Advertisement
Advertisement

Breaking News

Healthy Teeth

দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে কোন উপায়ে? টিপস দিলেন বিশেষজ্ঞ

দাঁত এমন একটা জিনিস যেটা একবার ক্ষয়ে যেতে থাকলে আর পুনর্গঠন হয় না।

Specialist's tips for your healthy teeth and your health। Sangbad Pratidin
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:July 15, 2023 2:39 pm
  • Updated:July 15, 2023 2:39 pm  

ডা. সপ্তর্ষি দত্ত: মানুন আর না-ই মানুন, দাঁত অমূল্য রতন। কারণ জীবনে সুখ খেয়েই। কিন্তু দাঁতই যদি ভাল না থাকে তাহলে সেই সুখ মিলবে কী করে?
তাই ভাল খেতে হবে সঙ্গে দাঁতও ভাল রাখতে হবে। এ ব্যাপারে একটু মনে করিয়ে দিই, খাদ্যের সঙ্গেই পুষ্টির সম্পর্ক। যার প্রবেশদ্বার মুখগহ্বর, আর প্রহরী হল দাঁত। সেখানেই যদি ব্যাকটিরিয়ার বাস হয় তাহলে পুষ্টি দূরে থাক, ব্যাকটিরিয়ার সংস্পর্শে খাবার ও শরীর দুই’ই খারাপ হয়। তাই খাবার মুখে তুলুন সঙ্গে দাঁত ভাল রাখার নিয়মগুলি মেনে চলুন। আর সেগুলিই খান যেগুলি শরীরের পাশাপাশি পরোক্ষভাবে দাঁতের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে।

শিশুর দাঁত গঠনে ফ্লোরাইড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।

দাঁতের আয়ু খাদ্যে আছে
একদম ভ্রূণ অবস্থা থেকেই ভাল দাঁতের জন্য যথার্থ পুষ্টি দরকার। এই সময় হবু মা কী খাচ্ছেন তার উপর পরবর্তীকালে সদ্যোজাতর দাঁতের স্বাস্থ্য নির্ভর করবে।
শিশুর জন্মের পরও দাঁতের পরিচ্ছন্নতা ও খাদ্যভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ। আসলে পর্যাপ্ত পুষ্টি ঠিক সময়ে না পেলে দাঁতের নানা রকম রোগ হয়। এর দু’ধরনের কারণ রয়েছে।

Advertisement

সিস্টেমিক ফ্যাক্টর ও লোকাল ফ্যাক্টর।

সিস্টেমিক ফ্যাক্টর সদ্যোজাত থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত খাদ্যাভ্যাসে লুকিয়ে। এই বয়সে দাঁত গঠনে ফ্লোরাইড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। সাধারণত ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ছাড়াও কিছু খাবারেও থাকে। যেমন, ফাইব্রাস ফ্রুটস বা ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। এগুলি খেলে দাঁতের গঠন খুব ভাল হয়, দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়, মাড়ি শক্ত হয়। দাঁত এমন একটা জিনিস যেটা একবার ক্ষয়ে যেতে থাকলে আর পুনর্গঠন হয় না। তাই ফ্লোরাইড ডেফিসিয়েন্সি দাঁতের স্বাস্থ্য খারাপের অন্যতম কারণ। তবে অতিরিক্ত ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষতিও করে।
এছাড়া ছোট বয়সে কোনও রোগের কারণে হাই ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড অনেকদিন ধরে চললেও দাঁতের ক্ষতি হয়।
এবার আসা যাক, লোকাল ফ্যাক্টরগুলি কী? এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ খাদ্যাভ্যাস। অর্থাৎ রোজের ডায়েট থেকে দাঁতের পুষ্টি। দাঁত ভাল থাকবে কি না তা ৩০ শতাংশ নির্ভর করে এই ফ্যাক্টরের উপর।

সাধারণত যে কোনও কিছু খাওয়ার পর ভাল করে কুলকুচি করে নিন।

খান কিন্তু কুলকুচি ভুললে চলবে না

  •  সাধারণত যে কোনও কিছু খাওয়ার পর ভাল করে কুলকুচি করে নিন। না হলে দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে পচতে শুরু করে ও এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি হয়। যা দাঁতের বারোটা বাজিয়ে দেয়।
  • এমনকী, চা পানের পরও মুখ কুলকুচি করে নিন।
  • শিশুকে ব্রেস্ট ফিড বা বোতল ফিড করার পর অবশ্যই করে জল খাওয়ান বা মুখ ধুয়ে দিন। দুধ মুখের ভিতরে বা মাড়িতে লেগে থাকলে পরবর্তীকালে দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়, দাঁত নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘নার্সিং বটল কেরিজ’।

খারাপ দাঁত হলে, মাংসের হাড় নয়
যাদের দাঁতে ইতিমধ্যে ক্ষয় ধরেছে বা গঠনগত অসুবিধা রয়েছে, তাদের কিন্তু খাওয়ার সময় বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। সবচেয়ে জরুরি হল, মাংসের হাড় অথবা শক্ত মাছের কাঁটা চিবানো যাবেই না। কোল্ড ড্রিংকসও দাঁতের ক্ষতি করে। চিপস, চকোলেট বা লজেন্স ও অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেলে দাঁতের আরও ক্ষতি হবে। তাই এগুলি পুরোপুরি বাদ দিতে না পারলেও খুব বুঝে খান।

পেয়ারা খেলে মুখের ব্যাকটিরিয়াল ইনফেকশন প্রতিহত হয় ও মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা কমে।

নিম-পেয়ারায় শক্তপোক্ত
আগেকার দিনে নিম দাঁতনের চল ছিল। বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে এর উপকারিতা প্রমাণিত। নিমের যে নির্যাস রয়েছে সেটি দাঁত ভাল রাখতে ও মাড়ির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্নে অন্যতম নিম।

  • এছাড়া পেয়ারা বা যে কোনও ফাইবার সমৃদ্ধ ফল যেমন- আপেল, ন্যাসপাতি, আখ ইত্যাদি চিবিয়ে খেলে দাঁত ভাল থাকে ও গোড়া পরিষ্কার হয়।
  • পেয়ারা খেলে মুখের ব্যাকটিরিয়াল ইনফেকশন প্রতিহত হয় ও মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা কমে।
  • এছাড়া লবঙ্গ অল্প মাত্রায় মুখে রাখলে সেটাও দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য যথেষ্ট। তবে খুব বেশি এলাচ বা লবঙ্গ খেলে তা থেকে দাঁতে ছোপও হতে পারে। তাই বুঝে খান।

[আরও পড়ুন: রোগ থাকবে দূরে, শরীরে পড়বে না বয়সের ছাপ, ভরসা রাখুন আয়ুর্বেদে]

বর্জন করা দরকার
তামাক জাতীয় খাবার বর্জন করুন। ধূমপান, গুটখা, খৈনি, পানপরাগ, সুপারি সবই দাঁতের অসুখ ডেকে আনে। দাঁতের সঙ্গে মুখগহ্বরেরও ক্ষতি করে। ওরাল ক্যানসারের অন্যতম কারণও এটি।

এছাড়া দাঁত ভাল রাখতে রাতেও খাবার পর দাঁত মাজা অত্যন্ত জরুরি। আর অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার রাতে এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।

জেনে বুঝেও অলসতার জন্য দু’বেলা দাঁত মাজতে অনিহা অনেকেরই। তাই একটু ভেবে খান ও বিশেষ যত্নশীল হন দাঁতের প্রতি। এতে নিজেরই মঙ্গল।
যার যত সুন্দর দাঁত, করে সে বাজিমাত।

ডা. সপ্তর্ষি দত্ত
রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের
ডেন্টাল বিভাগের প্রধান।

[আরও পড়ুন: সকালে উঠে খালি পেটে চা খাচ্ছেন! ঠিক করছেন তো?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement