অভিরূপ দাস: পাব কি? না কি আসন হাতছাড়া হবে? ভোট নিয়ে চিন্তায় প্রার্থীরা। কপালের ভাঁজ গভীর। ফলে রক্তচাপও বাড়ছে হুড়মুড়িয়ে। সেই সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো করোনাও (Coronavirus) বাড়ছে রাজ্যজুড়ে। আর চিকিৎসকরা একবাক্যে জানিয়েছেন, উচ্চরক্তচাপ করোনার দোসর।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে যে ওষুধ ব্যবহার করা হয় তাতে থাকে এসিই ইনহিবিটরস এবং অ্যাঞ্জিওটেনসিন রিসেপটর ব্লকার। এই দুই উপাদান শরীরের একটি এনজাইমের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তার নাম এসিই২। করোনা ভাইরাস শরীরে ঢুকেই আঁকড়ে ধরে এই অ্যাঞ্জিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ২-কেই। অবিলম্বে তাই প্রার্থীদের টেনশন কমাতে বলছেন চিকিৎসকরা।
টেনশন কমাতে মুড়ি-মুড়কির মতো ওষুধ খেলেও গন্ডগোল। কিছু উচ্চরক্তচাপ কমানোর ওষুধে আবার প্রচুর ঘাম বেরিয়ে যায়। একদিকে প্রচারের পরিশ্রম। অন্যদিকে ওষুধের জন্য শরীরের নুনজল বেরিয়ে গেলে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, ডায়রেটিক জাতীয় ওষুধ বাদ দিয়ে অন্য ওষুধ খেতে হবে। তবে সবার আগে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে টেনশন।
কিন্তু প্রার্থী হয়ে বিন্দুমাত্র টেনশন হবে না? অধিকাংশ প্রার্থীই স্বীকার করেছেন, এমনটা অসম্ভব। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই থেকে টেনশনকে দূরে সরিয়ে রাখা মুশকিল। জনস্বাস্থ্য আধিকারিক অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, সাবধানে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই। টেনশন যাতে না বাড়ে, সে দিকে খেয়াল রাখতে বলছেন চিকিৎসকরা। তার জন্য উপায় বাতলে দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য আধিকারিক। তাঁর পরামর্শ, “যাঁরা উদ্বেগ সহ্য করতে পারেন না, তাঁদের জন্য এ পরিস্থিতি মারাত্মক। সবসময় যদি ২ মে নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন তবে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ বাড়বে।” সকালে-বিকেলে প্রচারপর্ব ছাড়া তাই আসন নিয়ে আলোচনা না করার পরামর্শই দিয়েছেন তিনি। বরং বাকি সময়টা বাড়ির লোকের সঙ্গে হালকা মেজাজে সময় কাটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। নির্বাচনী প্রচার বাদ দিয়েও একটু বই পড়া, গান শোনা, আড্ডা, সিরিয়াল, সিনেমা থেকে শুরু করে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাই টেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, রাজ্যে কোভিড বাড়ছে। যে সমস্ত প্রার্থীর রোগভোগ আছে, তাঁদের সামলে রাখতে হবে। ওষুধপত্র খেতে হবে নিয়ম করে। ঠিক সময়ে ঠিকঠাক খাবার খেতে হবে। কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে উচ্চরক্তচাপ? জনস্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘুম ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক-আধ দিন ঘুম কম হলে সমস্যা নেই। কিন্তু দিনের পর দিন ঘুম ঠিক না হলে পরামর্শ করতে হবে নিজস্ব চিকিৎসকের সঙ্গে। প্রচারের সময় কোনওভাবেই মাস্ক ছাড়া থাকা চলবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.