ঘরে বসেই মনিটর করুন ব্লাড প্রেশার। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিশেষজ্ঞরা দিচ্ছেন কিছু সহজ টিপস। লিখছেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়।
অফিসে আগের দিন খুব ধকল গিয়েছে। বা হয়েছে বিস্তর সুরা পান। ফল? পরদিন সকালে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখলেন, ব্লাড প্রেশার বেড়ে গিয়েছে লাগামছাড়া। আদপে কিন্তু যা হওয়ার কথা মোটেও ছিল না! এমনিতে রক্তচাপ আপনার নিয়ন্ত্রণেই থাকে। ব্যাপারটা হল, আপনার একদিনের নিয়ম না মানার খেসারত তাকে দিতে হয়েছে। তাহলে চিকিৎসক কী বুঝবেন? তিনি তো ধরে নেবেন, এটাই আপনার স্বাভাবিক রক্তচাপ। চিকিৎসাও সেই মতো হবে। কী তাই তো?
গড়বড় ঘটিয়ে থাকলে জেনে রাখুন, তার সুরাহাও আছে। ঘন ঘন ‘বৈদ্যবাটি’তে যাওয়ার বদলে ঘরেই মাপুন ব্লাড প্রেশার। চিকিৎসকরাই বলছেন এ কথা। আরও স্পষ্ট করে বললে হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ‘হোয়াইট-কোট হাইপারটেনসন’ অথবা ‘লাবাইল হাইপারটেনসন’-আক্রান্ত যাঁরা, তাঁদের ক্ষেত্রে ‘হোম মনিটরিং’ অর্থাৎ ঘরে বসেই রক্তচাপ পরিমাপ করা বিশেষভাবে উপযোগী।
[ ৩২৮টি ওষুধের উপর নিষেধাজ্ঞা, কোপ পড়ল স্যারিডনেও ]
কিন্তু দাঁড়ান। ‘উঠল বাই তো কটক যাই’ করে কোনও লাভ নেই। হোম মনিটর করার আগে আপনার বাড়িতে যে পরিমাপক যন্ত্রটি আছে, সেটির সঙ্গে ডক্টরস চেম্বারে থাকা যন্ত্রের তুলনা করে নিতে ভুলবেন না। বাড়িতে যখন প্রথম বার রক্তচাপ পরিমাপ করবেন, মনে করে তা করবেন সকালে এবং তা-ও আবার এই সংক্রান্ত ওষুধ খাওয়ার আগে। এর পরের সময় হল সন্ধ্যাবেলা। এইভাবে সপ্তাহে প্রতি দিন দু’বার করে মাপতে হবে রক্তচাপ। যদি কখনও হার বেশি দেখেন, ঘাবড়ে যাবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। শুধু এটা মাথায় রাখবেন যে, দিনের প্রত্যেকটা সময় রক্তচাপ একই রকম হয় না। রিডিং আলাদা আলাদা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তা সে যাই হোক না কেন, রেকর্ডের নোট রাখতে ভুলবেন না। যখন ডাক্তারের চেম্বারে যাবেন, সেটা দেখাতে হবে তো!
কীসে মাপবেন রক্তচাপ?
এমনি তো ‘ট্র্যাডিশনাল’ যন্ত্র রয়েছেই। তবে হালে নানা ধরনের অ্যাপের আবির্ভাব হয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে ব্লাড প্রেশার মাপা কোনও ঝক্কিই নয়। এই সব অ্যাপের কিছু কিছু তো আবার সরাসরি মনিটর থেকে রিডিং নিয়ে নেয়। ফলে লিখে রাখার সমস্যায় পড়তে হয় না। তবে হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, হোম ব্লাড প্রেশার মনিটরিং এমনিতে লাভজনক এবং উপযোগী অভ্যাস হলেও ঘন ঘন তা করা কোনওমতেই উচিত নয়। এতে লাভের বদলে ক্ষতি বেশি হবে। আতঙ্ক বাড়বে, অসুস্থতা বৃদ্ধি পাবে। তবে এমনিতেও কোনও কিছুর ‘অতি’ ভাল নয়। সেটুকু মনে রাখলেই ব্যস! ‘নো টেনশন’।
বেছে নেবেন কীভাবে?
বেশিরভাগ ওষুধের দোকানেই ব্লাড প্রেশার মাপার মেশিনারি থাকে। তবে বাড়িতে রাখতে চাইলে বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হবে। অনেকে অবশ্য চিকিৎসকদের কাছ থেকেও এই যন্ত্র সংগ্রহ করে রাখেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, যদি বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হয়, তাহলে নিজের জন্য কোনটা ‘বেস্ট’, তা বুঝবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে উপায় হল ‘কাফ সাইজ’ দেখে কেনা। এমন যন্ত্র দেখে কিনুন, যেটির কাফ আপনার বাহুর উপরাংশে রাখার পর তা যেন আপনাআপনি নিজেকে ফোলাতে বা স্ফীত করতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবেই রক্তচাপ মাপতে পারে। কাফটির স্ফীত অংশ যেন আপনার বাহুর অন্তত ৮০ শতাংশ ‘কভার’ করে থাকে। কারণ, কাফ সাইজ ছোট হলে যতবারই রিডিং নেবেন, ততবারই ‘হাই’ রিডিং আসার সম্ভাবনা আছে। আরও দেখে নেবেন যে মডেলগুলি এক বা দু’সপ্তাহের রেকর্ডিং যেন স্টোর করে রাখতে সক্ষম হয়। যন্ত্রটি সংগ্রহ করার সময় সেটা ব্যবহারের জন্য সুবিধাজনক কি না, তা দেখে নিতে ভুলবেন না।
[ সমকামে বাড়তে পারে এইডসের প্রকোপ, উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা ]
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে মনে রাখতেই হবে:
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ হয় অবসাদ নিয়ন্ত্রণে অক্ষমতা। যদি আপনিও তাঁদের তালিকায় পড়েন, তাহলে জেনে রাখুন অবসাদ নিয়ন্ত্রণ করে হাই ব্লাড প্রেশারকে কাবু করার সাতটি ‘সিওর-শট’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.