Advertisement
Advertisement
করোনা

কেন একের পর এক করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মত।

Many political leaders COVID-19 tested positive all over world, know why
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:August 3, 2020 12:40 pm
  • Updated:August 3, 2020 12:55 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: ঠিক যেন বেহুলার বাসরঘর! লৌহকঠিন সুরক্ষার ঘেরাটোপেও ছিদ্র খুঁজে ছোবল মারছে বিষধর। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হোন বা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), নিরাপত্তার ‘নিশ্ছিদ্র’ বলয়ে থেকেও ঘায়েল হচ্ছেন কোভিডের হামলায়। বিশ্বজুড়ে অনেক নেতা-মন্ত্রীর প্রাণও যাচ্ছে। কিন্তু কোন ফাঁক দিয়ে ওঁদের শরীরে ঢুকছে নোভেল করোনা ভাইরাস? বয়স? না কি নিয়ম ভাঙার অভ্যাস? কেউ তো নেতা-মন্ত্রী, ভিভিআইপিদের গায়ের উপর গিয়ে পড়ছে না! মারছে না। মুখের উপর হেঁচে দিচ্ছে না! তা হলে?

চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ না মানার প্রবণতা নেতাদের মধ্যে অনেক বেশি। বহু নেতা মাস্ক পরলেও থুতনির কাছে নামিয়ে রাখছেন। সভা-সমিতিতে একই মাইকে ভাষণ দিচ্ছেন একাধিক জন। দলীয় মিটিংয়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বালাই থাকছে না। এমনকী, হ্যান্ডশেক, কোলাকুলিতেও কসুর নেই অনেকের। পরিণাম যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। আরও একটি বড় সমস্যা হল সিংহভাগ জননেতার জোরে কথা বলার অভ্যাস। এতে অ্যারোজল বেশি তৈরি হচ্ছে। গবেষণায় প্রমাণিত, করোনা ভাইরাস (CoronaVirus) কুড়ি ফুট দূরে পর্যন্ত যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক নেতাদের বয়সটাও বড় ফ্যাক্টর বলে মানছেন ডাক্তারবাবুরা। বেশিরভাগই ষাটোর্ধ্ব। তাঁদের অনেকের আবার মাল্টিপল কো-মরবিডিটি। তবু নেতারা কেন এত ক্যাজুয়াল?

Advertisement

অতিমারীধস্ত বিশ্বে কিছু মানুষের বেপরোয়া চালচলনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) আঙুল তুলছে করোনার ম্যারাথন ইনিংসের জেরে তৈরি হওয়া ‘রেসপন্স ফ্যাটিগ’কে। হু-প্রধান ট্রেডস আধানন ঘ্রেবেইসুস জানিয়েছেন, করোনা চলে গেলেও তার প্রভাব এক দশক ধরে টের পাবে বিশ্ব। নেতারাও কি ‘রেসপন্স ফ্যাটিগ’-এর শিকার? এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসক ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার। তাঁর কথায়, দেশ-বিদেশের বহু নেতা-মন্ত্রী, জননেতা, রাষ্ট্রনেতা কোভিডে আক্রান্ত। তাঁরা নিয়ম-কানুন জানেন না, এমন নয়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে নেতাদের মধ্যে একটা ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব কাজ করে। হয়তো রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা এর জন্য অনেকটা দায়ী।। “আসলে এত দিন ঘরে আটকে থাকা সত্যি মুশকিল। নেতাদের পক্ষে তো বটেই।”- মন্তব্য তাঁর।

[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই শুরু প্রস্তুতি, বেলেঘাটা আইডি’তে গড়ে উঠছে কোভিড গবেষণাকেন্দ্র]

একই বক্তব্য সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. প্রদীপ সাহার। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “নেতারা ঘরে থেকে থেকে মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন। চার-পাঁচ মাস তো কম কথা নয়! তাই অনেকেই ‘যা হওয়ার হবে’ বলে বেরিয়ে পড়ছেন।” তার উপর ভোটের দায়। বহু রাজ্যে ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নেতাদের আসল মূলধন জনসংযোগ, বিপদে মানুষের পাশে থাকা। অনেকেই ভাবছেন, বিপদের সময় মানুষের পাশে না থাকতে পারলে নেতা হয়ে লাভ কী? কোন মুখে ভোট চাইতে যাব? জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ও কাজ করছে। শাসকদলের নেতা বেরিয়ে পড়লে বিরোধী নেতাও ঘরে বসে থাকতে পারছেন না। এমতাবস্থায় দীপ্তেন্দ্রবাবুর পরামর্শ, নেতাদের উচিত এই মুহূর্তে সব ভার্চুয়াল মিটিং করা। ডিজিটাল যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলা। পার্টি অফিসে বসে আড্ডা মারা এখন আত্মহত্যার শামিল। দীপ্তেন্দ্রবাবু নেতাদের ‘নন এসেনশিয়াল ট্রাভেল’-কেও দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, এই রেসপন্স ফ্যাটিগ কাটাতেই বিনা প্রয়োজনে দলবল নিয়ে সফর করছেন নেতারা। যেটা ভিডিও কলে সেরে ফেলা যেত, হাজার কিমি উড়ে গিয়ে সেই কাজটাই করছেন।

ভারতে বহু নেতা-মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। তেলেঙ্গানার সিনিয়র কংগ্রেসনেতা ভি হনুমন্ত রাও, মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সাংসদ কুণাল চৌধুরি, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন, বাংলার দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রী সতপাল মহারাজ। তালিকা লম্বা। সে তালিকার নতুন সংযোজন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কোভিড অনেক নেতা-মন্ত্রীকে কেড়েও নিয়েছে। বাংলার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ, তামিলনাড়ুর বিধায়ক জে আনবাজাগান, মহারাষ্ট্রের দু’বারের সাংসদ ও দু’বারের বিধায়ক বিজেপি নেতা হরিভাউ জাওয়ালে। চিকিৎসকদের মতে, যত দিন ভ্যাকসিন না বেরোচ্ছে, ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নেতা-মন্ত্রীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের মতো ওষুধ নেওয়া উচিত। এতে সংক্রমণের সম্ভাবনা কিছুটা কমে। কাপড়ের মাস্ক নয়, সব নেতার এন৯৫ মাস্ক পরা উচিত। আর হ্যাঁ, অবশ্যই ওঁদের সবার অ্যান্টিবডি টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি।

[আরও পড়ুন: করোনার ভয়, অযোধ্যায় গেলেও রাম মন্দিরের ভূমিপুজোয় থাকছেন না উমা ভারতী]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement