Advertisement
Advertisement
Health Tips

বর্ষার শাকে লুকিয়ে বিপদ! গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন বিশেষজ্ঞ

যদি খেতেই হয় তাহলে কীভাবে খাবেন?

Is Green Leafy Vegetables safe in Monsoon? Expert Gave important Health Tips

ছবি: সংগৃহীত

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 20, 2024 8:13 pm
  • Updated:August 20, 2024 8:34 pm  

বাঙালির মাছ-ভাতের মতোই শাকভাজা, চচ্চড়িতে বেশ ঝোঁক আছে। যদিও এর অনেক গুণ, কিন্তু বর্ষাকালে মাঠে-ঘাটের শাকপাতায় জীবাণুর বাস। সবুজ শাক, কাদের কতটা খেলে উপকার? বেশি খেলেই বা কী হতে পারে জানাচ্ছেন ডায়েটিশিয়ান অরিত্র খান

সুস্থ ডায়েটের প্রসঙ্গ এলেই সবুজ শাক-সবজি সবার প্রথমে থাকে। মা-ঠাকুমাদের বলতে শোনা যায়, নিত্য ভাতের পাতে শাক খাওয়ার উপকারিতার কথা। কিছু কিছু শাক আবার ওষুধের চেয়েও বিশেষ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর। শুধু কথাতেই নয়, কাজেও শাকের গুণ আছে।
আসলে সবুজ যে কোনও ধরনের শাক ননস্টার্চ পলিস‌্যাকারাইডের মধ্যে পড়ে। এতে চিনির পরিমাণ কম এবং জলে অদ্রবীভূত ডায়েটারি ফাইবার অর্থাৎ খাদ‌্যতন্তুর মাত্রা বেশি থাকে। তাই সবুজ শাকসবজি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, সঙ্গে শরীরকে সুরক্ষিত রেখে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ এবং ক‌্যানসার প্রতিহত করতে সাহায্য করে।

Advertisement
19-greenveggies
ছবি: সংগৃহীত

নানা গুণ –
ভিটামিন সমৃদ্ধ: একাধিক ভিটামিনের উৎস নানা ধরনের শাক। পালংশাক, পুঁইশাক, বাঁধাকপি, মেথিশাক, লালশাক, কলমিশাক, কচুশাক, পাটশাকের মধ্যে উপস্থিত ভিটামিন-এ, ডি, ই, সি, বিটা ক্যারোটিনয়েড, কোলেট, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩, বি-৫, এবং বি-৬ ভালো পরিমাণে থাকে। লুটেন, জিয়াস্যানথিন এবং ক্রিপ্টোজেনথিন হার্ট ও চোখের জন‌্য খুবই ভালো।
উচ্চ খনিজ উপাদান: ননহিম আয়রন, ম‌্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ক‌্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়ামের মতো খনিজগুলোও শাকে থাকে, তাই খুবই উপকারী।

কোন শাকে (১০০ গ্রাম) কত পটাশিয়াম?
কলমি শাক – ৩১২ মি.লিঃ গ্রাম
কুমড়ো শাক – ৩১০ মি.লিঃ গ্রাম
পুঁই শাক – ৫১০ মি.লিঃ গ্রাম
পালং শাকে – ২০৬ মি.লিঃ গ্রাম
ধনেপাতায় – ২৫৬ মি.লিঃ গ্রাম
লাল শাকে – ৪৩১ মি.লিঃ গ্রাম
নটে শাকে – ৬১১ মি.লিঃ গ্রাম

তবে বর্ষায় অস্বস্তি বাড়াতে পারে
বর্ষাকালে শাকপাতা নানা রোগজীবাণুর মূল আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। জলাজমিগুলোতে শাকপাতা জলের মধ্যে ডুবে থাকে, এখানেই বিপত্তি। এতে বিভিন্ন ব‌্যাকটিরিয়া (ইকোলাই, সালমুনেল্লা, সিউডোমোনাস, জ্যান্থমেনাস), অনেকরকম ছত্রাক (অ‌্যাসপারগিলাস, ক্ল‌্যালোডসপরিয়াম) শাকের মধ্যে বাসা বাঁধে। ফলে বেশি শাক খেলে বমি, পেটেব‌্যথা ডায়েরিয়ার শিকার হন বহু মানুষ। বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি এই ধরনের সংক্রমণের। তাই এই সময় মেথি, পালংশাক, ব্রকোলি, ফুলকপি ও বাঁধাকপি শাক থেকে বিরত থাকাই ভালো। যদি খেতেই হয় তাহলে নিম্নলিখিত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

Vegetable
ছবি: সংগৃহীত

[আরও পড়ুন: RG Kar কাণ্ডে ‘নীরব’ অনির্বাণ, পাশে দাঁড়িয়ে দেবালয় বললেন, ‘তাঁর কাজ নয়…’]

এই সময় বুঝে খান
যে কোনও ব‌্যাকটিরিয়া বা পোকামাকড় দূর করার জন‌্য নুন বা ভিনিগার দিয়ে উষ্ণগরম জলে শাক পরিষ্কার করতে ধুয়ে খেতে হবে। আধা সিদ্ধ বা কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া যাবে না। সেটিকে খুব ভালোভাবে সিদ্ধ কিংবা রান্না করে খাওয়াই শ্রেয়।

বেশি শাক খেলে উদরাময় হয়?
মূলত বর্ষাকালে সাবধান থাকতে হবে। এই সময় পুষ্টিকর খাবারও পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে। শাকসবজিতে উপস্থিত অদ্রবীভূত ডায়েটরি ফাইবারের মধ্যে ‘সেলুলোজ’ রয়েছে। ‘সেলুলোজ’ উৎসেচক, যা হজম করতে অসুবিধা হয়, এবং পাকস্থলীতে প্রবেশ করে অন্ত্রের নিচের দিকে কোলনে চলে যায়। বেশি ফাইবারের সঙ্গে ব‌্যাকটিরিয়া, ছত্রাক শরীরে প্রবেশ করলে লোহা, তামা, দস্তা (Iron, Copper, Zinc) এই খনিজ পদার্থগুলোর ব‌্যাঘাত ঘটে
এবং বাড়তে শুরু করে ডায়েরিয়া, বমির মাত্রা।

green-leafy-vegetables-1

অনেকের ধারণা, হয়তো বেশি শাকপাতা খাওয়া মানেই শরীরে আয়রন বাড়বে। শাকপাতার আয়রনকে ননহিম আয়রন বলা হয়। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে এর মধ্যে ফাইটেট অক্সালেট বা খাদ‌্যতন্তুর (Dietary Fiber) উপস্থিতি শরীরের আয়রনকে অন্ত্রে শোষণ করতে বাধা দেয়। কারণ শাকপাতা বা ডায়েটারি ফাইবারের অক্সালেট বা ফাইটেটের সঙ্গে মিশে মলের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। এর ফলে অন্ত্র থেকে শাকপাতার আয়রন রক্তে খুব সামান‌্যই যায়। তাই, বর্ষাকালে এগুলো এড়িয়ে চলাই ভাল।

IBS, আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং কিডনি স্টোনের সমস্যা থাকলে শাকপাতা না খাওয়াই ভালো। যেহেতু এর মধ্যে ডায়েটরি ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকে এবং অক্সালেটের পরিমাণ বেশি থাকে তাই সমস্যা বাড়াতে পারে। বিশেষ করে পালংশাক (আধ কাপ রান্না করা পালংশাক) ৭৫৫ মিলিগ্রাম অক্সালেট থাকে।

IBS এর রোগীদের Low Residue বা Low Fodmap Diet দেওয়া হলে সেখান থেকে শাকপাতা বর্জন করাই শ্রেয়। অনেক সময় শর্টচেন ফ‌্যাটি অ্যাসিড বিশেষত বিউটারেটের উপস্থিতিতে বিভিন্ন গ‌্যাসের আদানপ্রদানের জন‌্য পেটে ব‌্যথা বা কোষ্ঠতারল‌্য হতে পারে।
রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে শাক, ডাঁটা এড়িয়ে চলতে হবে। যে সমস্ত ১০০ গ্রাম শাকে ২০০ মিলিগ্রাম পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে সেগুলো কিডনির রোগী, হাইপার ক‌্যালেমিক রোগীদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযুক্ত নয়।

[আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল ফ্যানকে কাঁধে তোলা মোহনবাগানির মাকে প্রণামের অঙ্গীকার দেবদূতের, চোখে জল শিলাদিত্যর ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement