ফাইল চিত্র
মহিলাদের জন্য কলা খাওয়া কতটা নিরাপদ? জবাব দিলেন ডায়েটিশিয়ান রোজি সাহা। জানালেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কলা (Banana), এমন একটা ফল যেটা সকাল থেকে রাত, ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার সব পাতেই থাকে। সবার মুখে কলার গুণমান নিয়ে গুণগান শোনা যায়। কলার মধ্যে শরীরের জরুরি পুষ্টির অনেকটাই বর্তমান। এটি ভীষণভাবে সহজলভ্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। চটজলদি আমাদের খিদে মেটাতে সক্ষম। তবে এতকিছুর পরও একটা কিন্তু রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় নাকি দেখা গিয়েছে, পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম যাঁদের রয়েছে তাঁদের কলা খাওয়া উচিত নয়।
প্রথমেই বলি, পিসিওএস হল এমন একটা অসুখ সেখানে মহিলাদের শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে। যার ফলে মহিলাদের ওভারি বা ডিম্বাশয় বড় হয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেখানে ছোট ছোট সিস্টও হয়। এই অসুখের কারণ হল, ওবেসিটি বা ওজন বৃদ্ধি, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, এক্সারসাইজ বা কায়িক শ্রমের অভাব ইত্যাদি। এসব থেকে মুক্তির একটি উপায় হল নিত্য ফুড হ্যাবিট বা রোজের খাদ্যাভ্যাস ঠিক করা।
মিথ অ্যান্ড ফ্যাক্টস
কলা ওজন বাড়ায়, যা পরোক্ষভাবে পিসিএএসের সমস্যা ডেকে আনতে পারে। এই তথ্য কিন্তু পুরোপুরি সত্য নয়। এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এছাড়া ফাইবারের অন্যতম উৎস কলা। যার মধ্যে সলিউবল ও ইনসলিউবল ফাইবার থাকে। যা কিন্তু ওজন বাড়ায় না, বরং কমাতে সাহায্য করে।
কলাতে সুগার বা কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে। এটাও মিথ। কলাতে আসলে থাকে প্রাকৃতিক সুগার। এই প্রাকৃতিক সুগার সমৃদ্ধ কলা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এবং কলার মধ্যে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, এতে উপস্থিত ফাইবার হজম করতে সাহায্য করে।
কাঁচকলা না পাকাকলা?
ফল হিসেবে পাকা কলা, সবজি হিসেবে কাঁচা কলা অনেকেই খান। কাঁচকলায় ফাইবারের পাশাপাশি স্টার্চ থাকে। যা ইনস্যুলিন সেনসিভিটি বাড়ায় অর্থাৎ ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্সের প্রবণতা কমে।
কটা কলা ভাল?
কলা ভাল, কিন্তু মেপে বুঝে খেতে হবে। পরিমানে কম। রোজ বেশি কলা নয়। যেহেতু কলায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমান বেশি ও ক্যালোরি বেশি সেই জন্য সপ্তাহে ১দিন বা দু’দিন অন্য ফলের পরিবর্তে কলা খাওয়া যেতে পারে। তবে কলার স্মুদি বা সেক বানিয়ে না খাওয়াই উচিত।
যাঁদের পিসিওএস রয়েছে, তাঁরা বুঝে কলা খান। এই ফল ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স ঘটায়। তাতে কী হয়? ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স হল শরীরে ইনস্যুলিন তৈরি হচ্ছে কিন্তু শরীর তা ব্যবহার করতে পারে না। যাঁদের ওজন বেশি বা ওবেসিটি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়। তাই পিসিওস থাকলে রোজ কলা খেলে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্সের প্রবণতা বড়ে। তবে কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে ভেবে বেশি কলা খাবেন সেটাও ঠিক নয়। পিসিওএস থাকলে সপ্তাহে ১-২ দিন ডায়েটে কলা রাখা যেতে পারে। কিন্তু তার বেশি না খাওয়াই ভাল।
কলার পুষ্টিগুণ এক নজরে
১০০ গ্রাম ছোট কাঁঠালি কলা
কার্বোহাইড্রেট – ৯৯.৬ গ্রাম
প্রোটিন – ৫ গ্রাম
ফ্যাট – ২.৮৮ গ্রাম
ক্যালোরি – ১০৭ ক্যালোরি
ফাইবার (সলিউবল ও ইনসলিউবল)-২.২১ গ্রাম
মিনারেল – ম্যাগনেশিয়াম
সূত্র – ইন্ডিয়ান ফুড কম্পোজিশন টেবিল, ২০১৭
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.