সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতিমরী আবহ। মাস্ক-স্যানিটাইজার নিয়ে ঠাকুরদর্শন করতে যাওয়া আদৌ কতটা সম্ভব, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। মারণ ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই এই সময়ে বাড়ির থেকে বাইরে পা রাখতে চাইছেন না! খুব একটা অযৌক্তিক নয়, কারণ অনেকের পরিবারেই কচিকাচা, প্রবীণ নাগরিকরা রয়েছেন। এইসময়ে তাঁদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে বাইরে বেড়াতে যাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন অবশ্য রয়েই যায়। তবে মা দুগ্গা আসছেন যখন, তখন বাঙালিরা আহ্লাদে আটখানা হবেন না, তা কী হয়? বাইরে বেরতে না পরালেও বাড়িতেই উৎসবের আমেজ (Puja Home Decor) আনতে পারেন। কীভাবে? তার জন্য অবশ্য সময় নিয়ে বেশ কয়েকটা ছোটোখাট কাজ করে ফেলতে হবে।
প্রথমেই খেয়াল রাখুন, একঘেয়ে ঘর দেখে কারোরই মনে উৎসবের আমেজ উঁকি মারে না। কাজেই সবার আগে জরুরী ঘরে ভোল বদল। ওয়ার্ক ফ্রম হোম যতই থাকুক, এইসময়ে আপনি বাড়িতেই রয়েছেন। কাজেই সবার আগে সময় করে বাড়ির বাড়তি আসবাবের একটা লিস্ট তৈরি করে ফেলুন। কাজ সহজ হবে।
মহালয়া পেরলেও পুজো (Durga Puja 2020) কিন্তু এখনও এক মাস বাকি। অনেকেরই আক্ষেপ মহালয়ার পর এত দিনের ব্যবধানে পুজো, সেই আমেজটা হয়তো আর থাকবে না। কিন্তু সবটাই মনের ব্যাপার জানেন তো। যদি মনে শরতের আকাশ, কাশ বনের ছবি ভাসে কিংবা পুজো পুজো গন্ধ নাকে ঠেকে, তাহলে এই মাঝের সময়টাও দিব্যি কাটিয়ে ফেলতে পারবেন। বরং এই সময়টা মন দিন বাড়ির ভোলবদলে। ঘরদোড়ে আনুন রঙচঙে ভাব। এতে মনেও খুশি আসবে, উপরন্তু পুজো পুজো আমেজও বজায় থাকবে একটা।
লিস্ট অনুযায়ী বাড়ির আসবাবের স্থান পরিবর্তন করতে পারেন। ভেবে নিন কোনটা কোন দিকে রাখলে স্পেস ক্রিয়েট হবে। পুরনো টেবিল কিংবা টুল, মোড়া, চেয়ার এসব কাজে না লাগলে ছাদে রেখে দিন। উপরে শেড থাকলে আড্ডা জয়েন্ট হিসেবে দিব্যি জমবে। পুজোর দিনগুলোতে পরিবার নিয়ে হইহই করে ছাদে বসে গল্প-গুজব করতে পারেন। কিংবা গান শুনতে পারেন। ভাল রান্নাবান্না করে পিকনিকের আয়োজনও করা যেতে পারে।
ঘরের একই রং দেখতে দেখতে অনেকেই বোর হয়ে যান। তাই ঘরের যে কোনও একটা দেওয়াল বাছুন। সেই দেওয়ালটিতে দোকান থেকে পছন্দমতো রং কিনে এনে নিজেই রং করে নিতে পারেন। কারণ, বাইরের লোকজন এইসময়ে ঘরে ঢোকানোটা একটু ঝুঁকির। উজ্জ্বল রং বাছুন। ঘরে আলো কোন দিক থেকে ঢোকে সেটাও দেখে নেবেন। একরঙা দেওয়ালে আপত্তি থাকলে নেট ঘেঁটে দেখে তাতে নকশাও কেটে দিতে পারেন, আজকাল তো এসব পাওয়াই যায় মার্কেটে। ছুটির দিন দেখে সেরে ফেলুন কাজটা।
এবার আসি একটু অন্দরের সাজগোজের প্রসঙ্গে। ঘরের একই পর্দা, সোফা কিংবা কুশন কাভার দেখতে দেখতে অনেকেই একঘেয়ে হয়ে যান, এক্ষেত্রে অতি সত্ত্বর বদলে নিন এগুলো। লাল, সবুজ, নীল, হলুদ কিংবা কমলা একটু ভাইব্রান্ট রঙের কাভার বাছুন। বিছানার চাদর কিংবা বালিশের কাভারের ক্ষেত্রেও কিন্তু এটা প্রযোজ্য। ঘরে ভাইব্রেন্ট একটা ব্যাপার আসবে। তাহলেই দেখবেন পুজো পুজো একটা আমেজ বজায় রয়েছে।
পুজো যখন, তখন আপনার পুজোর ঘর কিংবা সেই জায়গাটিকেও কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রঙচঙে কাপড় কিংবা কাগজ দিয়ে ডেকোরেশন করতে পারেন।
ব্যালকনিতে এমন গাছ রাখুন যাতে ফুল হয়। রংবেরঙের ফুল দেখলে মন ভাল থাকে। ব্যালকনির একটা দেওয়ালে সবুজ ঘাসের চাদরও ঝুলিয়ে দিতে পারেন। সকালের নরম আলোয় সামনে বসে চা-যোগে মন্দ লাগবে না।
অনেকেই সুগন্ধি ফুল ভালবাসেন, সেগুলো বড় বাটিতে কিংবা সেরকম কোনও পাত্রে জল দিয়ে সাজিয়ে রাখতে পারেন। ছুটির দিনে সন্ধেবেলায় তাতে ফ্লোটিং ক্যান্ডেল ভাসিয়ে দিয়ে হালকা মিউজিক ছাড়ুন। পছন্দমতো পারফিউম কিংবা রুম ফ্রেশনারও ছড়িয়ে দেওয়া যায়। আপনার একঘেয়েমি কেটে গিয়ে মনপ্রাণ যে তরতাজা হবেই, তা বলাই যায়।
আর হ্যাঁ পুজো মানেই তো পোশাক, গয়নাগাঁটি, রূপচর্চা, ভাল ভাল খাবার। সময় ম্যানেজ করে সেগুলোতেও মন দিতে পারেন। ফেসপ্যাক লাগিয়ে আলমারি থেকে পুরনো ভাল শাড়ি বের করে গোছান। কিংবা পরিবারের সদস্যদের পছন্দমতো রান্না করতে পারেন। দেখবেন কেমন যেন হুশ করে একটা মাস কেটে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.