দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিন। তাই ব্রাশের পাশাপাশি সময়মতো দাঁতের স্কেলিং করাতে হবে। পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক ডা. অনুরাধা দে। লিখছেন শ্রীজা ঘোষ৷
আমরা মনে করি যে নিয়মিত দু’বেলা ব্রাশ করলেই বোধ হয় দাঁত ভাল থাকবে। কিন্তু দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এটুকুই যথেষ্ট নয় তা অনেকেরই অজানা। পূর্ণবয়স্কদের জন্য অন্তত বছরে একবার করে দাঁতের স্কেলিং অত্যন্ত জরুরি। তবেই প্রাণখোলা হাসিতে দাঁতে মুক্তোর মতো স্বচ্ছতা ঝরে পড়ে।
স্কেলিংয়ের কারণ-ধরন
দাঁত ব্রাশ করলে অনেক সময় সঠিকভাবে তা পরিষ্কার হয় না। ফলে দাঁতের ফাঁকে খাবার জমে থাকে। তার উপর জমা হতে থাকে লালা। লালায় রয়েছে মিনারেল, যা জমতে থাকলে ‘ক্যালকুলাস’ বা ‘টারটার’ তৈরি হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে বৃদ্ধি হতে পারে ব্যাকটেরিয়া। তাই সঠিক সময়ে টুথ স্কেলিংয়ের মাধ্যমে এগুলি পরিষ্কার করে নিলে মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে ও এবং দাঁত দেখতেও উজ্জ্বল থাকে।
কখন দরকার:
প্রত্যেকর উচিত বছরে অন্তত একবার স্কেলিং করে দাঁত পরিষ্কার করে নেওয়া। অনেকের দাঁতের মাঝে এবড়োখেবড়ো ফাঁক থাকে। সেইক্ষেত্রে পাথর জমার প্রবণতা বেশি থাকে। তাঁদের প্রতি ছ’মাস অন্তর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টুথ স্কেলিং করা দরকার। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, কোন বয়স থেকে স্কেলিং করাবেন? স্থায়ীভাবে দাঁত উঠে গেলে অর্থাৎ ১২-১৩ বছর বয়সের পর থেকেই কিন্তু স্কেলিং করানো উচিত। আবার অনেকের একটির উপর আর একটি দাঁত গজাতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পিছনের দাঁতে ব্রাশ ঠিকমতো না পৌঁছলে খাবার জমতে থাকে। তাঁদের জন্য মাঝে মাঝে স্কেলিং করা দরকার। তবে পাথরগুলি পরিষ্কার হয়।
মানতে হবে:
দাঁত স্কেলিং তো করাবেন। কিন্তু এরপর যত্ন নেবেন কীভাবে? সচরাচর স্কেলিং করানোর পর চিকিৎসকই বলে দেন কীভাবে যত্ন নেবেন। দু’বেলা নিয়মিত ব্রাশ করার পাশাপাশি জরুরি ইন্টার ডেন্টাল ফ্লসিং করা। এছাড়াও দু’টি দাঁতের মাঝখানে যে ত্রিকোণাকৃতি স্থান থাকে তাতে খাবার জমতে জমতে পাথরের আকার নেয়। এই জমে থাকা খাবার পাথরে রূপান্তরিত হবার আগে অর্থাৎ যখন সেটি প্লাক (Plaque) হিসাবে থাকে তখনই ‘Inter Dental Flossing’-এর মাধ্যমে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। যাঁদের আবার দাঁতের মাঝখানে ফাঁক বেশি থাকে তাঁদের চিকিৎসকরা অনেক সময় ‘ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ’ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ধূমপান বা তামাক মুখে রাখার বদভ্যাস যাঁদের থাকে তাঁদের দাঁতে ছোপ দেখা যায়। ‘টুথ স্কেলিং’-এর মাধ্যমে সেই ছোপ তুলে ফেলা সম্ভব। কিন্তু স্কেলিংয়ের পর অতি অবশ্যই এই বদভ্যাস কমিয়ে ফেলা উচিত যাতে পরবর্তীকালে দাঁতের ক্ষতি না হয়।
এই ‘টুথ স্কেলিং’-এর প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে গেলে যে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয় তা হল মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া। ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হয়ে মাড়িতে সংক্রমণের সম্ভাবনাও থাকে। এছাড়াও মুখে দুর্গন্ধ হয়। খাবার জমা হতে হতে দাঁতের গোড়া আলগা হয়ে যেতে পারে। ফলে দাঁত পড়েও যেতে পারে। কাজেই স্কেলিং করালে দাঁত ভাল থাকে।
পরামর্শে: ৯৮৩০০ ৮০১৭৪
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.