ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: মাত্র ৫২ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন (Shane Warne)। “মেদ ঝরানোর মিশন” শুরু করেছিলেন আগেই। তারপরও কেন হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন চ্যাম্পিয়ন এই স্পোর্টসম্যান? এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। স্পোর্টসম্যান হলেই যে তাঁর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই, এমনটা কিন্তু নয়। শহরের বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা তেমনটাই জানাচ্ছেন।
আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ একাধিক হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হার্টে রক্তনালিগুলি হঠাৎ করে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এমনটাই জানাচ্ছেন এস এস কে এম হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক শংকর মণ্ডল। বিশিষ্ট পালমোনোলজিস্ট রাজা ধর জানান, একটা সময়ের পর খেলোয়াড়রা শরীরের উপর তেমন একটা নজর দেন না। কিন্তু প্রত্যেকের শরীরের খেয়াল রাখা প্রয়োজন। শেন ওয়ার্নের মৃত্যু যেন আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও বয়স হয় না। তা স্পোর্টসম্যানদের ক্ষেত্রেও হতে পারে। এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
১) বংশগত কারণে এমনটা হতে পারে। পরিবারের কারও হার্টের সমস্যা আছে কিনা তা জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় বাবা কিংবা মায়ের পরিবারে হার্টের প্রবলেম থাকলে তা সন্তানদের ক্ষেত্রেও সমস্যার কারণ হয়।
২) হার্টে ব্লকেজ থেকে এমনটা হতে পারে। পালমোনারি আর্টারিতে কোলেস্টরল জমতে শুরু করে। কোলেস্টরল গুড এবং ব্যাড প্রকৃতির হয়। ব্যাড কোলেস্টরলের জেরে ধমনির পেশিগুলি সংকুচিত হয়ে যায়। এতে ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছায় না।
৩) অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ফলেও হৃদরোগে সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান শরীরে বিষের মতো কাজ করে। অল্প বয়সে তেমন কোনও ক্ষতি হবে না, এমন ভুল ধারণা অনেকেরই থাকে। আর এতেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। আর স্পোর্টসম্যানদেরও এ বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
৪) বর্তমান জীবনের ইঁদুর দৌড়ে অনেকের নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না। আর এতেই যত সমস্যা। শরীরের নাম তো আর মহাশয় নয় যে যা সওয়াবে তা সইবে। অনিয়মিত খাওয়া, জাঙ্ক ফুড শরীরকে ভিতর থেকে ঝাঁজরা করে দেয়। হার্টেও এর প্রভাব পড়ে। হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাই সংযমী হওয়া প্রয়োজন। সংযম এবং সতর্কতা থাকলেই জীবনের ইনিংস হবে লম্বা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.