Advertisement
Advertisement

Breaking News

Mosquito

মশার কামড় থেকে অণ্ডকোষে জমছে জল! হাইড্রোসিল বাড়ছে বাংলায়

আশঙ্কার খবর, এই ২০২৫-এ বাংলার ২৪টি জেলায় মহামারীর তকমা পেয়েছে এই অসুখ।

Hydrocele increase in West Bengal due to mosquito bite
Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 24, 2025 8:50 am
  • Updated:March 24, 2025 8:50 am  

অভিরূপ দাস: অণ্ডকোষের চারপাশে তরল জমে গিয়েছে। বসতে গেলে কুঁচকিতে অসহ্য ব্যথা। এসবেরই জন্যই দায়ী একরত্তি মশার কামড় থেকে লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস আর তা থেকেই হাইড্রোসিল বাড়ছে বাংলায়। এসবের জন্যই দায়ী হচ্ছে মশা। স্ত্রী কিউলেক্স একটা-দুটো নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা বলছে, এই ২০২৫-এ এমন হাইড্রোসিলে আক্রান্তের শীর্ষে পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম। পুরুলিয়ার ৩১৭৪ জন, পশ্চিম বর্ধমানের ১১৫৫ জন, বীরভূমের ৯৮০ জন আক্রান্ত এই ধরনের হাইড্রোসিলে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং বঙ্গে নিযুক্ত ‘নেগলেক্টেড ট্রপিকাল ডিজিজ’ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোর্ডিনেটর ডা. প্রীতম রায় জানিয়েছেন, “পৃথিবীব্যাপী তিন ধরনের ফাইলেরিয়াসিস রয়েছে। এর মধ্যে বাংলায় অধিকাংশ আক্রান্ত লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস-এ। এই লিম্ফ্যাটিক ফাইরিয়াসিস থেকেই কারও শরীরে বাসা বাঁধে লিম্ফোডিমা (পা ফুলে যাওয়া)। কারও বা হাইড্রোসিল।”

আশঙ্কার খবর, এই ২০২৫-এ বাংলার ২৪টি জেলায় মহামারীর তকমা পেয়েছে এই অসুখ। যার মধ্যে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম। লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস ঠেকাতে মূলত দু’ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডা. প্রীতম রায় জানিয়েছেন, মাস ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং মরবিডিটি ম্যানেজমেন্ট, ডিজঅ্যাবিলিটি প্রিভেনশন প্রোগ্রাম চলছে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার থেকে দক্ষিণবঙ্গের নন্দীগ্রাম, রামপুরহাটে। যাঁরা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত নিকটবর্তী সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁদের বিনামূল্যে হাইড্রোসিল অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ২০২৪-এ এমন ১৫৯৭ জনের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অসুখের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে লিম্ফ্যাটিক ফাইরিয়াসিস অধ্যুষিত এলাকায় দেওয়া হচ্ছে অ্যালবেনডাজোল, ডায়েথিলকার বেমেজিন সাইট্রেট।

Advertisement

কীভাবে শরীরে বাসা বাঁধে লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস? শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, এটি মশাবাহিত পরজীবীজনিত অসুখ। স্ত্রী কিউলেক্স মশা ফাইলেরিয়াসিসের বাহক, এরা নোংরা জমা জলে জন্মায়। এই মশা কোনও ফাইলেরিয়াসিস আক্রান্তকে কামড়ানোর পর যদি অন্য সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায়, তখনই ছড়ায় এই অসুখ। ঠিক যেভাবে ছড়ায় ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া। স্ত্রী কিউলেক্স মশার শরীরে পরজীবীর লার্ভা বা মাইক্রোফাইলেরিয়া যখন থার্ড স্টেজ লার্ভায় পরিণত হয়, তখন সেই মশা কাউকে কামড়ালে তাঁর শরীরে ফাইলেরিয়াসিস সংক্রামিত হয়।

এই পরজীবী মানুষের শরীরে রক্তের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মূলত কুঁচকি, হাত, পা, অণ্ডকোষ, মহিলাদের স্তনের লিম্ফ নোড বা লসিকা গ্রন্থিতে বাসা বাঁধে। তা থেকেই পা ফুলে যায়। দেখা যায় হাইড্রোসিল। ডা. প্রীতম রায় জানিয়েছেন, জ্বর, শরীরে ব্যথা, মাথা ধরা, কুঁচকি, বগল, হাত-পায়ের কিছু অংশ লাল হয়ে ফুলে ওঠে। এইগুলোই লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিসের উপসর্গ। এমন উপসর্গ অন্য অনেক অসুখেই দেখা যায়। তবে রোগী যদি লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস অধ্যুষিত এলাকা থেকে আসেন তবে দ্রুত তাঁর চিকিৎসা শুরু করা উচিত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement