Advertisement
Advertisement
Durga Puja 2024

পুজোর আনন্দযজ্ঞে কাটবে অবসাদ, মন ভালো রাখার টিপস বিশেষজ্ঞের

নির্লিপ্ততা মন ও শরীর দুয়ের জন্যই ক্ষতিকর।

Durga Puja 2024: Here is how Festive Happiness of Durga Puja can boost you Mental health, expert gave tips
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:September 20, 2024 6:16 pm
  • Updated:September 20, 2024 6:50 pm

ভালো লাগছে না, মন ভালো নেই এই সব অজুহাতে উৎসবের দিনে মুখ ফিরিয়ে রাখা মোটেই ভালো নয়। এই নির্লিপ্ততা, মন ও শরীর দুয়ের জন্যই ক্ষতিকর। আনন্দযজ্ঞে আপনিও শামিল হোন। যা থেরাপির মতো কাজ করে মনের কষ্ট দূর করতে। উৎসবকে উৎসবের মতো গ্রহণ করুন। বিশ্লেষণে সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. দেবাঞ্জন পান। লিখেছেন পৌষালী দে কুণ্ডু

বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় সময়টা এসে গিয়েছে। তাই মনখারাপ, স্ট্রেস, অবসাদ-ডিপ্রেশনকে এবার ছুটি দিন। উৎসব (Durga Puja 2024) থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখবেন না। যে কোনও কারণেই হোক না কেন অনেকেই উৎসবের দিনগুলোতেও নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। জীবনে যত বড় সমস্যাই আসুক, পুজোর কটা দিন মন খারাপ নয়। কেউ ঠাকুর দেখতে যেতে না পারলেও ক্ষতি নেই। গতে বাঁধা কাজ না করে, রোজের একঘেয়ে রান্না করা খাবার না খেয়ে অন্য রকম কিছু করুন। নিজের মতো করে আনন্দ করুন। ভালো লাগছে না, মন ভালো নেই এই সব অজুহাত আসলে মানসিক অসুখের লক্ষণ। উৎসব মনের মলিনতা দূর করে। মনকে হালকা করে, আরও সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। বয়স্ক বা অল্প বয়সি সকলের জন্য উৎসবই তো মন ভালো করার সেরা ওষুধ।

Advertisement
Durga Puja
ছবি: সংগৃহীত

বয়স্ক বা অল্প বয়সি সকলের জন্য উৎসবই তো মন ভালো করার সেরা ওষুধ।
আসলে উৎসব (Festival) মানেই আনন্দ। আর আনন্দের সঙ্গী হয়ে আসে ভালো কিছু হওয়ার আশা। যা মানুষকে স্বপ্ন দেখায়। ইতিবাচক হতে সাহায‍্য করে। পুজোয় সবাই একত্রিত হওয়ায় একাকীত্ব দূর হয়। যাঁরা নিজেকে বাকিদের থেকে দূরে রাখতে চান, তাঁরা চেষ্টা করুন মানুষের সঙ্গে মিশতে। দেখবেন, বোরডম কেটে যাবে। মন ভালো রাখতে সামাজিক বন্ধন তৈরি হওয়া খুব জরুরি। উৎসব আসলে একটা থেরাপি, সেটাকে উপভোগ করুন, আনন্দ, উল্লাসে সাড়া দিন, নির্লিপ্ত থাকবেন না। মন ও শরীর দু-ই হালকা রাখতে দুঃখ ভুলে থাকুন এই কটা দিন।

রিচার্জ অক্সিটোসিন
এমনিতেই এখন শহর, মফস্বলের মানুষ নিউক্লিয়ার পরিবারে একা থাকে। সমাজবদ্ধভাবে না বেঁচে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ রাখে। মনে রাখা উচিত, ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রচুর বন্ধু, প্রিয়জনের সঙ্গে চ‍্যাট করলে অক্সিটোসিন হরমোন ক্ষরণ হয় না‌। মানুষের মুখোমুখি হয়ে কথা বললে, তার স্পর্শ, সান্নিধ্য পেলে তবেই অক্সিটোসিন নিঃসৃত হয়। যার জেরে মন ভালো হয়ে যায়। দুর্গাপুজোয় আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা, আড্ডার যে পর্ব চলে তাতে মস্তিষ্কে প্রচুর পরিমাণ অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়। দেখা গিয়েছে, কোনও ওষুধ নয়, একমাত্র উৎসবই পারে এই হাই ভলিউম অক্সিটোসিন রিলিজ করাতে।

Durga Puja
ফাইল ছবি

জমে যাক আড্ডা
অনেকেই বয়স্ক বা অসুস্থ হওয়ায় বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন না। এঁদের বলব, একলা, অন্ধকারে নিঝুম চুপচাপ থাকবেন না। চাইলেই বাড়ির পরিবেশকে আপনারাও উৎসবমুখর করে দিতে পারেন। টিভি চালিয়ে দেখতে থাকুন কোথায় কেমন প‍্যান্ডেল ও ঠাকুর হয়েছে। টিভিতে ঠাকুর, জনজোয়ার, মানুষের উন্মাদনা, সাজগোজ। এভাবে দেখতে দেখতে অনেকেই উৎসবের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যান, তাতেও মনটা ভালো লাগে। বাড়ির সদস্যরা কে, কেমন সেজে ঠাকুর দেখতে যাচ্ছেন তা দেখলে, ঘুরতে যাওয়া নিয়ে আলোচনা করলেও পুজোর সঙ্গে কিছুটা নিজেকে জড়িয়ে ফেলা যায়। পুজোয় বাড়িতে নানারকম নতুন নতুন রান্না করাটাও উৎসবের একটা অংশ। এই সময়ে বাইরে থাকা ছেলেমেয়েরা বা আত্মীয়রা বাড়ি আসেন। এঁদের প্রিয় পদগুলো রাঁধুন। সুন্দর করে সাজিয়ে নতুন নতুন পদ খেতে দিন। জমিয়ে খান ও খাওয়ান। আমাদের মস্তিষ্ক নতুনত্ব পছন্দ করে। পাশাপাশি সুস্বাদু, সুদৃশ্য খাবার মনকে আনন্দ দেয়।

প্রিয় পদগুলো রাঁধুন। সুন্দর করে সাজিয়ে নতুন নতুন পদ খেতে দিন।
এমনিতেই মানুষের জীবন থেকে হাসি, ঠাট্টা, মজা উধাও হয়ে গিয়েছে। পুজোয় হুল্লোড় সেগুলোকে ফিরিয়ে আনে। আমাদের মন ভালো রাখতে ডোপামিন, সেরোটোনিন, এন্ডরফিন হরমোন নিঃসরণ জরুরি। আর এগুলো রিচার্জের জন্য দিন কয়েক হইহুল্লোড়ে মেতে ওঠাও খুব জরুরি। এই সময়ে আমাদের হাঁটাচলা, মুভমেন্ট বেড়ে যাওয়ায় ডোপামিন, সেরোটোনিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যা মন ও স্বাস্থ্যের পক্ষে মঙ্গল। আর একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, উৎসবে যাঁরা শামিল হতে পারছেন না বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণে, তাঁদের পাশে ডেকে নিন এই আনন্দের দিনগুলোয়। দেখবেন, শেয়ারিং-এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছুতে নেই। মানুষের পাশে থাকুন। তাহলেও দেখবেন মন ভালো হয়ে যাবে। আমেরিকার নিউরোসায়েন্সের প্রফেসর রবার্ট ফ্রোমকে উৎসব নিয়ে তাঁর গবেষণায় বলেছেন, নানা রঙের প‍্যান্ডেল, আলোর রোশনাই ইত্যাদি আমাদের বিভিন্ন ইন্দ্রিয়কে সজাগ ও উদ্দীপিত করে। দৃশ্যগত দিক থেকে মানুষের মনে যে একঘেয়েমি আসে তা থেকে মুক্তি দেয় উৎসবের রং। এর প্রভাব দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়।

Puja Food
ছবি: সংগৃহীত

সেজেগুজে সবাই পুজোতে আনন্দ করতে বেরোন।
এই যে পুজোর সময় ভালো জামা পরে, সেজেগুজে সবাই আনন্দ করতে বেরোন, এই উদযাপন-আনন্দ কিন্তু খুব ‘ছোঁয়াচে’। অর্থাৎ একজনের থেকে আর একজনের মনে ছড়িয়ে যায়। সেও সহজেই উদযাপনে মাতে। তাই যাঁরা এবার পুজোয় একাত্ম হতে চাইছেন না, মিশতে চাইছেন না, তাঁদের কাছে এটাও একটা বার্তা যে অন্যর আনন্দ দেখে নিজেও তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। একটু সাজুন, সুন্দর পোশাক পরে পছন্দের মানুষের সঙ্গে গল্প করুন বা ঘুরতে বেরোন। দূরে না-ই বা গেলেন, বাড়ির কাছেই কোনও প‍্যান্ডেলে একটুখানি বসতে পারেন। অথবা আত্মীয়-বন্ধুর বাড়িতে। ভিড় পছন্দ না হলে প্রিয়জনকে ডেকে নিন বাড়িতেই।

আর পুজো মানে শুধু ঠাকুর দেখা নয়, কেউ চাইলেই এই সময় সমুদ্রে পা ভিজিয়ে বা পাহাড়ের মনোরম পরিবেশের কোলে ঘুরে-বেড়িয়েও কাটাতে পারেন। এটাও কিন্তু খুবই স্বাস্থ্যকর একটা ব্যাপার। এই কয়েকটাদিন এইভাবেও উৎসবের আঁচ অনুভব করা যেতে পারে। তাহলেও কিন্তু অনেক ভালো থাকা সম্ভব।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement