স্টাফ রিপোর্টার: করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ‘ককটেল’ দেওয়া হয়েছিল। ফের শিরোনামে ককটেল থেরাপি। সৌজন্যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। কোভিড আক্রান্ত বিসিসিআইয়ের সভাপতিকে সম্প্রতি ক্যাসিরিভিমাব এবং ইমডেভিমাবের মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির (Monoclonal Antibodies) ককটেল দেওয়া হয়। তারপরই রাতারাতি বেড়ে যায় ককটেল থেরাপির চাহিদা। আলিপুরের যে হাসপাতালে মহারাজ ভরতি ছিলেন সেই উডল্যান্ডসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চাহিদা।
জানা গিয়েছে, অক্টোবরে সাতজনকে এই থেরাপি দেওয়া হয়েছিল। নভেম্বরে ১৩জনকে। আর ডিসেম্বরে ৩৩ জন! এর মধ্যে শুধু বৃহস্পতি–শুক্রবার ২০জন নিয়েছেন এই থেরাপি। উল্লেখ্য, ২৭ ডিসেম্বর রাতে সৌরভ হাসপাতালে ভরতি হন। রাতেই তাঁকে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল থেরাপি দেওয়া হয়। পরদিন সেই খবর প্রকাশ্যে আসে। তারপর থেকেই বেড়ে গিয়েছে ককটেল থেরাপির চাহিদা। উডল্যান্ডসের এমডি ও সিওও ডা. রূপালি বসু জানিয়েছেন, “কোভিড কেস বেড়েছে তাই এই থেরাপি নেওয়ার রোগীও বেড়েছে। তবে সৌরভের জন্য অনেক মানুষ এই থেরাপি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।”
অ্যাপোলো গ্লেনাগেলস হাসপাতালে আগে মেরেকেটে সপ্তাহে দু’জন এই থেরাপি নিতেন। আর এখন? রোজ দু’জন করে নিচ্ছেন। এমনটাই জানালেন অ্যাপোলোর মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। পিয়ারলেস হাসপাতাল অনেকদিন ধরেই রোগীদের এই থেরাপি দিচ্ছে। চাহিদা অবশ্য নতুন করে বাড়েনি বলেই জানালেন মেডিক্যাল সুপার ডা. সিঞ্চন ভট্টাচার্য। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ককটেল থেরাপি দেওয়ার খরচ অনেক। তাই ইচ্ছে থাকলেও অনেকে এই ককটেল থেরাপি নিতে পারছেন না। রোজ একজন–দু’জনকে দেওয়া হচ্ছিল। এখনও তাই আছে।
তাৎপর্যের বিষয় হল, ভারতে ককটেল থেরাপির সূচনা কিন্তু এই বাংলাতেই, সরকারি হাসপাতালে। বেলেঘাটা আইডি–তে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. যোগীরাজ রায় প্রথম এই থেরাপি দেন। তারপর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজি করেও এই থেরাপি দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, আইডিতে এখনও পর্যন্ত ৪০ জনকে, আরজি করে ১০৫ জনকে এবং কলকাতা মেডিক্যালে ৪৫ জনকে দেওয়া হয়েছে।
তবে সরকারি ক্ষেত্রে আপাতত এই থেরাপি বন্ধ আছে। ভাইরোলজিস্টরা জানিয়েছেন, সাধারণত অতিসংকটজনক রোগীর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি ককটেল থেরাপি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এতে মৃত্যু সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ কমে। ইমিউনোগ্লোবিন জি-১ মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ক্যাসিরিভিমাব এবং ইমডেভিমাব দিয়ে তৈরি এই ককটেল স্পাইক প্রোটিনকে নিশানা কোষে ঢুকতে বাধা দেয়। হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গের কোভিড রোগী, যাঁদের কোমর্বিডিটি আছে, বয়স ১২ বছরের বেশি এবং ওজন ৪০ কেজির বেশি, তাঁদেরকে এই থেরাপি দেওয়া যাবে। হার্ট অ্যাটাকের কারণে সৌরভের শরীরে স্টেন্ট বসেছিল। উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে। তাই ঝুঁকি কমাতে কোভিড চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির ককটেল দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.