Advertisement
Advertisement
Child Allergies

অল্পেতেই হাঁচি-কাশি, চোখের জ্বালা, আপনার শিশুর অ্যালার্জি নেই তো?

কী করে বুঝবেন কোন অ্যালার্জি?? জানালেন বিশেষজ্ঞ।

Know about Child Allergies, Expert gave important Health Tips

ছবি: সংগৃহীত

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 27, 2024 3:35 pm
  • Updated:August 27, 2024 5:13 pm  

শিশু দুধ খেলে কাঁদে, মাছ খেলে বমি করে কিংবা একটু ঠান্ডা হাওয়া দিলেই হাঁচি-নাক দিয়ে জল পড়ে। এগুলি যে অ্যালার্জি (Child Allergies), তা অনেক বাবা-মায়েরই বুঝতে দেরি হয়। বর্তমানে দূষণের কারণে সমস্যা আরও বাড়ছে। আরও কী কী থেকে অ্যালার্জি শৈশব বিপন্ন করে, তা নিয়েই আলোচনায় পেডিয়াট্রিশিয়ান ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরি

‘অ্যালার্জি’ এই শব্দটা শুনলে অনেকেই মনে করেন হয়তো চুলকানির সমস্যা আছে। কিন্তু সব সময় অ্যালার্জি মানেই গায়ে র‌্যাশ, জ্বালা এমনটা নয়। এটা শরীরের যে কোনও স্থানে, ভিতরে-বাইরে হতে পারে। জ্বর, হাঁচি, কাশি, কিংবা চোখ দিয়ে জল পড়া অথবা শ্বাসকষ্ট ও আরও অনেক কিছুর মাধ্যমেই অ্যালার্জির প্রকাশ ঘটে। আজকাল শিশুদের মধ্যেও অ্যালার্জির প্রবণতা বেড়েছে। তার একটি অন্যতম কারণ হল পারিবারিক হিস্ট্রি, এছাড়া পরিবেশগত কারণ। শিশুদের অ্যালার্জি অনেক সময়ই প্রাথমিক অবস্থায় বোঝা যায় না। তাই শিশুবয়স থেকে তা বাড়তে বাড়তে একটু বড় হলেই জটিল আকার ধারণ করে।

Advertisement
Child-Allergies-3
ছবি: সংগৃহীত

অ্যালার্জি ফেলে রাখলে তা কিন্তু প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে, এটা অনেকেই জানেন না। বিশেষত যে ধরনের অ্যালার্জি খুব দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে যায়, সেগুলি মারাত্মক হয়। এই ধরনের অ্যালার্জিকে বলা হয় অ্যানাফাইলাক্সিস। যে থেকে অনেক সময়েই আমরা খবরে দেখি বা পড়ি কারও চিংড়ি মাছ বা কাঁকড়া খেয়ে হঠাৎ মৃত্যু। এটা এই বিপজ্জনক অ্যালার্জির কারণেই হয়। যা হঠাৎ করেই ট্রিগার করে ও প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। শিশুদেরও এটা হয়। আবার কিছু অ্যালার্জি আছে যা ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। এগুলির ক্ষেত্রে দীর্ঘ চিকিৎসা প্রয়োজন সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে। শিশুবয়স থেকে অ্যালার্জির কোনও রকম লক্ষণ থাকলে সাবধান হওয়া জরুরি।

মারাত্মক হতে পারে খাবার
সাধারণত কিছু খেলেই দেখা যায় অনেকের ত্বকে চুলকানি হচ্ছে, কিংবা শরীরে অন্যান্য কষ্টও হতে শুরু করে। পেটে যন্ত্রণা, হজমের সমস্যা, বমি, ঘনঘন মলত্যাগের প্রবণতা প্রকাশ পায়। কিছু খাবার বিশেষত সামদ্রিক খাবার বা সামুদ্রিক মাছ, দুধ, ময়দা-আটা, বেগুন, ডিম, চিংড়ি ইত্যাদিতে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। কারও আবার কোনও রং মেশানো খাবার খেলে এমন সমস্যা হতে পারে। এগুলো হালকাভাবে নেওয়া কখনই উচিত নয়। কারণ যে কোনও সময়ই তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। খাদ্যনালির অ্যালার্জি ছাড়াও আরও কিছু ধরনের অ্যালার্জি রয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাবধনতা জরুরি। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা দরকার।

[আরও পড়ুন: টোনার নিয়ে এই ৫ ভুল ধারণা আপনারও আছে?]

কী করে বুঝবেন অ্যালার্জি?
অ্যাজমা বা শিশু হাঁপানি – শিশুদের মধ্যে যে হাঁপানি বা অ্যাজমার প্রকোপ লক্ষ করা যায় সেটাও কিন্তু এক রকমের অ্যালার্জি। সাধারণত শ্বাসনালির অ্যালার্জির বহিঃপ্রকাশ হয় অ্যাজমা। শ্বাসকষ্ট, গলা দিয়ে শব্দ হওয়া, কাশি কমতে না চাওয়ার, দৌড়াতে গেলে হাঁফ ধরার লক্ষণ থাকে। সারাজীবন এই কষ্ট নিয়েই চলতে হতে পারে। তবে এর নানা ধরনের চিকিৎসা রয়েছে, সেগুলি সময়ে করলে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। না হলে ঝুঁকি আছে।

চামড়ায় অ্যালার্জি – অ্যালার্জির অন্যতম বহিঃপ্রকাশ হল চামড়ার মধ্যে অ্যালার্জি হওয়া। এটি দুই ধরনের হয়। আর্টিকেরিয়া, এক্ষেত্রে শরীরে বা ত্বকে লাল চাকা চাকা দাগের মতো বেরোয়, চুলকাতে থাকে। আর অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে অ্যালার্জি বেরোতে থাকে। যেগুলো খুব চুলকায়, যাদের ড্রাই স্কিন, তাদের এটা বেশি হয়।

Child-Allergies-4
ছবি: সংগৃহীত

অ্যালার্জি রাইনাইটিস – অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় হঠাৎ হঠাৎ হাঁচি শুরু হয় শিশুর, একটু ঠান্ডা হাওয়া লাগলে বা বাইরের ধুলোতে গেলে হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়ার সমস্যা প্রকাশ পায়। একবার শুরু হলে এক সঙ্গে ১০-১২ টা বা তারও বেশি হাঁচি হতেই থাকে। এর সঙ্গে সব সময় নাক চুলকাবে, সর্দি হবে ইত্যাদি। অনেকের আবার কাশিও হতে থাকে। ভাইরাল ইনফেকশন ছাড়াও এগুলি কিন্তু অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে।

চোখে অ্যালার্জি – এক্ষেত্রে চোখ জ্বালা করে, চুলকাতে থাকে, লাল হয়ে যায়, চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে। কেউ কেউ আবার ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস হয়েছে ভেবে অবহেলাও করেন। কিন্তু অনেক সময় অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসও হতে পারে। সাধারণত ৪-৫ বছর বয়সে শিশুদের এই অসুখ শুরু হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে আরও কম বয়সেে শুরু হতে পারে। জন্মের পর ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্স হতে পারে, এটাও কিন্তু ফুড অ্যালার্জির একটি ধরন।

প্রথমেই করণীয়
অ্যালার্জি হয়েছে এটা বুঝলে তার সঙ্গে সঙ্গে কী থেকে একজনের অ্যালার্জি হচ্ছে সেটাও দ্রুত নির্ণয় করা খুব দরকার। প্রাথমিক লক্ষণ দেখে অনেক ক্ষেত্রে বোঝা গেলেও কিছু ক্ষেত্রে অ্যালার্জি টেস্ট করে তবে বোঝা সম্ভব ঠিক কী থেকে অ্যালার্জি হচ্ছে, তার পর চিকিৎসা শুরু করা হয়। প্রথমে অ্যালার্জেন্স বর্জন করে তারপর ট্রিটমেন্ট শুরু করতে হয়। আর যাদের ক্ষেত্রে ওষুধ খেয়েও অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না তখন ইমিউনোথেরাপি করে চিকিৎসা করতে হবে।

Child-Allergies-2
ছবি: সংগৃহীত

যেগুলো থেকে বেশি হয়
বাইরের যা কিছু: গাছ বা ফুলের পরাগ, পোকামাকড়ের কামড় বা হুল, ধূলিকণা।
ঘরের ভিতরে অ্যালার্জেন্স: পোষা প্রাণীর লোম, ধুলো, ছত্রাক, পোকা-মাকড়।
ক্ষতিকর দাহ্য পদার্থ: সিগারেটের ধোঁয়া, সুগন্ধী, গাড়ির ধোঁয়া।
খাবারে ক্ষতি: সামুদ্রিক খাবার বা মাছ, চিনাবাদাম, ডিম, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার।

 

[আরও পড়ুন: খাবার খাওয়ার পর কতক্ষণ হাঁটা উচিত? জেনে রাখুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement