Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kidney Problems

কিডনি ভালো রাখতে কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন? রইল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কিডনির প্রতি বিশেষ যত্ন নিন।

Signs and Symptoms of Kidney Disease, Doctor's advice | Sangbad Pratidin
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:February 25, 2024 5:47 pm
  • Updated:February 25, 2024 5:47 pm  

এখন কিডনি ভালো আছে মানে ভবিষ্যতেও একই ছন্দে চলবে সেটা কিন্তু নয়! আবার একটু বয়স বাড়লে কোনও সমস্যা নেই মানে, ষাট পেরলেও হবে না, সেটা ভাবলেও ভুল। জীবনের প্রতি পর্যায়ে কিডনির বিশেষ পরিচর্যা অতি আবশ্যক। পর্যায়ক্রমে তা বুঝিয়ে বললেন নেফ্রলজিস্ট ডা. প্রতীম সেনগুপ্ত। শুনলেন জিনিয়া সরকার

মানবদেহে কিডনি এমনই একটা অঙ্গ যে আজ ভালো আছে মানে চিরকাল ভালো থাকবে, সেটা যেমন নয়, আবার আজ ভালো নেই মানে কোনও দিনও ভালো হবে না সেটাও নয়। কিডনির মূল কাজ হল, শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থকে আলাদা করে দেওয়া। এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির তাই সারাজীবনই ভালো থাকা খুব দরকার। আর তার জন্যই চাই জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কিডনির প্রতি বিশেষ যত্ন।

Advertisement

আজ কী কী করলে কিডনি ভালো থাকবে?

এপ্রসঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই বলব, প্রাথমিকভাবে সকলের মধ্যেই একটা ভুল ধারণা রয়েছে, কিডনি খারাপ হলে আগে থেকে তা জানান দেয়। তা কিন্তু নয়। কিডনির অসুখ হল সাইলেন্ট কিলার। এই অঙ্গে কোনও অসুখ বাসা বাঁধলে সেটা প্রথমে একেবারেই টের পাওয়া যায় না। যখন খুব বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যায় তখন বোঝা যায়। প্রতিটি কিডনি ১১ লক্ষ নেফ্রন নিয়ে গঠিত। কিন্তু ১০-২০ হাজার নেফ্রন নিয়ে আমরা ভালোভাবে কাটাতে পারি। সেই কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি বিকল হলে আমরা টের পাই না। কোনও লক্ষণই থাকে না। তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিডনিতে কোনও রোগ বাসা বাঁধছে কি না বোঝা মুশকিল।

তাই আগাম কিডনির টেস্ট, যা রোগের পূর্বাভাস জানায়
– রক্তের টেস্ট যেমন, ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, সোডিয়াম ও পটাশিয়াম।
– আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে কিডনির গঠন ঠিক রয়েছে কি না দেখা।
– রুটিন ইউরিন টেস্ট করে দেখা উচিত।
– একটি অ্যাডভান্সড টেস্ট রয়েছে, যার নাম হল সিস্টাসিন সি। এই টেস্ট করে অনেক আগে থেকেই বোঝা যায় রোগীর ভবিষ্যতে ক্রিয়েটিনিন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না।
– ক্রিয়েটিনিন থেকে জিএফআর লেভেল দেখেও কিডনির অসুখের ভবিষ্যৎবাণী করা যায়।

Bihar Woman Alleges Her Kidneys Fraudulently Removed she Wants Doctor's Organs

কী কী লক্ষণ অ্যালার্মিং?
– পা ফুলছে কি না।
– প্রস্রাব করার সময় তা থেকে সাবানের মতো ফেনা হচ্ছে কি না।
– কোনও কারণ নেই, খুব ক্লান্তিভাব।
– খাওয়ার ইচ্ছে চলে যাওয়া।
– ঘুমের অত্যধিক সমস্যা।
– মেয়েদের ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা থাকলে বারবার ইউরিন ট্রাক্ট ইনফেকশন হতে পারে।

আজ মানলে কাল ভালো

কিডনি ভালো আছে কি না এই চিন্তা মনে জাগলে প্রথমেই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরবর্তী কী করবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এছাড়া কতগুলো জিনিস মানতে হবে। যেমন- পর্যাপ্ত জলপান, নুন বাদ দিন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, ওভার দ্য কাউন্টার মেডিসিন এড়িয়ে চলুন, মুড়ি-মুড়কির মতো আয়ুর্বেদিক ওষুধ খাওয়া বা ন্যাচারোপ্যাথিতে অতিরিক্ত বিশ্বাস কিডনির ক্ষতি করতে পারে, অতিরিক্ত ব্যথার ট্যাবলেট কিডনির সমস্যার কারণ, কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া মারাত্মক কিডনির জন্য।

[আরও পড়ুন: প্রস্রাবের ফোঁটায় চোখের সমস্যা উধাও? ‘সাবধান’! বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন আগে জানুন]

ভবিষ্যতেও মাথার রাখুন
কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো ভবিষ্যতের কথা ভেবে আগে থেকে মেনে চলতে হবে। কিছু অসুখের প্রেক্ষাপটে কিডনির অসুখের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
– ডায়াবেটিস – যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি তাঁদের খুব সতর্ক থাকা দরকার। আজ কিডনি ভালো থাকলেও যদি ঠিকভাবে সচেতন না হওয়া যায় তাহলে ডায়াবেটিস কিন্তু ধীরে ধীরে কিডনি বিকল করে।
– রক্তচাপ – এক্ষেত্রে বর্তমানে কোনওরকম সমস্যা না হলেও এই অসুখ কিন্তু ভবিষ্যতে কিডনির নানা সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
– কোলাজেন মাসক্যুলার ডিজিজ বা ক্রনিক আর্থ্রাইটিস – এই ধরনের সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত পেন কিলার খাওয়ার প্রবণতা থাকে, সেটাও কিন্তু কিডনি ফাংশন প্রতিহত করতে পারে। লুপাস, মাল্টিপল টিস্যু ডিসঅর্ডার ইত্যাদি অসুখ গুলো ধীরে ধীরে কিডনির উপরে প্রভাব ফেলে।
আর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হল কারও আগে কোনও কিডনির সমস্যা ছিল, তা এখন ভালো হয়েছে। তবু কিছু জিনিস না মানলে বিপদ। যেমন- কিডনিতে স্টোন। এক্ষেত্রে যাঁদের রয়েছে
অসুখটা বা অপারেশন হয়েছে, তার পরবর্তী সময়েও ডায়েট খুব জরুরি। স্টোনের কারণ জানতে জেনেটিক মেটাবলিক ডিসঅর্ডার থাকলে সেগুলোর চিকিৎসা করা দরকার। ভবিষ্যতে অ্যান্টিবায়োটিক ও পেনকিলার খুব বুঝে খাওয়া উচিত।

After three transplants, man ends up with five kidneys in body

[আরও পড়ুন: মনখারাপের দিনে এই ৬ ভুল একদম করবেন না, অবসাদ ছেলেখেলা নয়, সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞর]

কিডনির এক্সারসাইজ
১) বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রমাণিত, যে সব এক্সারসাইজ হার্টের জন্য ভালো, মানসিক চাপ কমায়, সেগুলো আবার কিডনিও ভালো রাখে।
২) এছাড়াও প্রাণায়াম করলেও মানসিক চাপ বা সিমপ্যাথেটিক স্ট্রেস কমে ও কিডনি ফাংশন ঠিক থাকে। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ কমায়।
৩) ‘মুক্তি’- প্রাণায়াম কিডনির জন্য ভালো। এই প্রাণায়াম করলে অ্যান্ডোস্টেরন হরমোন ক্ষরণ কমে যায়। এই হরমোন বেড়ে গেলেই কিডনির ক্ষতি হয়, রক্তচাপ বাড়ে, কিডনি ফাইব্রোসিস হয়। মুক্তি প্রাণায়ামে এর বিনাশ ঘটে। আর ঘুমও ভালো হয়।

দুর্বল কিডনি সবল রাখতে বয়সকালে অর্থাৎ ষাটোর্ধ্বদের বয়সজনিত কারণে কিডনির নানা সমস্যা হয়। এই বয়সজনিত কারণ প্রতিহত করতে কয়েকটি পদক্ষেপ রয়েছে-
১) ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ঠিক রাখার সঙ্গে হার্টের বিশেষ যত্ন এই বয়সিদের নিয়ে হবে। যাঁর যত ভালো হার্ট, তাঁর কিডনির সমস্যাও কম। কার্ডিও রেনাল সিন্ড্রোম এই বয়সে বেশি হয়। তাই রোজ হাঁটা, কিডনি ভালো রাখার জন্য অন্যতম এক্সারসাইজ। এছাড়া এন্ডোরফিন হরমোন হাঁটলে ক্ষরণ হয়। এই হরমোন কিডনির কার্যক্ষমতা ৩০ শতাংশ বাড়াতে পারে। তাই হাঁটুন। তবে অতিরিক্ত নয়। খুব বেশি এক্সারসাইজ করলে পেশি থেকে প্রোটিন বের হয়, সেই প্রোটিন কিডনির ক্ষতি করতে পারে। ২০-৩০ মিনিট সপ্তাহে ৫ দিন হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন।

২) বয়সকালে ডায়ালিসিস নিতে হলে মাথায় রাখুন কিছু বিষয়। যাঁদের দীর্ঘদিন ধরে ডায়ালিসিস চলছে, তাঁদের বয়স বাড়লে সাবধান হতে হবে। প্রথমত, খুব সতর্ক থাকতে হবে খাদ্যাভ্যাস নিয়ে। দ্বিতীয়ত, সঠিক ডায়ালিসিস সেন্টার থেকে ডায়ালিসিস নিতে হবে। এসব বুঝে চললে, ডায়ালিসিস নিয়েও ১০-১৫ বছর ভালো থাকা যায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement