স্টাফ রিপোর্টার : সমস্যা তো রয়েই গেল! কেউ পরীক্ষা করিয়েছেন। কেউ আবার পরীক্ষা না করে ঘরেই সাবধানে থেকেছেন। লক্ষণ বিচার করে ডাক্তারবাবুও টেলি-মেডিসিন করেছেন। সেই অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে সাতদিন পর ফের বাড়ির বাইরে। কিন্তু এ কী? এ যে নতুন সমস্যা। কারও মাথা ঘুরছে। কেউ আবার একটু হেঁটেই বেদম। খানিকটা দৌড়ঝাঁপ করলেই ক্লান্তি। কেউ আবার অফিসে কম্পিউটারের সামনে বসার পরেই তীব্র মাথার যন্ত্রণা। সব ঝাপসা!
করোনার সাম্প্রতিক অবতার ওমিক্রন (Omicron) থেকে মুক্তি পেয়ে সেরে ওঠার পর এমন সব উপসর্গের শিকার অনেকে। কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। কিন্তু হচ্ছে। আর এইসব উপসর্গ নিয়ে কেউ ব্যক্তিগত কেউ আবার সরকারি হাসপাতালের পোস্ট কোভিড (Covid) কেয়ার সেন্টারে আসছেন।
গত বছরও সংক্রমণের তীব্রতা যতটা মারাত্মক ছিল। ততই তীব্র ছিল করোনামুক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন উপসর্গ। কারও স্নায়ুর সমস্যা, কেউ আবার দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির সমস্যায় ভুগছেন। আবার অনেকের চোখ, নাক, কানের সমস্যাও ছিল। তবে এই সব উপসর্গ শুরু হয় করোনামুক্ত হওয়ার এক-দেড় মাস পর থেকে। পোস্ট কোভিড সমস্যা থেকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে পোস্ট কোভিড কেয়ার ইউনিট তৈরি হয় বেলেঘাটা আইডি-সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। আউটডোরে রোগীদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার চিকিৎসাও শুরু হয়। এখনও সেই চিকিৎসা চলছে।
কিন্তু ঘটনা হল,এবার তৃতীয় তরঙ্গে ওমিক্রনের দাপট বেশি। তুলনায় ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাসের সংক্রমণ অনেকটাই কম। কিন্তু কোভিড থেকে সেরে ওঠার একমাসের কম সময়ের মধ্যে ফের নতুন উপসর্গ শুরু হওয়ায় চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা। উদ্বেগ স্বাস্থ্য ভবনেরও। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের কোভিড নোডাল মেডিক্যাল অফিসার ডা. কৌশিক চৌধুরির কথায়, “অভিজ্ঞতা বলছে করোনামুক্ত হওয়ার এক মাস পর থেকে বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ শুরু হয়। কখনও তা বড় আকারের চেহারা নেয়। কিন্তু এবার তো ওমিক্রনের দাপট শুরু হয়েছে একমাস। এই একমাসের মধ্যে যাঁরা করোনামুক্ত হয়েছেন, তাঁদের এর মধ্যে ফের নতুন উপসর্গ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু নেই যে তা নয়। উপসর্গের সমস্যা নিয়ে ফোন আসছে।”
কৌশিকবাবুর কথায়,“মাথাব্যথা, যন্ত্রণা বা ক্লান্তির সমস্যা এর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েক জনের মধ্যে। আবার কয়েকজন টেলিফোন করেও শারীরিক সমস্যার কথা জানাচ্ছেন।”
এদিকে এদিনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বের নানাপ্রান্তে তৃতীয় তরঙ্গের অভিঘাত কিছুটা কমে এলেও এখনই এটিকে অতিমারীর শেষ পর্ব মনে করা মোটেই উচিত হবে না।
হু (WHO) প্রধান অ্যাঢানাম ঘেব্রেইসাস এদিন ফের বলেন, “ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টেই এই অতিমারী শেষ হচ্ছে মনে করার কোনও কারণ নেই। কারণ ভাইরাসটির ফের রূপবদলের আশঙ্কা রয়েছে। তেমনটা হলে তার ফল কী হবে এখনই বলা যাচ্ছে না।” করোনার ফের রূপবদল হলে তা আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে এই হুঁশিয়ারি হু অবশ্য আগেও দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.