করোনা আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসছে। সঙ্গে বাড়ছে মানসিক চাপ। কিন্তু যত টেনশন করবেন, ততই বাড়বে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। বললেন ডা. দেবাশিস ঘোষ, শুনলেন গৌতম ব্রহ্ম।
বিশ্বে মহামারির রূপ নিয়েছে করোনা। দেশেও ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে এই মারণ রোগ। আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই চড়ছে আশঙ্কার পারদ। টেনশনে নাওয়া-খাওয়া ছেড়েছেন অনেকে। রাতের ঘুমের মধ্যেও দুঃস্বপ্ন দেখছেন তাঁরা। কিন্তু এই আতঙ্ক বিপদ আরও বাড়াচ্ছে বলেই মত চিকিৎসকদের। আতঙ্কের জেরে দেশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, টেনশন করলে রক্তের কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। কীভাবে? আসলে এই কর্টিসল টি-লিম্ফোসাইট এবং অ্যান্টিবডি দুটোরই উৎপাদন কমিয়ে রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এটা প্রমাণিত যারা স্ট্রেস বা মানসিক রোগের শিকার তাঁদের সর্দি-কাশি বেশি হয়। রাইনো ভাইরাস নামে এক জীবাণু তাঁদের বেশি করে আক্রমণ করে। এঁদের এইচআইভি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
টেনশন করলে অনেকক্ষেত্রেই রক্তের মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রা কমে যেতে পারে। মেলাটোনিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্যে করে। যখন মেলাটোনিন কমে যায়, তখন আমাদের শরীরের হোয়াইট ব্লাড সেল বা শ্বেতরক্ত কণিকা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। শরীরে থাকা ন্যাচারাল কিলার বা NK সেলগুলি কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাছাড়া মেলাটোনিন শরীরের সাইটোকাইনিন এবং অন্যান্য প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। মেলাটোনিন সাধারণত রাতে ঘুমের সময় তৈরি হয়, যদি মানসিক চাপের জন্য ঘুম কমে যায় তাহলে মেলাটোনিন উৎপাদন বিপর্যস্ত হয়। তাই যে কোনও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ও সঠিক খাওয়া-দাওয়া করা জরুরি।
আরও একটি কথা, স্ট্রেস করলে রক্তে সেরাটোনিন হরমোনের হেরফের হয়। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করে। প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। সবার আগে বিপর্যস্ত হয় ফুসফুস। করোনা ভাইরাস কিন্তু মানবদেহের এই যন্ত্রকেই ঘায়েল করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.