারে হৃদরোগের সম্ভাবনা। এর মাধ্যমে মহিলাদের হৃদযন্ত্র যেমন সুস্থ থাকবে, তেমনই শারীরিকভাবে ফিট থাকবেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.