Advertisement
Advertisement

Breaking News

Health Tips

ঘরে-ঘরে জ্বর, ডেঙ্গু-টাইফয়েড নাকি ইনফ্লুয়েঞ্জা, বুঝবেন কীভাবে?

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানালেন বিশেষজ্ঞ। সতর্ক থাকুন।

How to identify different types of fever, Expert gave useful health tips

ছবি: সংগৃহীত

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:July 23, 2024 4:24 pm
  • Updated:July 23, 2024 4:24 pm  

এখন পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে-ঘরে জ্বর হচ্ছে। স্কুল থেকে অফিস ছুটির কারণে এক নম্বরে, জ্বরে কাবু। তবে আবহাওয়া বদলের মামুলি জ্বর নয়, আড়ালে ডেঙ্গু, টাইফয়েড কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপই বেশি। এই সময়টাই এমন, জীবাণুরা মাথাচাড়া দেয়। এবছর অনেক আগেই শুরু হয়েছে। কী কী করণীয়, তা নিয়েই আলোচনায় মেডিকা সুপারস্পেশালটি হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়

বৃষ্টি শুরু হল কি হল না! গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে না পেতেই গা পুড়ছে জ্বরে। পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে-ঘরে এখন একটাই অসুখ। ১০৩, কখনও আবার ১০৫ পর্যন্তও উঠছে তাপমাত্রা। বয়স্করাই শুধু নয়, শিশুদেরও খুব জ্বর হচ্ছে। আরও চিন্তা বাড়িয়েছে বাড়িতে কারও একটা হলে তার থেকে ছোট-বড় সকলেরই হচ্ছে জ্বরটা। তাহলে কী করোনা? অনেকেই আতঙ্কিত। আসলে প্রথমদিকে মরশুম পরিবর্তনের জ্বর ভেবে অনেকেই তেমন গা করছিলেন না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে খুব বেড়েছে এমন রোগীদের সংখ্যাটা। তিন থেকে চার রকমের জ্বর নিয়ে রোগীরা আসছেন। জলবাহিত সংক্রমণ (টাইফয়েড, হেপাটাইটিস), মশাবাহিত সংক্রমণ (ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া), রেসপিরেটরি ইনফেকশন (ইনফ্লুয়েঞ্জা, কোভিড)। কার যে কী হচ্ছে সেটা প্রথমেই বোঝা মুশকিল। প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর, তারপর ধীরে ধীরে আরও সমস্যা প্রকাশ পাচ্ছে।

Advertisement
Fever
ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক সপ্তাতে ১০-২০ শতাংশ বেড়েছে ডেঙ্গু-টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা। প্রচুর হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জার জ্বর। জ্বর বা পেটের অল্পসল্প গন্ডগোল হচ্ছে, কারও আবার হঠাৎ করেই ধুম জ্বর আসছে। উঠতেই পারছে না, সঙ্গে সর্দি-তীব্র কাশি। থাকছে মাথার যন্ত্রণাও। এবছর বর্ষার শুরুতেই একেবারে তেড়েফুঁড়ে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে ভাইরাল, ব্যাকটিরিয়াল ফিভার। তাই এখন থেকেই সতর্ক হোন। গত তিন চার বছরের চেয়ে এবছরের এইসময়ে নানা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যাটাও প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি।

প্রথমে বুঝতে হবে জ্বরের কারণ। প্রথম দিকে লক্ষণ সবক্ষেত্রেই এক রকম, অর্থাৎ জ্বর আসবে। তবে কী করে বুঝবেন ডেঙ্গু নাকি ইনফ্লুয়েঞ্জা? কিংবা টাইফয়েড নয়তো! তফাত আছে কিছু ক্ষেত্রে।

টাইফয়েডের লক্ষণ
টাইফয়েডের ক্ষেত্রে প্রথমে হালকা জ্বর দিয়ে শুরু হয়, তারপর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ে।
এক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে পেটের গন্ডগোল থাকবে। কোষ্ঠকাঠিন‌্য কিংবা ডায়েরিয়া হয়।
বমি হতে পারে, তবে শুরুতেই হবে না। কয়েকদিন পর শুরু হবে।
টাইফয়েডে প্লেটলেট কাউন্ট খুব দ্রুত পড়ে না। প্লেটলেট দেওয়ার দরকারও পড়ে না।
এই জ্বরে লিভারের কার্যক্ষমতা দুর্বল হয়। ক্ষুদ্রান্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই দীর্ঘদিন ভুগলে পেটে ব্যথা, পেটের মধ্যে রক্তপাত, মল কালো বর্ণের হয়ে যেতে পারে।
টাইফয়েডের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা দরকার। কারণ এটি ‘সালমোনেল্লা টাইফি’ ব্যাকটিরিয়া বাহিত অসুখ।
টাইফয়েড আইজিএম টেস্ট, ব্লাড কালচার ও ওয়াইডাল টেস্ট (Widal Test) করে রোগ নির্ণয় করতে হবে।

fever-child
ছবি: সংগৃহীত

[আরও পড়ুন: বিপজ্জনক লেন্স, আর একটু হলেই দৃষ্টি হারাতেন অভিনেত্রী জাসমিন! আপনার ঝুঁকি কতটা?]

ডেঙ্গুর লক্ষণ
ডেঙ্গু হলে প্রথমেই ধুম জ্বর আসে। তার সঙ্গে গা-হাত-পায়ে অসহ্য ব্যথা, মাথাব্যথা, গায়ে র‌্যাশ বেরনোর লক্ষণ প্রকাশ পাবে।
বমি হওয়ার প্রবণতা প্রকাশ পায়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগীদের টাইফয়েডে টেস্ট করলেও ফলস পজিটিভ রিপোর্ট আসার সম্ভাবনাও থাকে।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকির, প্লেটলেট কাউন্ট হঠাৎ করেই কমে যায়, শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্লিডিং শুরু হয়। ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম হয়ে প্রাণসংশয়ও ডেকে আনতে পারে।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রেও লিভারের সমস্যাও হতে পারে।
এই জ্বর প্রতিহত করতে ফ্লুইড বা পানীয় অতি জরুরি।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে প্রথম তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে ডেঙ্গু এনএসওয়ান টেস্ট ও পাঁচদিন পরে ডেঙ্গু আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্ট করা দরকার।

Dengue
ছবি: সংগৃহীত

ইনফ্লুয়েঞ্জা বা করোনা হলে
জ্বর থাকবে সঙ্গে সর্দি-কাশি। অল্প শ্বাসকষ্টও হতে পারে।
জ্বরের সঙ্গে অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন আছে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা বাড়িতে একজনের হলে তা থেকে অন্যদের হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই এখন জ্বর হলে বাড়িতে বয়স্ক, অল্পবয়সিদের থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
শুধু জ্বর সঙ্গে সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্ট না থাকলে ডেঙ্গু, টাইফয়েডের কথা মাথায় রাখতে হবে।

এই সময়টা মানতে হবে
জ্বর হলে, সঙ্গে খেতে অসুবিধা, গায়ে র‌্যাশ, শ্বাসকষ্ট থাকলে সাবধান হতে হবে।
খুব ক্লান্তি বা ঝিমুনিভাব প্রকাশ পেলে তা স্বাভাবিকভাবে নেবেন না।
এই সময় দু-তিনদিন টানা ১০২-১০৪ বা তার বেশি তাপমাত্রায় জ্বর থাকলে ডেঙ্গু ও টাইফয়েডের টেস্ট করে দেখা অত্যন্ত জরুরি। তবে অবশ্যই প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। তবে স্টেরয়েড একেবারেই নয়।
এই সময় ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপটাও বেড়েছে। তাই জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকলে সাবধান হোন।
শিশু বা কোমর্বিডিটি আছে এমন রোগীদের কারও জ্বর হলে তার কাছাকাছি না যাওয়াই ভাল। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করুন।
এই সময় জলবাহিত রোগ বেড়েছে। তাই মিনারেল ওয়াটার খান, প্রয়োজনে ফোটানো জল পান করলে ভাল।
কাটা ফল, শাকসবজি, স্যালাড এড়িয়ে চলুন। যেকোনও জিনিস খাওয়ার আগে খুব ভাল করে ধুয়ে বা রান্না করে সিদ্ধ খাবার খেলেই ভাল।
মশার কামড় এড়াতে মশারি টাঙিয়ে শোয়া কিংবা মসকুইটো রিপেলেন্ট কয়েল, ক্রিমের ব্যবহার জরুরি।
বাড়ির আশপাশে কোথাও জল জমতে দেখলে আগে পরিষ্কার করুন, ডেঙ্গুর প্রকোপ এতেই বেশি।
ডেঙ্গুর মশা সকাল ও সন্ধেবেলায় বেশি কামড়ায়। এইসময়টা গা-হাত-পা ঢাকা জামাকাপড় পরাই ভাল।
নিজে নিজে চিকিৎসা না করে জ্বরের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলুন।
সবশেষে একটা কথাই বলব, জ্বর অসুখ নয়, অসুখের লক্ষণ। আড়ালে কারণটা উদ্ধার করাই আসল ব্যাপার। সঠিক সময়ে ওষুধ পড়লে, সব ঠান্ডা। তাই দেরি করবেন না।

fever-web
ছবি: সংগৃহীত

[আরও পড়ুন: ক্যামেরার সামনেই উদ্দাম যৌনতা! ‘বিগ বস’-এর ‘অশ্লীল’ ভিডিওয় ক্ষিপ্ত শিব সেনা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement