গৌতম ব্রহ্ম: কোনওটা শনির দৃষ্টি থেকে বাঁচতে, কোনওটা পরিবারের মঙ্গল কামনায়। আবার কোনওটা সংসারে সমৃদ্ধি বাড়াতে। দু’হাতের দশ আঙুলে আংটির ছড়াছড়ি অনেকেরই। গোমেত, নীলা, মুক্তা, পোখরাজ। জ্যোতিষের পরামর্শে বাকি থাকে না কিছুই। কিন্তু করোনার ছোবল আটকাতে কোনও আংটি আছে কি? জ্যোতিষীদেরও সরাসরি উত্তর নেই। উলটে এই আংটি থেকেই ছড়াতে পারে সংক্রমণ। বারবার স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়েও আংটির ভিতরে জমে থাকা জীবাণু বের করা যায় না। কখনও কখনও তো সাবানও থেকে যায় আংটির ফাঁকে। খাওয়ার সময় যা পেটে চলে যেতে পারে। যা ডেকে আনতে পারে বিপদ। ফলে আপনার ভালবাসার আংটিই হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আংটিগুলি এই সময় খুলে রাখলেই সবচেয়ে ভাল। না পারলে, বাইরে থেকে এসেই সেগুলিকে খুব ভালভাবে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিতে হবে। শুধু কি আংটি, একইরকমভাবে তাবিজ-কবজ থেকেও ছড়াতে পারে সংক্রমণ। এই তালিকায় রয়েছে হাতের ঘড়িও। চিকিৎসকরা তাই জানাচ্ছেন, যখন করোনায় আক্রান্ত গোটা বিশ্ব, যেখান থেকে খুশি সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে এই সময়টা আংটি, ঘড়ি তাবিজ-কবজ এগুলি না পরাই ভাল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, নোভেল করোনা ভাইরাস আংটির বিভিন্ন ধাতু, রত্ন, মণিমাণিক্যে কতটা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে, সে ব্যাপারে সর্বজনগ্রাহ্য গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়নি, এ কথা ঠিক। কিন্তু সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকেই বলা যায়, ধাতব আংটিতে যথেষ্ট পরিমাণে জমে থাকে ধুলো ও বিভিন্ন ধরনের জীবাণু।
যাঁরা গ্লাভস পরে বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন না, তাঁদের হাতের আঙুলে থাকা আংটিতে এই পরিস্থিতিতে করোনার মতো জীবাণু ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই। তাই সেই আংটি পরা হাতে আমরা যদি খাই বা বাড়ির লোকজনকে খাবার পরিবেশন করি বা রান্নাবান্না করি, তাহলে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, ‘‘আংটির নিচে আকছারই সাবানের টুকরো জমে থাকতে দেখা যায়, স্নানের সময় আংটি আমরা ভালভাবে পরিষ্কার করি না বলে। বাড়ির বাইরে বেরোলে আংটির নিচে এই জমে থাকা সাবানের টুকরোগুলিই হয়ে ওঠে জীবাণুদের সেরা আস্তানা।”
বিশেষজ্ঞরা তাই জানাচ্ছেন, তাবিজ-কবজ থেকে হয়তো খাওয়ার সময় সরাসরি জীবাণু মুখে যায় না। কিন্তু সেখান থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। তাই আংটি, তাবিজ-কবজ থেকে এই সময়টা দূরে থাকতে বলছেন তাঁরা। আরেক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “করোনা মোকাবিলায় হাত ধোয়ার উপর সব থেকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় ভাল করে হাত ধুলেও আঙুলের আংটি পরিষ্কার হয় না। তাতে জীবাণু জমে থাকতে পারে। তা থেকেই সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়। একইরকম হয় ঘড়ির ক্ষেত্রেও। তাই এগুলো এই সময় না পরাই ভাল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.