Advertisement
Advertisement

চেয়ারে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ, শিরদাঁড়ার ক্ষয় রুখতে মেনে চলুন এই উপায়

কাজ বাঁচিয়েও শরীর সুস্থ রাখতে কী করবেন?

Long work hour may spell disaster for back pain
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 30, 2018 12:14 pm
  • Updated:July 30, 2018 9:19 pm  

অভিরূপ দাস: কাজের চাপে কুঁজো হয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। অনেকে, মানে অফিসজীবীদের প্রায় ৭০ শতাংশ! সরকারি পুষ্টি সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশনের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, দিনের প্রায় ছ’ঘণ্টা যাঁরা চেয়ারে বসে কাজ করেন, মেরুদণ্ড নুয়ে পড়ছে মূলত তাঁদেরই। আর এঁদেরই ভিড় উপচে পড়ছে অস্থি চিকিৎসকদের চেম্বারে চেম্বারে। দেখা দিয়েছে নতুন অসুখ ‘পুওর পশ্চার সিনড্রোম।’ উপসর্গ, কাঁধে, পিঠে অসহ্য ব্যথা।

যেমন সাঁকরাইলের অমিয় বর্মন। বেসরকারি সংস্থার অফিসকর্মী বছর পঞ্চাশের প্রৌঢ় কোমরের যন্ত্রণায় টিকতে পারছেন না। অনেক জায়গা ঘুরে শেষমেশ হত্যে দিয়েছেন পিজির আউটডোরে। কলকাতা তথা রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডাক্তারবাবু পরীক্ষা করে যা বললেন, শুনে অমিয়বাবুর চক্ষু চড়কগাছ। শিরদাঁড়া বেবাক বেঁকে গিয়েছে! কীভাবে?

Advertisement

[বাংলা সাহিত্যের আকাশে নক্ষত্রপতন, প্রয়াত রমাপদ চৌধুরী]

চিকিৎসক জানিয়ে দিলেন, দীর্ঘক্ষণ চেয়ারে বসে কাটানোই কাল হয়েছে! এসএসকেএম-এর অস্থি শল্য চিকিৎসার বিভাগীয় প্রধান ডা. আনন্দকিশোর পালের কথায়, “শুধু অমিয়বাবু নন। ওঁর মতো হাজারো মানুষের দিনের বেশিরভাগ সময়টা কাটে অফিসের চেয়ারে বসে। টেরও পান না, কিভাবে শরীরের ক্ষতি হচ্ছে। যখন হুঁশ ফেরে ততদিনে বেশিরভাগেরই মেরুদণ্ডের আকৃতি বদলে গিয়েছে।”

ব্যাপারটা যে সত্যি তা স্বীকার করেছেন অমিয়বাবুও। রোগীদের কেস হিস্ট্রি দেখে বিশেষজ্ঞরা বুঝেছেন, সমস্যার লুকিয়ে চেয়ারের ভেতরেই। ডা. পালের কথায়, “এখন সমস্ত অফিসেই কম্পিউটার। সামনের দিকে ঝুঁকে কম্পিউটারে টাইপ করেন সকলে। মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক একটা কার্ভ বা গঠন রয়েছে। এক নাগাড়ে চেয়ারে বসে কাজ করলে মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে। সেখান থেকেই ব্যথার শুরু। একদিন আচমকাই বেঁকে যায় শিরদাঁড়া।” তাহলে উপায়?

[স্নাতক ডিগ্রিতে বিপ্লবী প্রীতিলতার পদবিতে বিভ্রাট! ব্যাপারটা কী?]

লাম্বার পিলো অথবা ছোট এক ধরনের কুশন মেলে বাজারে। তা চেয়ারে রেখে তাতে ঠেস দিয়ে কাজ করতে বলছেন শহরের অস্থি বিশেষজ্ঞরা। তবে তাতে সাময়িক আরাম মিলবে। ডা আনন্দকিশোরের পরামর্শ, “টানা দেড় ঘণ্টার বেশি চেয়ারে বসে কাজ করা উচিত নয়।” রয়েছে চেয়ারে বসার কিছু নির্দিষ্ট নিয়মও। কী সেই নিয়ম? চোখ থাকতে হবে কম্পিউটারের সঙ্গে এক মাত্রায়। বুকের কাছাকাছি থাকতে হবে কি-বোর্ড। এই অবস্থাতেই মেরুদণ্ড সোজা রেখে কাজ করা যায়।

বেশিরভাগ অফিসেই কোনওরকম ভাবে টেবিলে কম্পিউটার রেখে একটা চেয়ার বসানো। মাত্রা বা ‘লেভেল’ ঠিক করার কোনও বিষয় নেই। নীলরতন সরকারের হাসপাতালের অস্থি শল্য বিশারদ ডা. পার্থসারথি সরকার আবার গোটা বিষয়টায় উদাসীনতা দেখছেন। তাঁর কথায়, “আম পাবলিকের মধ্যেই সচেতনতার অভাব। নড়বড়ে চেয়ারে বসে কাজ করে চলেন কেরানিরা। দাঁড়িয়ে থাকলেও শিরদাঁড়ায় অতটা চাপ পরে না, যতটা পড়ে অবৈজ্ঞানিক এই সমস্ত চেয়ারে বসে। শরীরে রক্ত সঞ্চালনেও সমস্যা তৈরি করে এই ধরনের বসার ভঙ্গিমা।” ভুল চেয়ার হিপ ফ্লেক্সর, ইলিওপসাস পেশিতে চাপ তৈরি করে। চাপের মধ্যে থাকে নিতম্বের বাটক মাসলও। এই পেশিগুলি শিঁড়দাড়াকে সোজা রাখতে সাহায্য করে। চুলে পাক ধরার আগেই তাই হাতে উঠে আসে লাঠি।

[নিম্নচাপের অবস্থান বদল, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি কমবে কলকাতায়]

চিকিৎসকরা বলছেন, স্পাইনাল লিগামেন্ট গার্ডারের মতো। একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ‘স্ট্রেচ’ করতে পারে। কিন্তু অফিসের অবৈজ্ঞানিক চেয়ারে দীর্ঘক্ষণ বসলে চাপ পড়ে সেই লিগামেন্টে। শহরের অনেক অফিস সমস্যা মেটাতে এখন এরগোনোমিক চেয়ার কিনছে। অস্থি বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন, চেয়ার যাই হোক, একটানা বসে থাকা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। বরং দেড় দু’ঘণ্টা বসে থাকার পর উঠে হেঁটে আসতে   বলছেন তাঁরা। ডা. পালের পরামর্শ, “প্রয়োজনে অফিসের সহকর্মীকে মেল না করে তাঁকে ডেকে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলুন। স্ট্যান্ড ডেস্কে কম্পিউটার রেখে দাঁড়িয়ে কাজ করুন। তাতেই মুক্তি মিলবে যন্ত্রণা থেকে।”

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement