Advertisement
Advertisement
ল্যাকটোজ

পেটে দুধ সয় না, কী করবেন? পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞ

দুধ না খেলে হবে না ভাল ছেলে!

Having Milk is problemetic for your child? Know here what to do
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 4, 2019 7:55 pm
  • Updated:June 4, 2019 7:55 pm

যদিও ভাল ছেলে হওয়ার হাজার চেষ্টা করেও অনেককেই দুধ থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়। খেতে ভাল লাগলেও বাদ সাধে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স নামক অসুখ। পেটের এই রোগের কারণ ও আরোগ্যের উপায় জানালেন পিয়ারলেস হসপিটালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. পাপিয়া খাওয়াশ। শুনলেন মণিদীপা কর

অসুখ চিনুন
এই অসুখ মূলত পৌষ্টিকতন্ত্রের সমস্যা। ল্যাকটেজ নামক উৎসেচকের অভাবে ল্যাকটোজ অর্থাৎ দুগ্ধ শর্করা হজম হয় না। দুধ খেলেই তাই বদহজম হয়ে যায়। একেই বলে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স।

Advertisement

রকমফের?
মূলত দু’রকমের হয়। টাইপ ১- ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। এটা জন্মগত ত্রুটি। অর্থাৎ, ল্যাকটোজ পরিপাককারী উৎসেচক ল্যাকটেজ তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়ায় স্থায়ী ও জন্মগত ত্রুটি থেকে যায়। ফলে বাকি জীবনেও দেহে শুদ্ধ শর্করা পরিপাককারী উৎসেচক তৈরি হয় না। যার ফলস্বরূপ দুধ খেলেই তার শর্করা অংশ অপাচ্য থেকে যায়। তবে আশার কথা, টাইপ ১ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স খুব অল্প সংখ্যকের মধ্যেই দেখা যায়। যাঁরা এই অসুখে আক্রান্ত তাঁদের সারা জীবনের মতো দুগ্ধ শর্করা খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
টাইপ ২- সেকেন্ডারি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। তুলনামূলকভাবে এটা অনেক বেশি দেখা যায়। পেটে সংক্রমণ হলে ল্যাকটেজ উৎসেচক তৈরি হয় না। আবার দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার ফলে ক্ষুদ্রান্ত্রের দেওয়ালে অবস্থিত ল্যাকটেজ ক্ষরণকারী কোষগুলোর মৃত্যু হয়। ফলে ল্যাকটেজের অভাবে দুধ খেলে বদহজম, বমি লেগেই থাকে। তবে এটা সাময়িক সমস্যা। অ্যান্টিবায়েটিক বন্ধ হয়ে গেলে ধীরে ধীরে ফের অন্ত্রের কোষগুলির পুনর্গঠন হয়। উৎসেচকগুলির স্বাভাবিক ক্ষরণ শুরু হয় ও দুগ্ধ শর্করা হজমে শরীর উপযোগী হয়ে ওঠে।

কেন হয়?
দুধ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ সুষম খাবার। এর শর্করা অংশ অর্থাৎ ল্যাকটোজে ক্ষুদ্রান্ত্রে ল্যাকটেজ উৎসেচকের উপস্থিতিতে গ্লুকোজ ও গ্যালাক্টোজে ভেঙে যায়। কোনও কারণে দেহে ল্যাকটেজ ক্ষরণ না হলে ল্যাকটোজ ক্ষুদ্রান্ত্রে হজম না হয়ে বৃহদন্ত্রে চলে যায়। সেখানকার ব্যাক্টেরিয়ারা ল্যাকটোজকে ভেঙে ফ্যাটি অ্যাসিড, কার্বন ডাই অক্সাইড ও হাইড্রোজেন তৈরি করে। ফলে পেট ফাঁপে, গ্যাসের সমস্যা হয়। এছাড়াও, অ্যাসিডিটি ও পেটখারাপ হয়।

চিকিৎসা
প্রথম শৈশবে টাইপ ১ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স একটি জন্মগত ত্রুটি। অর্থাৎ জন্মের সময়ই অন্ত্রে ল্যাকটেজ ক্ষরণকারী কোষগুলিতে ত্রুটি থাকে। ফলে শরীরে কখনই ল্যাকটেজ তৈরি হয় না। এটি স্থায়ী ত্রুটি। জন্মের পর এই সমস্যা বেশ সংকটে ফেলতে পারে। কারণ জন্মের পর থেকে প্রথম ছ’মাস শিশুর একমাত্র খাবার দুধ। প্রধানত মাতৃদুগ্ধ। সেক্ষেত্রে শিশুকে দুধের সঙ্গে বাইরে থেকে ল্যাকটোজ উৎসেচক ওষুধ হিসাবে খাওয়ানো হয়। এইভাবে জোড়াতালি দিয়েই টাইপ ১ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সে আক্রান্ত শিশুর জীবনের প্রথম পর্বে পুষ্টির জোগান দেওয়া হয়। কোনও চিকিৎসায় এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। আশার কথা একটাই, এই সমস্যা তেমন পরিচিত নয়।

অন্যদিকে, সেকেন্ডারি ল্যাকটোজে ইনটলারেন্স সাময়িক সমস্যা। পেটের যে সংক্রমণের কারণে দুগ্ধ শর্করা পরিপাকের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় সবার আগে তার চিকিৎসা জরুরি। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেও বেশ কিছুদিন পর্যন্ত দুধ সহ্য হয় না। বাচ্চার বয়স ছ’মাস পেরিয়ে গেলে সাময়িকভাবে দুধ খাওয়ানো বন্ধ রাখা যায়। কারণ ততদিনে বাচ্চা দুধ ছাড়াও অন্য খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যায়। ফলে অল্প কিছুদিন দুধ বন্ধ থাকলে পুষ্টির সমস্যা হয় না। দু’বছর পর্যন্ত অন্য দুধ বন্ধ করলেও মায়ের দুধ খাওয়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়। মায়ের দুধও সহ্য না হলে বাইরে থেকে ল্যাকটোজে উৎসেচক খাওয়ানো হয়। যা মায়ের দুধ হজমে বিশেষ সাহায্য করে। বাড়তি সহায়ক হিসাবে প্রো-বায়োটিক দেওয়া যেতে পারে। প্রো-বায়েটিক ল্যাকটোজ ক্ষরণকারী কোষগুলির পুনর্গঠনে সাহায্য করে।

বিকল্প পুষ্টি
রোগ পুরোপুরি না সারা পর্যন্ত দুধ বন্ধ রাখতে বলা হয়। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হওয়ার ছ’মাস পরেও যদি দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার সহ্য না হয় তাহলে দুধের বিকল্প হিসাবে লো ল্যাকটোজ ফর্মুলা, সয়া মিল্ক দেওয়া হয়। এছাড়াও দই বা ছানা অল্প অল্প করে খাওয়া যেতে পারে। দইয়ের ল্যাকটোব্যাসিল ল্যাকটেজ ক্ষরণকারী কোষের দ্রুত আরোগ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। দুধ বন্ধ করলে খাবারের সঙ্গে ক্যালসিয়ামের জোগান দেওয়ার কথা মাথায় রাখা জরুরি। কারণ খাবারের মধ্যে ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস দুধ। সেক্ষেত্রে মাছ মাংস, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ফল-সবজি বেশি করে খাওয়া জরুরি। রোগী নিরামিশাষি হলে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement