উদ্দামতার ছন্দে কাটবে বছরের শেষ কয়েকটা দিন। আবার নিউ ইয়ার ইভের পার্টিও তো রয়েছে! বাড়ির ছাদ, ঘরের কোণ, পাড়ার রোয়াক কিংবা নাইট ক্লাবের নিয়ন আলোয় চলকে উঠবে গ্লাস। নেশাতুর হয়ে বেসামাল হবেন না। শরীরটা আপনার। অসুস্থ হলে ক্ষতি নিজেরই। সুস্থ থেকে পার্টি করুন। জানাচ্ছেন মৌশাখী বোস।
ক্রিসমাসের কেক, কমলালেবু, মোয়ায় শীতের আমেজ বেশ উপভোগ্য। কিন্তু বর্ষবরণের মস্তিতে হার্ড ড্রিঙ্কের জন্য মন টনটন। জমিয়ে পার্টি করতে কয়েক পেগ চাই। সারা বছর নিষেধাজ্ঞা মানলেও বছর শেষের এই ক’টা দিন সুরাপানের জন্য একটু বেশিই কাতর আম বাঙালি। তবে উদ্দাম আনন্দের পর হ্যাংওভার কাটাতে যাতে হিমশিম খেতে না হয় তার জন্য রইল কিছু হেলদি টিপস।
জাস্ট ফান:
- সবসময় হালকা ও কম অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় নিন। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে।
- বিয়ারের বদলে মেয়েরা ওয়াইন নিতে পারেন, ক্যালোরি কম থাকে।
- এছাড়া ব্রিজার বা মকটেল ভাল।
- ড্রিঙ্কস নেওয়ার আগে মাল্টি ভিটামিন ট্যাবলেট খেতে পারেন।
- অ্যালকোহলের সঙ্গে সমপরিমাণ জল মিশিয়ে নিন।
- এক চুমুকে পানীয় শেষ না করে অল্প অল্প চুমুক দিন।
- পার্টির শেষে শুতে যাওয়ার আগে অন্তত হাফ লিটার জল পান করুন।
প্রথম অভিজ্ঞতা:
- যদি প্রথম হার্ড ড্রিঙ্কস-এ ঠোঁট ডোবান তাহলে পান শুরুর আগে অবশ্যই একটু ভারী খাবার খেয়ে নিন।
- পার্টির শেষে ভারী খাবার খাবেন না, এতে বমি হতে পারে।
- ড্রিঙ্কসের সময় বেশি ভাজাভুজি খাবেন না।
- কম অ্যালেকাহল ও বেশি জল দিয়ে পেগ বানান।
- কোল্ড ড্রিঙ্কস মিশিয়ে পান করবেন না।
- দু’ পেগ হলেই স্টপ, এতে পার্টির মজা নষ্ট হবে না।
ক্ষতি বুঝুন:
- ইথাইল অ্যালকোহল শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার শক্তি কমায়।
- ইথাইল অ্যালকোহল লিভারের কোশ নষ্ট করে।
- অ্যালকোহলের সঙ্গে নোনতা খাবার ওয়াটার অ্যাকুমুলেশন ঘটার ফলে শরীরে জল জমে এবং শরীর ফুলে ওঠে।
- অতিরিক্ত মদ্যপান করলে কথা জড়িয়ে যাওয়া, চোখে আবছা দেখা, কানে কম শোনা, অজ্ঞান হয়ে
- যাওয়ার মতো শর্ট টার্ম সমস্যা হতে পারে।
- নিয়মিত মদ্যপান করলে হাই ব্লাড প্রেসার, সুগার, ব্রেনে ক্ষতি, লিভারে ক্ষতি হতে পারে।
বিশেষ নজর:
- যে কোনও এক ধরনের ড্রিঙ্ক ব্যবহার করুন। বিভিন্ন ধরনের মদ একসঙ্গে খেলে ক্ষতি মারাত্মক।
- খালি পেটে মদ নয়। সঙ্গে থাকুক ফ্যাটি ফুড।
- পুরুষেরা ৪-৫ পেগের বেশি পান করবেন না। মহিলারা ৩-৪ পেগের বেশি নয়। যাঁরা খুব মোটা তারা একটু বেশি খেলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। তবে রোগা হলে কম খান।
- প্রথমবার হলে খুব মেপে ও বুঝে খান। মাত্রা ছাড়ালেই বিপদ।
- অন্তঃসত্ত্বা ও বাচ্চাদের থেকে মদ দূরে রাখুন।
- হার্ড ড্রিঙ্কসের মাঝে কিছু সফট ড্রিঙ্কসও নিন।
- বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে মদ্যপান একেবারেই করবেন না।
- শরীরে যদি কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায় তাহলে জোর করে মদ্যপান একদম অনুচিত।
- ড্রিঙ্কস করে অতিরিক্ত ভারী খাবার একদম খাবেন না।
- বাচ্চাদের সামনে মদ্য পান নয়।
মাত্রা ছাড়ালেই:
- অতিরিক্ত নেশা হলে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিন এক গ্লাস নুন জল অথবা লেবু জল। বমি করার চেষ্টা করুন।
- একদম সোজা হয়ে না শুয়ে মাথার দিকটি উঁচু করে শুয়ে থাকুন।
- অতিরিক্ত বমি হলে ডমপেরিডন ও রাবিপ্রাজল জাতীয় অ্যান্টিইমিটিক ওষুধ খেতে হবে। খাওয়ার আগে খালি পেটে পরপর দু’দিন খান।
- পরের দিন ভারি খাবার নয়। লিক্যুইড খাবার খান। খুব বেশি করে জল খেতে হবে।
- মুখে চোখে ভাল করে জলের ঝাপটা দিন।
চিয়ার্স করুন মেপে:
রক্তে অ্যালকোহল ০.০৮ শতাংশের বেশি হলেই বিপদ। কোনও পুরুষ যদি দিনে পাঁচ বা তার বেশি স্ট্যান্ডার্ড ড্রিঙ্ক পান করেন, তা হলে তার শরীরে সরাসরি ক্ষতি করে। অন্যদিকে মহিলারা চার বা তার বেশি পরিমাণ অ্যালকোহল পান করলেই গুরুতর বিপদ। মনে রাখতে হবে, দু’ঘণ্টার মধ্যে একসঙ্গে অনেক পান করা একদম ঠিক নয়।