শীতের শুরুতেই সর্দি, হাঁচি, কাশি, অ্যাজমায় ভরসা থাকুক ভেষজে। এই সময়টায় খুব সাবধান। কখন কোনটা খাবেন? জানালেন জে বি রায় স্টেট আয়ুর্বেদিক হসপিটালের অধ্যাপক ডা. শ্রীকান্ত পণ্ডিত। তার কথা শুনে লিপিবদ্ধ করলেন পৌষালী দে কুণ্ডু।
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই আবহাওয়া পরিবর্তনের আভাস মিলছে। সূর্য ডুবতে না ডুবতেই ঠান্ডা ভাব। পাখা চালালে শীত করছে, বন্ধ রাখলে গরম। হেমন্ত ও শীতকালের এই মাঝামাঝি সময় সর্দি-জ্বর-হাঁচিতে কাবু ছোট থেকে বড়। কিছু টোটকা, ভেষজ পথ্য যদি ছোট-বড় সকলেই রোজ খান তাহলে সর্দি-হাঁচির হ্যাঁচফ্যাচানি থেকে মুক্তি পাবেন। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
আয়ুর্বেদিক মতে কীভাবে সুস্থ থাকবেন?
সারাদিন হাঁচি বা সকালে হাঁচি হলে ১ চামচ হলুদের টুকরো ঈষৎ উষ্ণ দুধের সঙ্গে ২-৩ বার খেলে উপশম হয়।
সকাল সাতটায় ও সন্ধ্যা নামার আগে বিকাল পাঁচটায় অনু তৈল অথবা দশমূল তৈলের নস্য ২ ফোঁটা করে ২ নাকে নিলে ভাল হয়।
১-২ চামচ হলুদগুঁড়ো ফুটন্ত জলে ফেলে যে বাষ্প তৈরি হবে সেটা নাক-মুখ দিয়ে গ্রহণ বা ইনহেল করলে উপকার। দিনে ৩-৪ বার করা যায়।
কাশি, ঠান্ডা লাগা, অ্যালার্জির জন্য কাশি, নাক দিয়ে জল পড়ার ক্ষেত্রে কী করবেন?
২-৩টি পানপাতার রস বের করে আধ চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ১-২ বার চেটে খেলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
৪-৫টি গোলমরিচ ও এক চিমটে হলুদ নিয়ে গোলমরিচের পাতার মধ্যে মুড়ে সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খেলে ফলপ্রদ।
সর্দি, কাশি, নাক-কান-গলা বন্ধ হলে যা করতে হবে-
সিকি চামচ আদার রস ও সিকি চামচ রসুনের রস, আধ চামচ তুলসীপাতার রস, ২ চামচ মধু ও এক চিমটি গোলমরিচ ভাল করে মিশিয়ে এক থেকে দেড় চামচ ৩-৪ বার চেটে খেয়ে পরে ঈষৎ উষ্ণ জল পান করলে উপকার পাবেন।
সিকি চামচ হলুদগুঁড়ো ও সিকি চামচ যষ্টিমধু গুঁড়োর সঙ্গে পরিমাণমতো মধু মিশিয়ে বটি তৈরি করে সারাদিনে ৫-৬ বার চুষে খেলে গলা চুলকানি ও কাশিতে ভাল মেলে।
আয়ুষ ক্বাথ – শুকনো তুলসী ৪ ভাগ, দারচিনি ২ ভাগ, শুঁঠ ২, গোলমরিচ ১টি ১৫০ মিলিলিটার জলে ৩-৫ মিনিট চায়ের মতো ফোটান। প্রয়োজনে এর সঙ্গে পরিমাণ মতো গুড়, লেবুর রস অথবা কিসমিস মিশিয়ে ২-৩ বার খেলে সর্বপ্রকার কাশিতে উপশম মেলে।
যষ্টিমধু জলে ফুটিয়ে গার্গল করলেও উপশম হয়।
কাশিতে মধু ও লেবুর রস চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
আদার রস এক ভাগ, তুলসীপাতার রস এক ভাগ, বাসকপাতার রস ১ ভাগ, মধু ৩ ভাগ মিশিয়ে খেলে কাশিতে উপকার।
কাশি হলে কাঁচা আমলকী পরিমাণমতো সৈন্ধব লবণের সঙ্গে মিশিয়ে চুষে চুষে খান।
হাফ চামচ আদার রস, ১০-১৫টি তুলসীপাতা, ৩-৫টি গোলমরিচ, ৩-৫টি ছোট এলাচ, ৫-১০টি পুদিনা পাতা, হাফ চামচ দারচিনি গুঁড়ো, এক বা দেড় কাপ জলে পরিমাণমতো গুড় ভাল করে মেশান। তারপর চায়ের মতো গরম করে ৩-৪ বার খেলে অ্যালার্জি, কাশি, সর্দি-জ্বর, সাইনাস, নাক বন্ধে ভাল কাজ করে।
জ্বর হলে কী করবেন?
অগ্নিকুমার রস, মৃত্যুঞ্জয় রস, নবজ্বরারি রস, মহালক্ষ্মীবিলাস রস, শমশোমিনি বটি ইত্যাদি চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করুন।
অ্যাজমার ক্ষেত্রে –
৫-৬টি গোলমরিচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দু’বার খান।
৫-৬টি গোলমরিচ, শুঁঠ ১/২ চামচ, লবঙ্গ ৩-৪টি জলে ৩-৫ মিনিট ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করুন।
কালো কিসমিস, কাজু, লবঙ্গ, গোলমরিচ, যষ্টিমধু সমভাবে নিয়ে মিশিয়ে নিন। তারপর সেটি এক চামচ নিয়ে এক চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ২-৩ বার খান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.