Advertisement
Advertisement
অ্যান্টিবায়োটিক

মুড়ি মুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন? অচিরেই ঘনিয়ে আসছে বিপদ

৪০ শতাংশ রোগী ডাক্তার না দেখিয়েই ওষুধ খান। 

Having too much antibiotic cause harmful for your health
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:September 14, 2019 12:42 pm
  • Updated:September 14, 2019 12:42 pm  

অভিরূপ দাস:  জ্বর-সর্দি-কাশি বা পেটখারাপ। মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা বা গলায় যন্ত্রণা। এমন সব সাধারণ উপসর্গে ওঁরা ডাক্তারের কাছে ছোটেন না। সোজা ওষুধের দোকানে গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে গলাধঃকরণ করেন। কেউ কেউ গুগল সার্চ করেও দেখে নেন কোন রোগের কোন দাওয়াই! একবারও ভাবেন না, এর পরিণতি কতটা ভয়ানক হতে পারে! 

[আরও পড়ুন:  প্রতি বছর ভারতে ২৪ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব, কীভাবে জানেন? ]

পঁয়ত্রিশ বছরের নিচে এমন চল্লিশ শতাংশ রোগীর এহেন অপরিণামদর্শী কাণ্ডকারখানা দেখে শিউরে উঠেছেন দেশের তাবড় তাবড় চিকিৎসকরাও। তাঁদের বক্তব্য, এতে যে শরীর শুধু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে উঠছে তা নয়, ভবিষ্যতে এদের শরীরে আর অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না। শহরে ‘হসপিটাল ইনফেকশন ইন দ্য পোস্ট অ্যান্টিবায়োটিক এরা’ শীর্ষক এক সম্মেলনে এসেছিলেন দিল্লির এইমস থেকে পদ্মশ্রী প্রাপ্ত চিকিৎসকরা। ডা. রামন সারদানা জানালেন, অল্প বয়সিরা অসুস্থ হলে আর ডাক্তার দেখাচ্ছেন না। সরাসরি চলে যান ওষুধের দোকানে। অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেতে শুরু করেন। জানেনও না যে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই সেরে যেত তাঁর অসুখ। এই যে সামান্য হাঁচি-কাশিতেও মুড়ি মুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক। এতেই ক্রমশ ঘনাচ্ছে বিপদ। শরীরের ভেতরের জীবাণুগুলো চরিত্র বদল করতে থাকে। তারা অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে লড়াই করার সামর্থ্য অর্জন করে। এক সময় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করেও আর জীবাণুগুলোকে মারা যায় না। অকালেই চলে যায় ওই যুবক। চিকিৎসা পরিভাষায় একেই বলা হয় ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স।’

Advertisement

আইন রয়েছে প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনওভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যাবে না। রয়েছে শাস্তির বিধানও। কিন্তু নজরদারি করার লোক কই। আইসিইউতে ঢুকে গিয়েছে। তাহলে তো আর বেরোতে পারবে না। প্রিয়জন সম্বন্ধে এমন চিন্তাভাবনা প্রায়শই দেখা যায় হাসপাতালে। সমীক্ষাও বলছে, ভরতি হওয়া প্রতি একশো জনের মধ্যে দু’জনের শরীরে অসুখ ছড়ায় হাসপাতালের আইসিইউ থেকে। ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজিস্ট ডা. ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরির কথায়, আইসিইউ থেকে যে সমস্ত সংক্রমণ ছড়ায় তার মধ্যে মারাত্মক নিউমোনিয়া আর রক্তবাহিত সংক্রমণ। এই দু’ধরনের সংক্রমণে যাঁরা আক্রান্ত হন তাঁদের মধ্যে দশ শতাংশেরই মৃত্যু হয়। দেখা গিয়েছে এই মৃত্যুর পিছনেও অল্প বয়সে যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কারণই দায়ী।

[আরও পড়ুন: ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু! কারণ শুনলে আপনি চমকে উঠবেন ]

ডা. চৌধুরির মতে, পঞ্চান্নয় পৌঁছে রোগী যখন আমাদের কাছে আসেন তাঁর আগের বিশ বছর উনি ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে গিয়েছেন। ফলে শরীর অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত ব্যবহারে ভোঁতা হয়ে গিয়েছে রোগ মারার অস্ত্র। কার্যত একারণেই সামনে এসেছে এক চমকপ্রদ তথ্য। দেখা গিয়েছে, সরকারি হাসপাতালে যাঁরা ভরতি হন তাঁদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেসরকারি হাসপাতালের রোগীদের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ? “সরকারি হাসপাতালে সাধারণত গ্রামের প্রান্তিক মানুষরা চিকিৎসা করান। এঁরা খুব বেশি অ্যান্টিবায়োটিক খান না। ছোটবেলা থেকে জ্বর-সর্দি হলে প্রাকৃতিক উপায়ে তা সারান। অ্যান্টিবায়োটিক কম খান বলে এদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজও করে চটজলদি।” মৃত্যু ঠেকাতে তাই অবিলম্বে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে রাশ টানতে বলছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে আইসিইউতে মাস্ক, গ্লাভস এবং প্রতি রোগীর জন্য আলাদা আলাদা স্টেথোস্কোপ ব্যবহার করার নিদান দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement