ছবি: সংগৃহীত
শুধুমাত্র শীতপ্রধান জায়গায় নয়, এখন এ রাজ্যের মানুষের মধ্যেও মোমো জায়গা করে নিয়েছে। পুজোতেও বাঙালির পছন্দের স্ট্রিটফুডের তালিকায় এই খাবারের স্থান উপরের সারিতে। কিন্তু সব মোমো কি খাওয়া নিরাপদ? গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানালেন ডায়েটিশিয়ান রোজি সাহা।
মোমো-র জনপ্রিয়তার গল্প জানতে গেলে, সময়ের চাকায় চোখ রেখে একটু পিছনের দিকে ফিরে তাকাতে হবে। ছয়ের দশকে তিব্বতি বিদ্রোহের পর, তিব্বত থেকে অনেক মানুষ ভারতে চলে আসেন। তখন ভারতে তাঁরা নেপাল, ধর্মশালা, লাদাখ, ভুটান, সিকিম, দার্জিলিং, বিভিন্ন জায়গায় বসতি স্থাপন করেন। জীবনযাপনের জন্য তাঁরাই ভারতে প্রথম মোমো খাওয়া শুরু করেন। তাই তিব্বতকেই মোমো-র জন্মস্থল হিসাবে মানা হয়।
আবার এই মতও রয়েছে, চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, নেপালের কাঠমাণ্ডু উপত্যকায় এই খাবারের প্রচলন শুরু হয়। নেপালের প্রাচীনতম ভাষা হল নেওয়ারি। এই ভাষায় ‘মোমো’ শব্দের মানে হল বাষ্পে বা স্টিমে রান্না করা। বর্তমানে স্ট্রিট ফুডের মধ্যে মোমো অত্যন্ত প্রচলিত একটি খাবার। স্বাস্থ্যকরও বটে। তাই ডায়েট যাঁরা করেন তাঁদের স্ট্রিট ফুডের মধ্যে প্রথম পছন্দ এটি। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমরা যে মোমো খাই, সেটা কিন্তু ময়দা দিয়ে তৈরি। ময়দা হল রিফাইন্ড ফ্লোর অর্থাৎ পরিস্রুত এই ময়দায় গ্লুটেনের মাত্রা বেশি।
তা বলে কি মোমো খাবেন না? অবশ্যই খাবেন। স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় রাখতে গেলে এই মোমোর বাইরের আস্তরণ হতে হবে গমের আটার। কেন জানেন?
আটায় উচ্চ ফাইবার ও পুষ্টিগুণ: আটায় উপস্থিত উচ্চমাত্রার ফাইবার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ফাইবার খাবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। ময়দার তুলনায়, আটায় ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে যা মোমোকে আরও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এছাড়া আটায় রয়েছে ভিটামিন বি, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, এবং সেলেনিয়াম যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয়।
লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ: আটার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) কম হওয়ায় এটি ধীরে ধীরে রক্তে শর্করা বাড়ায়। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা আটার তৈরি মোমো খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ার ঝুঁকি কম থাকে। ময়দা, উলটোভাবে, উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত হওয়ায় রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়াতে পারে, যা স্বাস্থ্যসমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
প্রোটিনের মাত্রা বেশি
ময়দার চেয়ে আটায় তৈরি মোমোতে প্রোটিনের মাত্রা বেশি। ১০০ গ্রাম আটায় ১২ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে, যা ময়দার তুলনায় বেশি। ভালো প্রোটিনের উৎস আটার মোমো।
স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণ:
আটায় কম ক্যালোরি ও বেশি ফাইবার থাকার ফলে এটি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা কমায়। এই গুণটি স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ময়দার মোমোর তুলনায় আটার মোমো খেলে কার্যকর হতে পারে। তবে সেদ্ধ মোমো বেশি উপকারী, ভাজা নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.