অভিরূপ দাস: বয়স ত্রিশ পেরিয়েছে সবে। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে প্রেসারের ওষুধ খাচ্ছেন। তবু নামার নাম নেই বেড়ে চলা রক্তচাপের (Blood Pressure)। রোগী ভাবছেন, প্রাত্যহিক কাজের চাপেই এহেন অবস্থা তাঁর। যদিও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প বয়সে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার কারণ শুধুমাত্র টেনশন নয়। মহাধমনী সরু হয়ে গেলেও এমনটা হতে পারে। যেমনটা হয়েছে হাওড়ার বাসিন্দা শান্তুনু দত্তর।
বছর পঁয়ত্রিশের শান্তুনুর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল মারাত্মক। ওষুধ খাচ্ছিলেন মুড়ি-মুড়কির মতো। কিন্তু রক্তচাপ সেই তিমিরেই। শেষমেশ দেখা যায় পায়ের দিকে পালস অত্যন্ত ক্ষীণ। তখনই বাড়ে সন্দেহ। সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাফি (CT Angiography) করে দেখা যায় মহাধমনী সরু হয়ে গিয়েছে শান্তুনুর।
শরীরের সর্ববৃহৎ ধমনী হল অ্যাওর্টা (Aorta) বা মহাধমনী। যা হৃৎপিন্ডের বাম প্রকোষ্ঠ থেকে শুরু হয়ে তলপেট পর্যন্ত চলে যায়। এমন অসুখ বংশগত। মূলত যেখান থেকে হাতের শিরা উপশিরা বেরোয় ঠিক তার নীচের অংশে মহাধমনী সরু হয়ে যায়। এই কারণে শরীরের নীচের দিকের পালসগুলো ভালো পাওয়া যায় না। এমনসব কারণেই বেড়ে যায় রক্তচাপ। শহরের এক বেসরকারী হাসপাতালে শান্তুনুর অস্ত্রোপচার সফল।
সে অপারেশন টিমের কার্ডিওলজিস্ট আফতাব খান জানিয়েছেন, অল্প বয়সে উচ্চ রক্তচাপ দেখা গেলেই কাজের চাপ ভেবে উড়িয়ে দেবেন না। মহাধমনী খুব সরু হয়ে গেলে আচমকা রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এ অস্ত্রোপচারে সামিল আর এক কার্ডিওলজিস্ট বিকাশ মজুমদারের কথায়, দ্রুত সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। শান্তুনুর যে অসুখ হয়েছিল চিকিৎসা পরিভাষায় তার নাম কোআর্কটেশন অফ অ্যাওর্টা।
১০ হাজারের মধ্যে মাত্র ৪ জনের এমন অসুখ দেখা যায়। আগে মহাধমনী মেরামত করতে পুরো বুক কেটে অস্ত্রোপচার করা হতো। অত্যাধুনিক প্রক্রিয়ায় এন্ডোভাস্কুলার পদ্ধতিতে স্রেফ থাইয়ের উপর ছোট্ট ফুটো করে একটা সরু তার প্রবেশ করানো হয়। সরু মহাধমনীর মধ্যে স্টেন্ট বসিয়ে তাকে চওড়া করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.