সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পটের গান গাওয়া আজ অতীত। তাই তাদের শিল্পকলাকে বাঁচিয়ে রাখতে গৃহস্হালির নানা জিনিস থেকে টি-শার্ট, টেবিল ক্লথে ফুটিয়ে তুলছেন তাঁদের হাতের কাজ। কোথাও কৃষ্ণ-রাধার প্রেম, কোথাও আবার নিত্য দিন ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা। কোথাও আবার স্হানীয় সংস্কৃতি থেকে পৌরাণিক উপাখ্যানের একাধিক টুকরো ছবি ফুটে উঠছে। রঙ-তুলির এই নিপুণ শিল্পকর্মে সেইসব জিনিস এখন ঠাঁই পাচ্ছে শপিং মলে।
[ গৃহসজ্জায় আনুন অভিনবত্ব, ঘর সাজান দড়ি দিয়ে]
পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের গৌরাঙ্গডি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাজরামুড়া গ্রাম। প্রায় পঞ্চাশটি চিত্রকর পরিবারের বাস। রাজ্যে পালাবদলের আগে এই অখ্যাত গ্রামকে চিনত না কেউই। ফলে তাদের পট ছিল অবহেলিত। বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পটের গান গেয়ে কোনওভাবে সংসার চালাতেন তাঁরা। শুধু কি তাই? ওই গান গেয়ে সংসার না চললে ভিক্ষা করতেন এই গ্রামবাসীরা। কিন্তু এখন সেই ছবিটা নেই। তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার একাধিক বাড়ি তৈরি করে দিয়ে পৃথক কলোনি তৈরি করে দিয়েছে।আর্থ—সামাজিক অবস্থার হাল ফেরাতে একাধিক চিত্রকরকে সচিত্র পরিচয়পত্র দিয়ে নানাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের হাতের তৈরি জিনিস যাতে রাজ্যের বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করা যায়, সেই ব্যবস্থাও করেছে সরকার। রাজ্যের এই প্রচেষ্টা দেখে এগিয়ে আসছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। বাংলা নাটক ডট কম নামে একটি সংস্থা এই চিত্রকরদের দিয়ে নানা কাজই করাচ্ছে।
বাংলা নাটক ডট কম-র পুরুলিয়া জেলার কো-অর্ডিনেটর উৎপল দাস বলেন, “বর্তমান সময়ে পটের গান আর কেউ শুনতে চান না। আগে শিল্পীরা ক্যালেন্ডারের মতো দু’দিকে গোটানো কাগজে নানা পৌরাণিক ছবি এঁকে তা দেখিয়ে গান গেয়ে আয় করতেন। কিন্তু এখন সেইসব অতীত। থাবা বসিয়েছে সোশ্যাল সাইট। বেড়েছে টিভি, ইউটিউবের দাপট। তাতে এই পট শিল্পরা যাতে হারিয়ে না যায় তাই তাঁদের অঙ্কন শিল্পকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে গৃহস্হালির নানা জিনিসপত্র দিয়ে। সেই সব রঙবাহারি জিনিসপত্র এখন বিক্রির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে শপিংমলে।”
ছবি: সুনীতা সিং
[ সুস্থ থাকতে সাহায্য করে বেডরুমের রং! আর যৌনতায়?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.