ফাইল ফটো
গৌতম ব্রহ্ম: করোনা ঠেকানোর দাওয়াই আগেই দিয়েছিল হোমিওপ্যাথি। এবার এই মারণ ভাইরাসের মোকাবিলায় ঘরোয়া টোটকার হদিশ দিল আয়ুর্বেদ। আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০। খালি পেটে দিনে দু’বার পরপর তিনদিন খেতে হবে এই হোমিওপ্যাথি ওষুধ। ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি’(CCRM)-এর ‘সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ড’ সম্প্রতি এমনই পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রের আয়ুষ মন্ত্রককে।
তাঁদের দাবি, এই ওষুধ শুধু করোনা নয়, সর্দিকাশির জন্য দায়ী যাবতীয় জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ঘাড়ের উপর এসে পড়া বিপদের ঘরোয়া প্রতিষেধকের হদিশ দিয়েছেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরাও। শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্র পীঠের অধ্যাপক ডা. প্রদ্যোৎবিকাশ কর মহাপাত্র জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস মূলত শ্বাসযন্ত্রের উর্ধ্বনালিকায় ছোবল দেয়। এর মোকাবিলায় সাধারণত অ্যান্টি অ্যালার্জিক প্রয়োগ করা হয়। যাতে অ্যালার্জি কমলেও সংক্রমণ রুখতে ভরসা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই। আয়ুর্বেদ ওষুধ কিন্তু জ্বালা, যন্ত্রণা, কষ্টের সঙ্গে সংক্রমণকেও কমায়। প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে রোগীকে জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়ের রসদ জোগায়।
যেমন লক্ষ্মীবিলাস বড়ি। আয়ুর্বেদের এই ধ্রুপদী ওষুধ সংক্রমণকে একই জায়গায় আটকে রাখে। ফলে তা শ্বাসযন্ত্রের উর্ধ্বনালি থেকে নিম্ননালি পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। তাছাড়া যে সব নালি সংক্রমণের দরুণ বন্ধ হয়ে যায়, তা-ও খুলে দেয়। তবে হোমিওপ্যাথি হোক বা আয়ুর্বেদ, সবারই বক্তব্য, এই সব প্রতিরোধক নিতে হবে ভাইরাস হামলার আগে। সেই সঙ্গে দরকার কিছু সাবধানতা। যার মধ্যে অন্যতম, খাবার গরম করে খাওয়ার অভ্যেস। বিজ্ঞান বলছে, ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় জীবাণু সাধারণত বাঁচতে পারে না। কাজেই গরম খাবার খেলে বিপদ অনেকটাই ঠেকানো যায়। তাছাড়া বারবার হাত ধুতে হবে, খাওয়ার আগে তো বটেই।
প্রদ্যোৎবাবুর পর্যবেক্ষণ, নোভেল করোনার মোকাবিলায় ঘরোয়া টোটকাও কার্যকারী। তবে তা নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে। তিন-চারটে নিমপাতা, দশ ফোঁটা করে তুলসির রস দু’বার। দেড় গ্রাম করে যষ্ঠীমধুর গুঁড়ো খাওয়া যেতে পারে। এগুলো সবই ইমিউনোমডিউলেটর অর্থাৎ প্রতিরোধ ক্ষমতাবর্ধক। প্রদ্যোৎবাবুর সাফ কথা, করোনা ভাইরাস আকাশ থেকে পড়েনি। অন্য গ্রহ থেকেও আসেনি। এগুলো ছিলই। কিন্তু, আগে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ছিল বলে জীবাণু সেভাবে কাবু করতে পারত না। নতুন পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক ঠিকই। তবে, সনাতনী চিকিৎসাশাস্ত্রও তৈরি তার সম্ভার নিয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.