গৌতম ব্রহ্ম: চোদ্দ শাকে রয়েছে চল্লিশেরও বেশি রোগ প্রতিরোধের পাসওয়ার্ড। কোনওটা লিভার ভাল রাখে, তো কোনওটা অনিদ্রা দূর করে। কোনওটা কফ-পিত্তনাশক তো কোনওটা শুক্রবর্ধক। তবে একদিন নয়, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শাকগুলি অন্তত মাস চারেক খেতে হবে। তবেই মিলবে সুফল। এমনটাই জানালেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা।
কালকাসুন্দি, সরষে, নিম, জয়ন্তী, শাঞ্চে, গুরুচি বা গুলঞ্চ, পটলপাতা, শেলুকা পাতা, হিঞ্চে, ঘেঁটু, শুষনি,কেমুক, বেতো, ওল। চোদ্দ শাকের এই হল চোদ্দ উপকরণ। এর মধ্যে অর্শের উপশমে উপযোগী ওল, বেতো, শিঞ্চে। খাবারে রুচি ফিরিয়ে আনে ওল, কালকাসুন্দে, শেলুকা। কৃমিনাশ করে গুরুচি, পটল শাক, ঘেঁটু, কেঁউ। কালকাসুন্দে পিত্তদোষ কাটায়। আমবাত, পাণ্ডুরোগে জয়ন্তী উপযোগী। সুতরাং যাঁরা চোদ্দ শাক খাননি তাঁদের হাহুতাশ করার কিছু নেই। এই শরৎকাল থেকেই শাকপাতা খাওয়া শুরু করা উচিত। কারণ এই সময়ই শাকের খাদ্যগুণ সপ্তমে ওঠে। জানালেন কেন্দ্রীয় আয়ুর্বেদ ঔষধি বিকাশ অনুসন্ধান সংস্থানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ডা. সুমিত সুর ও মালদহ উত্তর চাঁদিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. বিশ্বজিৎ ঘোষ।
চরকসংহিতায় চোদ্দ শাকের উপযোগিতার উল্লেখ রয়েছে। যার সারমর্ম, সূর্যরশ্মির তেজ বেড়ে যাওয়ায় বর্ষাকালের শীতোক্ত দেহ শরতে সহসাই সন্তপ্ত হয়। ফলে প্রায়ই পিত্তের প্রকোপ হয়। এই কারণে দ্রব্যগুলির একক অথবা সমষ্টিগত ব্যবহার ধর্মের অনুশাসনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর সঙ্গে আসলে স্বাস্থ্য ধর্মের সম্পর্ক আছে। শুশ্রুত সংহিতাতেও শাক ভক্ষণের উল্লেখ রয়েছে বলে জানালেন সুমিত ও বিশ্বজিৎ। এর সঙ্গে একটি পৌরাণিক ব্যাখ্যাও জুড়ে আছে। তা হল, কার্তিক মাসে যমের বাড়ির আটটি দরজা খোলা থাকে। চোদ্দ শাক খেলে যমের কুদৃষ্টি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ঋকবেদ ও ষোড়শ শতাব্দীর রঘুনন্দনের বইতেও ঋতুজ ব্যাধি ঠেকাতে এর উল্লেখ রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.