প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘দেহ পট সনে নট সকলই হারায়।’ জরার হাত থেকে কারও নিস্তার নেই। তবে সে তো একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমা অতিক্রম করার পরে। কিন্তু দিনকাল এমনই পড়েছে জেনারেশন জেড নাকি আগের প্রজন্মের থেকে অনেক বেশি দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে? এমনই গুঞ্জনে ভরে উঠেছে সোশাল মিডিয়া। কিন্তু সত্যিই কি তাই হচ্ছে?
সবচেয়ে আশ্চর্যের, কেবলই আগের প্রজন্ম বা অন্যরা এই অভিযোগ করছেন না। খোদ জেনারেশন জেডই নাকি এমন দাবি করছে! যেমন জর্ডন হাউলেট। ৭০ লক্ষ ফলোয়ার তাঁর। বয়স ২৬। কিন্তু তাঁর দাবি, ঘন দাড়ি, বড় চশমা ও একমাথা চুলে তাঁকে বেশ বয়স্ক মনে হয়। মায়ের সঙ্গে কোথায় বেরলে নাকি অনেকেই মনে করেন তিনি মায়ের বড় দাদা! কোথাও হ্যাং আউটের জন্য যাচ্ছেন বলে পোস্ট করলে মনে করা হয়, তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছেন। তিনি যে মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছেন, সেটা কেউ বুঝতেই পারেন না। এমনকী, এক ৫২ বছরের শিল্পীর কাছে অটোগ্রাফ চাইতে গেলে তিনি মনে করেন জর্ডন তাঁর কিশোর পুত্র বা কন্যার জন্য সই সংগ্রহ করছেন! তাঁর হতাশায় ভরা পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। তার পর থেকেই উঠছে দাবি। সত্যিই নতুন প্রজন্ম কেমন যেন তাড়াতাড়ি বয়স্ক হয়ে উঠছে!
কিন্তু সত্যিই কি তাই? এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা বা গবেষণা হয়েছে বলে জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা এহেন বিষয়ে মুখ খুলেছেন। কী বলছেন তাঁরা? ত্বক বিশেষজ্ঞ পরিণীতা মারিয়া বলছেন, ”জেনারেশন জেড কার্যতই দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে। আর এর পিছনে রয়েছে নানা কারণ।” কেন ডিজিটাল প্রজন্মের এই প্রতিনিধিদের এই হাল?
মারিয়ার মন্তব্য, ”জেনারেশন জেড (Gen Z) কিন্তু ত্বকের চর্চা করছে। আর তা করতে গিয়ে বেশ বাড়াবাড়িই করে ফেলছে তারা। কেননা সোশাল মিডিয়ায় এবিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য মেলে না। ফলে তারা এমনও পণ্য ব্যবহার করে ফেলছে যা তাদের ত্বক সমস্যা সমাধানের জন্য দরকারও নেই। আমার একজন ক্লায়েন্ট রয়েছেন, যাঁর মেয়ের বয়স মাত্র ১১-১২। কিন্তু এখনই মায়ের অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ব্যবহার করায় ত্বকে ভয়ানক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়েছে। দেখতে পাই, তারা এই ধরনের নানা জিনিস ব্যবহার করে, যা তাদের দরকার নেই। কেবল ভালো ময়েশ্চারাইজার কিংবা সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই হয়।”
ইদানীং বেড়েছে দেহচর্চার আগ্রহও। কিন্তু এতেও হচ্ছে হিতে বিপরীতই। কেননা ঠিকঠাক গাইডেন্স মানা হচ্ছে না। যথেচ্ছ স্টেরয়েড বা হরমোন ব্যবহার করে দেহসৌষ্ঠব আনছে জেনারেশন জেডের প্রতিনিধিরা। এর ফল হচ্ছে সুদূরপ্রসারী। তাছা়ড়া অল্প বয়স থেকেই ধূমপান এমনকী নাগাড়ে মদ্যপান করছে অনেকে। খাচ্ছে যথেচ্ছ ফাস্ট ফুড। ফলে স্থূলত্বের সমস্যা ও মেটাবলিক সিনড্রোম গ্রাস করছে অচিরেই। যা ডেকে আনছে অকাল বার্ধক্যের মতো সমস্যা।
এদিকে বছর রয়েক আগেই এক মার্কিন সমীক্ষাতেও দাবি করা হয়েছিল, জেনারেশন জেডের একটা বড় সমস্যা হল স্ট্রেস। তাদের গড় পরিমাণ দশে ৬.১। সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা না হলেও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ও স্থানীয় সমীক্ষা কিন্তু নয়া প্রজন্মের জন্য একটা করুণ ছবিই তুলে ধরছে। যাকে ‘সিঁদুরে মেঘ’ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.