Advertisement
Advertisement

Breaking News

CPR

জীবনদায়ী CPR, কারও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কীভাবে বাঁচাবেন? জানালেন বিশেষজ্ঞ

প্রায় ৯২.৫ শতাংশ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় বাড়িতেই।

How CPR helps during Cardiac arrest, Doctor's advice | Sangbad Pratidin
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:November 5, 2023 8:34 pm
  • Updated:November 5, 2023 8:36 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধরুন অফিসে কাজ করছেন। পাশের সহকর্মী দুম করে পড়ে গেলেন। কাছে গিয়ে দেখলেন নাড়ির গতি অত্যন্ত ক্ষীণ। শ্বাস-প্রশ্বাস মৃদু। বা বোঝাই যাচ্ছে না। এই অবস্থায় কিন্তু যে কারও মৃত্যু হয়ে যেতে পারে। হঠাৎ করে এমন অবস্থার পিছনে দায়ী ‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’। এই অবস্থায় প্রতিটা সেকেন্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ। তখন ‘সিপিআর’ বা কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন জীবনদায়ী একটা পদ্ধতি। জানাচ্ছেন ডা. সুনীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সম্প্রতি সমীক্ষার তথ্য, প্রায় ৯২.৫ শতাংশ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় বাড়িতেই। তারমধ্যে মাত্র ১.৩ শতাংশ রোগী উপযুক্ত সময়ে সঠিক সিপিআর পান তার আশেপাশের লোকজনের দ্বারা। সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে সিপিআর শুরু হলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বা তিনগুণ হতে পারে, তাই এই সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা খুবই জরুরি।

Advertisement

CPR-এর ধাপগুলির মধ্যে রয়েছে:

– জরুরি পরিষেবাগুলিতে কল করুন
– শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা সেটা দেখতে হবে।
– কম্প্রেশন: ৩০ টি কম্প্রেশন বা চাপ প্রদান করুন
– শ্বাসনালী: যাতে রোগীর শ্বাসনালী খুলে যায় সেটা দেখতে হবে।
– তার জন্য বুক ভরে শ্বাস নিন। নিজের মুখ লাগিয়ে সবটুকু হাওয়া রোগীর বুকে পাঠিয়ে দিন।
– হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা না হাওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যান।

কীভাবে করবেন বিস্তারিত জানুন
সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে বাইরে থেকে কোন লক্ষণ দেখা যায়না। যা দুর্ঘটনা ঘটার তা আকস্মিক ভাবেই ঘটে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে তৎক্ষণাৎ রোগীকে সিপিআর দেওয়া প্রয়োজন। প্রথমে অজ্ঞান মানুষটিকে কোনও সমতল জায়গায় শুইয়ে দিতে হবে। তার পোশাক যতটা সম্ভব হালকা করতে হবে। এবার আপনার একটি হাতের উপর আরেকটি হাত রেখে সব আঙুলগুলি মুড়ে ফেলুন। এবার জ্ঞানহীন মানুষটির বুকের ঠিক মাঝে দুটি হাত রেখে তালুর উপরের অংশ দিয়ে এমনভাবে চাপতে হবে যাতে অন্তত দু-ইঞ্চি নিচে নামে। এখানে একটা বিষয়ে মনে রাখতে হবে, কনুই যেন সোজা থাকে। যত দ্রুত সম্ভব এমনভাবে বুকের ঠিক মাঝখানে বার বার চাপ দিতে হবে। এইভাবে গুনে গুনে ঠিক ৩০ বার চাপ দিতে হবে।

এখন প্রশ্ন, কতবার এমনভাবে চাপ দিতে হবে? উত্তর- ১৫০বার। সময় কিন্তু ২মিনিট। ১৫০ বার করার পর একটু থামতে হবে। যদি আপনার সঙ্গে কেউ থাকেন তিনি তখন করবেন। এখানেই কিন্তু দায়িত্ব শেষ নয়। এবার ‘রেসকিউ ব্রিদিং’। রোগীর প্রাণ বাঁচাতে সিপিআর-এর মতো জরুরি এই পদ্ধতি। বুক ভরে শ্বাস নিন। এরপরে রোগীর মুখ হাঁ করে মাথা সামান্য উপর দিকে তুলে তার মুখের সঙ্গে নিজের মুখ লাগিয়ে সবটুকু হাওয়া রোগীর বুকে পাঠিয়ে দিন। পাঁচ সেকেন্ডের ব্যবধানে দু’বার এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এবার দেখুন রোগীর বুক উঠছে কি না! যদি দেখেন রোগীর বুক উঠছে তাহলে বুঝবেন সিপিআর-এ সাড়া দিচ্ছে রোগী। নয়তো ফের আগের মতো আবার সিপিআর চালিয়ে যেতে হবে।

এবার জানতে হবে, সিপিআর কতক্ষণ চলবে? যতক্ষণ না রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হচ্ছে ততক্ষণ। এরমধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স ও কৃত্রিমভাবে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থাও চলে আসবে। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, এমন অবস্থা হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। রোগীকে যত দ্রুত সিপিআর দেওয়া হবে, তত দ্রুত রোগীর জ্ঞান আসবে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে সিপিআর দেওয়া শুরু হলে তারপরবর্তী সময় রোগীকে ডিফিব্রিলেটর বা বৈদ্যতিক শক দিলে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৫০ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ হয়ে যায়।

এই রিস্কফ্যাক্টগুলি যাদের থাকবে তাদের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা দরকার।
প্রতিটি অসুখের কিছু না কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর থাকে। ঠিক সেরকম ভাবেই সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে। সেগুলি হল-
১) ব্লাড সুগার বা ডায়বেটিস।
২) উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার।
৩) রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি।
৪) যেকোনো প্রকারের নেশা , যেমন – প্যাসিভ স্মোকিং এবং অ্যালকোহলের নেশা এই রোগের জন্য মারাত্মক।
৫) স্লিপ অ্যাপনিয়া সমস্যা যাদের রয়েছে তাদের এই অসুখের একরাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল।
৬) ক্রনিক কিডনি ডিজিজ।
৭) পারিবারিক হিস্ট্রি থাকলে।

প্রিয়জনের মৃত্যুর পর আর শত কষ্ট পেলেও কিছু করার থাকে না। আমজনতার মধ্যে উপযুক্ত সচেতনতার অভাবের কারণে এদেশে প্রতিবছর ১০ লাখ মানুষের সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু হচ্ছে। তাই কিছু কিছু জরুরী পদক্ষেপ মেনে চলা আবশ্যক বলেই মত ডা. সুনীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। 
Dr. Sunip Banerjee
MBBS, MD, DM (PGI), FSCAI,
FESC, FCSI, FICP
KOLKATA HEART LUNG CENTER

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement