Advertisement
Advertisement
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

৯ মিনিট প্রদীপের আলোয় কী এমন জাদু? জানুন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মতামত

আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রেও এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে।

How will it work to light candle for few minutes, know Ayurveda's explaination
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 5, 2020 2:08 pm
  • Updated:April 5, 2020 4:31 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: সাতদিন আগে বেলেঘাটা আইডি থেকে ফিরেছেন অবিনাশবাবু। সত্তর ছুঁই ছুঁই শরীর যত না খারাপ, তার চেয়ে অনেক বেশি খারাপ মন। গত সাতদিনে উধাও হয়েছে ঘুম। সারাক্ষণ চোখের সামনে যেন ঘুরপাক খাচ্ছে ভাইরাসের ছবি, তাড়া করছে মৃত্যুভয়। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে কাঁটা। এঁদের মনের ভয় মুছিয়ে চাঙ্গা করবে কে? কে বের করে আনবে অবসাদের চক্রব্যূহ থেকে? গভীর অসুখে আক্রান্ত গোটা সমাজ। ওষুধ কোথায়? তবে আজ রাতে প্রধানমন্ত্রীর অকাল দীপাবলিই এই রোগের ওষুধ হয়ে উঠতে পারে তাঁদের জীবনে। এমনই দাবি আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের।

শুক্রবার সকাল ৯টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি আহ্বান জানান, রবিবার অর্থাৎ আজ রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য বৈদ্যুতিক আলো নিভিয়ে মোম, প্রদীপ জ্বালান। করোনা যুদ্ধে মহাশক্তি জাগরণের পথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে পারবে দেশবাসী। এ নিয়ে সবমহলেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ সমর্থন করছেন তো কেউ বিরোধিতা। আজ রাত ৯টা ঠিক কী হয়, তা দেখতেও মুখিয়ে রয়েছেন সবাই। তবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র কিন্তু বলছে, এ নিছকই খেয়ালবশত কোনও ঘোষণা নয়। এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ধূমপায়ীরাই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি, পরিসংখ্যানে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য]

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, এই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন মহামারি মোকাবিলায় চিকিৎসারই একটা অঙ্গ। যাকে বলা হয় – সত্ত্বা চিকিৎসা। এতে আখেরে গোটা বিশ্বের মনোজাগতির প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, যা করোনা যুদ্ধে সবাইকে শক্তি জোগাবে।শ্যামবাজারের জে বি রায় হাসপাতালের অধ্যাপক ডাঃ পুলককান্তি করের মতে, আয়ুর্বেদে চিকিৎসার একটা ভাগ সত্ত্বা বজায়। অহিতকর ঐন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয় থেকে মনকে নিবৃত্ত করার চেষ্টাই সত্ত্বা বজায়। যখন মন কোনও বিশেষ কারণে ব্যাকুল হয়, বিষাদগ্রস্ত হয়, তখন রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সেখান থেকে মনকে সদর্থক দিকে আনার প্রক্রিয়াই সত্ত্বা চিকিৎসা। ‘চড়ক সংহিতা’র ১১ নং অধ্যায়ের ৫৪ নং শ্লোকে এমনই উল্লেখ রয়েছে বলে জানালেন তিনি।

আবার ‘সুশ্রুত সংহিতা’র ৬ নং অধ্যায়ের ২০নং শ্লোকেও একই কথা আছে। সেখানে অবশ্য ‘শান্তিকর্ম’ কথাটি ব্যবহার করেছেন। বলা হয়েছে, রোগের উপশমে ‘প্রায়শ্চিত্ত’র মতো ওষুধ খুবই কার্যকরী। তাতে লেখা – ‘প্রায় নাম তপঃ প্রোক্তং চিত্তং নিশ্চয় উচ্চতে’। মনের কোনও বিষয়ে সংকল্প গ্রহণ বা নিশ্চয়করণ রোগ প্রতিরোধের সহায়ক। অর্থাৎ আয়ুর্বেদের মূল বক্তব্য, আলোকশিখা হল অন্ধকার থেকে ফিরে আসার দ্যোতক।

Meditation

শুধু আয়ুর্বেদ নয়, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও এই কর্মসূচিকে বৈজ্ঞানিক বলে মানছেন। আইএমএ’র প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ কেকে আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই প্রদীপ জ্বালানোর কর্মসূচিকে ‘প্রিন্সিপ্যাল অফ কালেক্টিভ কনশাসনেস’-এর অঙ্গ বলা যেতে পারে। ৫ শতাংশ লোক যা ভাবছেন, তা ৯৫ শতাংশ মানুষ করবেন। কোয়ান্টাম তত্বের মূল সুরও এটাই। সবাই মিলে একসঙ্গে সংকল্প করে যদি শরীরে S2 রিসেপটরকে চাঙ্গা করতে পারা যায়, তাহলে রিসেপটরে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করতে পারবে না।

[আরও পড়ুন: সাবান বনাম স্যানিটাইজার, জেনে নিন করোনা ভাইরাস বধে কী বেশি কার্যকর]

মডার্ন মেডিসিনের চিকিৎসকদের একাংশ অবশ্য একে চিকিৎসার অঙ্গ বলে মানতে নারাজ। কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি অধিকর্তা ডাঃ প্রদীপ কুমার সাহার বক্তব্য, “লকডাউনের সময়ে মানুষ খুব হতাশগ্রস্ত থাকেন। একটা ভয় কাজ করে। আমি করোনা আক্রান্ত হলে কী হবে?গোটা পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মরে যাব না তো? এই অবসাদ থেকে বেরতে সাহায্য করবে এ ধরনের সমবেত সংকল্প। তবে এটা চিকিৎসা নয়।” 

আরেক চিকিৎসক ডাক্তার দেবাশিষ ঘোষের মতে, “সমবেত সংকল্প মনের জোর বাড়ায়। অবসাদ কমায়। যা আখেরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে থাকা ন্যাচারাল কিলার সেল (NK সেল) মাত্রা বাড়িয়ে শরীরকে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে। ভয় পেলে শরীরে এমন কিছু হরমোনের নিঃসরণ ঘটে, যা NK সেলের কার্যকারিতাকে কমিয়ে দেয়। তাই এ ধরনের কর্মসূচির ভাল দিক নেই, তাও বলা যায় না।”  

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement