ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: পৌষের শেষে গ্রীষ্মের ঘাম। অদ্ভুত এ আবহাওয়ায় শিশু আর প্রৌঢ়দের সাবধান করছেন চিকিৎসকরা। দুপুরবেলা বেজায় গরম। সন্ধে নামতেই গা শিরশির। অদ্ভুত আবহাওয়ার (Weather) সঙ্গে মরুভূমির মিল পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাপমাত্রার এই তারতম্যে রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবীরা সক্রিয়। নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্যাটারাহেইলস, ই-কোলি, ক্যাম্পাইলোব্যাকটরদের পোয়াবারো। যার জেরে ঘনঘন ফুসফুসে সংক্রমণ, পেটখারাপ। শিশু, প্রৌঢ়দের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এমন আবহাওয়ায় তাদেরই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আচমকা এমন গরমে চেম্বারে বাড়ছে রোগীদের ভিড়। কারও জ্বর, কারও গলায় ব্যথা।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরির কথায় , ভুলটা অভিভাবকদেরই। মরশুম অনুযায়ী এখন ভরা শীত। জানুয়ারি মাস। শিশুদের গরম জামাকাপড় পরিয়ে রাখছেন অভিভাবকরা। মাথায় রাখতে হবে, বড়রা গরম লাগলে গায়ের সোয়েটার খুলে ফেলতে পারেন, দু’বছরের একরত্তির পক্ষে তা সম্ভব নয়। সাংঘাতিক ঘেমে সেই ঘাম বসে নানা অসুখ দেখা যাচ্ছে ছোটদের। রাতে ছোটদের খালি গায়ে শোয়ালেও সমস্যা। ভোরবেলার দিকে তাপমাত্রা হঠাৎ নেমে যাচ্ছে। সেসময় গরম জামা গায়ে না দিলে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে মুহূর্তে। তাপমাত্রা অনুযায়ী ছোটদের পরিধান বদলে দিতে বলছেন চিকিৎসকরা।
নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা ব্যাকটিরিয়ার বাড়বাড়ন্তে ফুসফুসের উপরিভাগের সংক্রমণ অত্যন্ত গা সওয়া। ধূমপায়ীদেরও তাই সাবধান করছেন চিকিৎসকরা। গলা খুশখুশ এড়াতে ঠান্ডা খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গরম খাবার খেলেই সর্বনাশ। দু’ধরনের তাপমাত্রায় শরীর খারাপ হতে বাধ্য। আচমকা তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বেড়ে যায় শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। ধুলোবালির হাত থেকে বাঁচতে রুমালে নাক ঢাকার পরামর্শ দিচ্ছেন স্টেথোধারীরা। যদিও রাস্তায় সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকলে ধুলোর হাত অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বয়স্কদের বিপদের হাত থেকে বাঁচতে আগেভাগেই সাবধান হতে বলেছেন বয়স্করোগ বিশেষজ্ঞ কৌশিক মজুমদার। জানিয়েছেন, যে সমস্ত প্রৌঢ়র ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের সাবধানে রাখতে হবে। চিকিৎসকের কথায়, “ডায়াবেটিসের ওষুধ খেলে এমনিতেই সোডিয়ামের তারতম্য হয়। আচমকা গরমে অতিরিক্ত ঘাম বেরিয়ে গেলে শরীরে সোডিয়ামশূন্যতা তৈরি হতে পারে।” হাঁটতে বেরোলে তাই বয়স্কদের হাতে ছাতা অথবা টুপি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মজুমদার। আচমকা জল তেষ্টা পেলে রাস্তা থেকে জল না খাওয়াই শ্রেয়। তাতে পেটখারাপের সম্ভাবনা প্রবল। চিকিৎসকের (Doctor) পরামর্শ, “সঙ্গে রাখুন জলের বোতল। গরম লাগলেও রাস্তার বরফ-আইসক্রিম বা ঠান্ডা পানীয় খাবেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.