Advertisement
Advertisement

Breaking News

Child Care

শিশুর অস্থির মন কি স্বাভাবিক? গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানালেন বিশেষজ্ঞ

আলিয়া ভাট, বিল গেটসেরও নাকি এই সমস্যা ছিল।

Know about Attention deficit hyperactivity disorder (ADHD) and Child Care

ছবি: সংগৃহীত

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:November 5, 2024 5:12 pm
  • Updated:November 5, 2024 5:12 pm  

শিশুর অস্থির মন, একটানা মনকে ধরে রাখতে নাজেহাল। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এই নিয়েই অলকেন্দু বোধ নিকেতনে বিশেষ শিশুদের অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনায় জানালেন বিশিষ্ট পেডিয়াট্রিশিয়ান ডা. জয়ন্তী বোস। তাঁর বক্তব্য এই প্রতিবেদনে তুলে ধরলেন পৌষালী দে কুণ্ডু

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট জানিয়েছেন তিনি এডিএইচডি আক্রান্ত। মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসও একাধিকবার জানিয়েছেন, ছোটবেলায় এডিএইচডির কারণে কোনও কাজে বেশিক্ষণ মন দিতে পারতেন না। এমন সমস্যা অল্পবিস্তর আমার-আপনার আশপাশে অনেকেরই থাকে বা আছে। বিশেষত ছোটদের মধ্যেই এমন অন্যমনস্কতার প্রবণতা বেশি।

Advertisement
Child-1
ছবি: সংগৃহীত

কী এই সমস‌্যা?
এডিএইচডির পুরো নাম অ‌্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ‌্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার। ঠিকমতো কোনও কাজে মনোযোগ দিতে না পারা, অতিরিক্ত চাঞ্চল‌্য, অতিরিক্ত তৎপরতা এই সমস‌্যার লক্ষণ। আজকাল প্রায়ই ছোট বাচ্চাদের এডিএইচডি আক্রান্তের কথা শোনা যায়। শিশু ও বয়ঃসন্ধিকালে এডিএইচডির লক্ষণ বেশি প্রকট হয়। বেশিরভাগ সময়ই ‘দুরন্ত’ বলে ভেবে নেন অভিভাবকরা। সব দুরন্ত বাচ্চা এডিএইচডি আক্রান্ত নাও হতে পারে। সাধারণ দুরন্ত বাচ্চার চেয়ে এদের এনার্জি আরও অনেক বেশি হয়। এই এক্সট্রা এনার্জি কমানো জরুরি। তার জন‌্য নিয়মিত ফিজিক‌্যাল অ‌্যাক্টিভিটি, কাউন্সেলিং করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিহেভিয়ারাল থেরাপিও করা দরকার।

সন্তানের মধ্যে অন‌্যমনস্কতা, অতিরিক্ত দুরন্তপনা, লাফালাফি, এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকতে না পারা, মন দিয়ে কোনও কথা না শোনা বা গুছিয়ে কথা বলতে না পারার মতো লক্ষণ দেখলে অবশ‌্যই বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকরা অনেকেই বুঝতে পারেন না, কোন চিকিৎসক এডিএইচডির ট্রিটমেন্ট করবেন। প্রথমেই শিশু-চিকিৎসককে বিষয়টি জানাতে হবে। এর পর শিশুদের বিকাশ নিয়ে কাজ করা মনোবিদ বা চাইল্ড এডুকেটরের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Child Care
ছবি: সংগৃহীত

কেউ এডিএইচডি আক্রান্ত কি না তা বোঝার জন‌্য বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু টেস্ট করেন। তা বেশিরভাগই শিশুকে পর্যবেক্ষণ ও অভিভাবককে তাদের সন্তান সম্পর্কে নানা ধরনের প্রশ্ন করেই তাঁরা জেনে নেন। অনেক বাবা-মা নিউরোর সমস‌্যা ভেবে নিউরোলজিস্টের কাছে শিশুকে নিয়ে যান। আবার অনেক সময় শিশুর বিকাশজনিত সমস‌্যা নিয়ে স্পেশালাইজড নন, এমন সাইকিয়াট্রিস্টের কাছেও যান। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিউরোলজিস্ট বা মনোবিদ দুরন্ত শিশুকে শান্ত করার জন‌্য নার্ভের কড়া ডোজের ওষুধ দেন। যা খেয়ে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে থাকে শিশু। এটা কখনওই কাম‌্য নয়। মনে রাখতে হবে, এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুরা আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই। সঠিক কাউন্সেলিং, থেরাপি করেই এই সমস‌্যাকে অনেকটা বাগে আনা সম্ভব। একটু বড় হলে অস্থিরতা, চঞ্চলতা কমেও যায়।

এডিএইচডির লক্ষণ
ঘন ঘন ভুলে যাওয়া- পাঁচ মিনিট আগের কথা ভুলে যাওয়া। মূলত অন্যমনস্কতা বা স্ট্রেসের মধ্যে থাকার কারণে হয়।
নানা দিকে মন চলে যাওয়া- একটা কাজ করতে বসলে তাতে ঠিকমতো মনোযোগ করতে না পারা। নানা দিকে মন চলে যাওয়া বারবার। পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে না পারায় এডিএইচডি শিশুরা ক্লাসে পিছিয়ে পড়তে পারে। এডিএইচডি শিশুদের উপর বিশেষ নজর দেয়, এমন স্কুলেই এদের ভর্তি করা ভালো। একটানা অনেকক্ষণ এক জায়গায় এরা স্থির হয়ে থাকতে পারে না এবং দীর্ঘ সময় মন দিতে পারে না, তাই টানা অনেকক্ষণ না পড়ে ছোট ছোট ব্রেক দিয়ে পড়তে বসা উচিত।

Child-Care-1
ছবি: সংগৃহীত

অতিরিক্ত চিন্তা করা- কোনও একটি বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত ভেবে চলা ভালো নয়।
টাইম ম্যানেজমেন্টের অভাব- টাইম ঠিকমতো ম্যানেজ করতে না পারা এডিএইচডি-র অন্যতম লক্ষণ। প্রায়ই শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে কোনও কাজ করা। ঠিকমতো কাজ না করে উঠতে পারা। সময় পেরিয়ে যাওয়া।
স্ক্রিন টাইম কমান- যে কোনও শিশুই মোবাইল, টিভি বেশি দেখলে চাঞ্চল‌্য, অমনোযোগিতা বাড়ে। এডিএইচডি শিশুদের এইসব স্ক্রিন থেকে দূরে রাখুন।

অস্বাভাবিক নয়
এডিএইচডি, অটিজম বা এই ধরনের শিশুদের অ্যাবনর্মাল বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় না। স্নায়ুবৈচিত্র‍্যর কারণে এক একজন এক একরকম। ক্লাসে এই শিশুরা পিছিয়ে পড়তে পারে। তা নিয়ে বাবা-মায়েরা হীনমন্যতায় ভুগবেন না। বরং এডিএইচডি শিশুকে স্কুলে বিশেষভাবে গাইড করে দেওয়ার জন্য কোনও টিচার থাকবেন, এমন স্কুলে ভর্তি করাই ভালো।

প্রশংসা করুন
মাঝে মাঝেই এদের রাগ সামলানো কঠিন হতে পারে। অতিরিক্ত বকাঝকা না করে বুঝিয়ে বলুন। ভালো কাজ করলে প্রশংসা করুন, এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। একটানা অনেকক্ষণ মন দিয়ে পড়তে না পারলে ছোট ছোট ব্রেক নিতে দিন। পড়ানোর সময় ছবি দেখিয়ে পড়ালে এদের
মনে রাখতে সুবিধা হয়‌।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement