Advertisement
Advertisement

Breaking News

Prostate Cancer

প্রস্টেট ক্যানসার মানেই অপারেশন নয়, রেডিয়েশনেও এর নিরাময় সম্ভব, জানালেন বিশেষজ্ঞ

কখন সার্জারি, আর কখন রেডিয়েশন দরকার, জেনে রাখুন।

Prostate Cancer can be treated with radiation | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:July 19, 2023 2:26 pm
  • Updated:July 19, 2023 2:26 pm  

প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্তের সম্ভাবনা যেমন বেশি, তেমনই তা নিরাময়ের জন্যও এসেছে অত্যাধুনিক রেডিয়েশন। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই আসল কথা। অঙ্কোলজিস্ট ডা. সায়ন পাল জানালেন কখন সার্জারি, আর কখন রেডিয়েশন দরকার। শুনলেন জিনিয়া সরকার। 

পুরুষদের মধ্যে যে ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি তার মধ্যে অন্যতম হল প্রস্টেট ক্যানসার (Prostate Cancer)। যা একটা বয়সের পর প্রায় অধিকাংশ পুরুষের মধ্যেই দেখা যায়। তবে আশার কথা এটাই, এই ক্যানসারে আক্রান্তের হার যেমন বেশি অন্যদিকে সেরে ওঠার সম্ভাবনাও বেশি। চিকিৎসা ঠিক হলে অন্যান্য ক্যানসারের মতো প্রস্টেট ক্যানসার অতটাও ভয়াবহ আকার ধারণ করে না। সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতাও রুখে দেওয়া সম্ভব।

Advertisement

Prostate Cancer

বুঝে সিদ্ধান্ত
রিস্ক ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে প্রোস্টেট ক্যানসার সাধারণত তিন ধরনের হয়। লো রিস্ক, ইন্টারমিডিয়েটেড রিস্ক ও হাই রিস্ক প্রস্টেট ক্যানসার।
যাদের লো রিস্ক পর্যায়ে ক্যানসার রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার তিনটি অপশন রয়েছে।
১) সার্জারি করে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বাদ দিয়ে দেওয়া
২) রেডিয়েশন দেওয়া 
৩) অ্যাকটিভ সার্ভাইলেন্স অর্থাৎ প্রথমেই চিকিৎসা না করে তিনমাস অন্তর অন্তর রোগীকে পর্যবেক্ষণ করে রোগটা বাড়তে থাকলেই চিকিৎসা করা (রেডিয়েশন চিকিৎসা বা সার্জারি)।
ইন্টারমিডিয়েট স্টেজে হরমোনাল ট্রিটমেন্ট দিতে হয়। সঙ্গে প্রয়োজন মতো হয় সার্জারি না হলে রেডিয়েশন দিতে হয়।
হাই রিস্ক প্রস্টেট ক্যানসারে সার্জারির কোনও কার্যকারিতা নেই। হরমোন্যাল ট্রিটমেন্ট ও সঙ্গে রেডিয়েশন দ্বারাই এই পর্যায়ে চিকিৎসা করা হয়।

সার্জারি, না কি রেডিয়েশন
প্রোটেক্ট টি ট্রায়ালের কম্পারেটিভ রিসার্চ আর্টিকেলে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ব্রিটেনের নাইস (NICE বা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্লিনিক্যাল এক্সিলেন্স) গাইডলাইনে সরাসরি বলা হয়েছে প্রস্টেট ক্যানসারে রেডিয়েশন ও সার্জারি দু’টোই সমান কার্যকর কিন্তু রেডিয়েশনের সাইড এফেক্ট কম। অপারেশনের ক্ষেত্রে প্রস্টেট ক্যানসারে রোবটিক সার্জারিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম।
অন্যদিকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিক থেকে দেখতে গেলে রেডিয়েশনে সাইড এফেক্ট সার্জারির তুলনায় আরও কম। আর এই চিকিৎসা কাটাছেঁড়া ব্যথাহীন।
সার্জারির পর সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা দেখা দেয় তা হল ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স। অর্থাৎ প্রস্রাবের বেগ ধরে রাখতে না পারা, আর সেক্সুয়াল ডিসফাংশন। তাই অপারেশনের পর অধিকাংশের ডায়াপার পরে দিন যাপন করতে হয়। কিন্তু রেডিয়েশনের ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরবর্তী এই রকম জটিলতা দেখা দেয় না।

Prostate Cancer 1

অনেক ক্ষেত্রে স্টেজ অনুযায়ী অপারেশন করার পরও রেডিয়েশন দিতে হতে পারে। তাই অপারেশন না করে শুধু রেডিয়েশন দিয়ে চিকিৎসা করলে খুব ভাল রেজাল্ট মেলে।
তাই বলব, প্রস্টেট ক্যানসার মানেই অপারেশন এটা মোটেই সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য নয়। নতুন পদ্ধতির রেডিয়েশন চিকিৎসায় অপারেশন ছাড়াই প্রস্টেট ক্যানসার পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে।

[আরও পড়ুন: মাত্র ৩০ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি! কোথায় পাওয়া যাচ্ছে?]

কখন ইউরোলজিস্টের পাশাপাশি অঙ্কোলজিস্টের পরামর্শ জরুরি
সাধারণত প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা মানে প্রথমেই ইউরিনের সমস্যা দেখা দেয়। ইউরিনের বেগ ধরে রাখতে না পারা, বাথরুমে যাওয়ার আগেই কাপড়ে প্রস্রাব হয়ে যাওয়া, রাতে ঘুমের সময় বারবার প্রস্রাব পাওয়া, প্রস্রাব করার সময় ড্রপ ড্রপ প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ হলে ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তারপর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রস্টেট ক্যানসার কি না তা নির্ণয় করতে হয়। প্রথমেই চিকিৎসকরা যেটা করেন তা হল খুব সাধারণ একটা ব্লাড টেস্ট যার নাম পিএসএ টেস্ট।
কারও পিএসএ বেশি হলে ম্যাল্টি প্যারামেট্রিক এমআরআই করা জরুরি। তারপর PRad স্কোরিং করে দেখা হয়। রিপোর্ট দেখে সন্দেহ হলে তখন ট্রাস গাইডেড বায়োপসি করার প্রয়োজন পড়ে। তারপর রেডিয়েশন দ্বারা প্রস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা করা হয় ও প্রয়োজনে হরমোনের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তাই প্রস্টেট ক্যানসার নির্ণয় হলে ইউরোলজিস্টের পাশাপাশি রেডিয়েশন অঙ্কোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াও খুব জরুরি। কারণ অপারেশন ছাড়াই কেবল রেডিওথেরাপি চিকিৎসার সাহায্যেই প্রস্টেট ক্যানসার নির্মূল করে দেওয়া সম্ভব।

কিন্তু এমনও হয়, পিএসএ বেশি কিন্তু এমআরআই বা অন্যান্য টেস্ট করে দেখা গেল ক্যানসার নয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু নিয়মিত পিএসএ ভ্যালু দেখা ও ইউরোলজিস্টের পরামর্শমতো চিকিৎসা চালিয়ে গেলেই রোগ নির্মূল সম্ভব। সাধারণ কারণে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বাড়লে সেক্ষেত্রে যে অপারেশন করেন ইউরোলজিস্ট তা ক্যানসারের অপারেশনের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

Prostate Cancer

রেডিয়েশনের চিকিৎসা কতদিন চলে?
বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে মাত্র একমাসে ২০টি রেডিয়েশন দ্বারাই প্রস্টেট ক্যানসার নির্মূল করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
এই রেডিয়েশন হল হাই এনার্জি এক্সরে। এতে কোনও ব্যথা বা কষ্ট রোগীর হয় না। শুধু টার্গেটেড ওয়েতে চিকিৎসা করে রেডিয়েশন দ্বারা ক্যানসার কোষকে মেরে ফেলা হয়।
রেডিয়েশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম, আর তা একমাসের মধ্যে ঠিকও হয়ে যায়। চিকিৎসা চলাকালীনও রোগীর কোনও রকম সমস্যা হয় না। খরচও সাধ্যের মধ্যে।
স্টেরিওট্যাকটিক বডি রেডিওথেরাপি (SBRT) টেকনিকে মাত্র পাঁচটি রেডিয়েশনেই ক্যানসার ঠিক করে তোলা সম্ভব।

সব শেষে একটাই কথা, প্রস্টেট ক্যানসার ধরা পড়লে তার দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে আবার স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। রোগ পুষে রাখলে তা থেকে শরীরে বা হাড়ে ছড়িয়ে গিয়ে খুব ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই শুরুতেই চিকিৎসা করুন। মনে রাখবেন অন্যান্য ক্যানসারের চেয়ে এই ক্যানসার সেরে যাওয়ার হারও অনেক বেশি।
ফোন – ৮৩৭৫৯৮৮৮৪২

[আরও পড়ুন: বর্ষাকালে রোজ রোজ ভাজাভুজি খেয়ে বিপদ ডেকে আনছেন না তো! জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement