Advertisement
Advertisement
পান্তা ভাতের উপকারিতা

ভোটে গরম মোকাবিলায় পান্তা ‘প্রেসক্রিপশন’ ডাক্তারদের

পান্তা ভাতে রয়েছে ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-১২।

Doctor prescribes 'Fermented rice' for beating the heat
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:May 5, 2019 8:23 pm
  • Updated:May 5, 2019 8:23 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: ‘পান্তা ভাতের জল, তিন পুরুষের বল’- প্রবাদটি প্রায়শই বলতেন বিশ্বশ্রী মনোহর আইচ। দিনে চারবার পান্তা খেতেন। বলতেন, “আমার দীর্ঘায়ু হওয়ার রেসিপি পান্তা।” সুস্থ শরীরেই শতবর্ষের চৌকাঠ পেরিয়েছিলেন পকেট হারকিউলিস। পান্তা নিয়ে অনেক প্রবাদ বাংলায়। ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ প্রবাদটি গরিবি বোঝাতে এখনও ব্যবহার করা হয়। এখনও এপার-ওপার জুড়ে পান্তার জনপ্রিয়তা। পান্তাবুড়ির গল্প এখনও গ্রাম বাংলার মুখে মুখে। বিশেষ করে চলতি জ্বালাপোড়া গরমের মরশুমে পান্তা মাহাত্ম্য যেন আরও প্রাসঙ্গিক। ঝাল-মশলাদার মেনুকে পিছনে ফেলে গ্রামগঞ্জের পাশাপাশি কসমোপলিটন শহরের বহু স্বাস্থ্য সচেতন বাড়িতেও ব্রেকফাস্ট-লাঞ্চ বা ডিনারের টেবিলে সগৌরবে ঠাঁই করে নিয়েছে চির সনাতনী পান্তা। সঙ্গে অনুপান হিসাবে পেঁয়াজ, পোস্ত বা ডালের বড়া এবং অবশ্যই লেবু-লঙ্কা। ভোটের মরশুমে বহু প্রার্থীর শরীর ঠান্ডা রাখছে পান্তা। ভাল রাখছে পেট। ভোটবাবুদেরও এবার পান্তাভাতের শরণে আসার পরামর্শ দিলেন ডাক্তারবাবুরা।

[আরও পড়ুন:  ফেয়ারনেস ক্রিম আসলে দাদের মলম! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ?]

Advertisement

রান্না করা ভাত প্রায় ১২ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখলে তাকে পান্তা বলা হয়। সাধারণত লবণ, মরিচ মিশিয়ে পান্তা ভাত খাওয়া হয়। পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। অনেকেই পান্তা খেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেন। বাংলাদেশ-সহ পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতে এ খাবারের প্রচলন চলে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের পরিবারে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশাতেও নানা অবতারে রয়েছে পান্তাভাত। তামিল ভাষায় পান্তা ভাতকে বলা হয় “পাঝিয়া সাধাম”। তেলুগু ভাষায় পান্তা ভাতকে বলা হয় “সাধী আন্নামু” অথবা “সাধেন্নামু”।

[আরও পড়ুন:  সহকর্মীর সঙ্গে এই কাজটাই একঘেয়েমি কাটানোর মোক্ষম দাওয়াই!]

বৈশাখের চল্লিশ ছুঁইছুঁই গরম সামলাতে ডাক্তারবাবুরা পান্তা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁদের মত, ভাতকে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে গাঁজন প্রক্রিয়ায় তা ফাইটিক অ্যাসিড ও ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে। এতে পান্তা ভাতের অম্লত্ব বেড়ে যায়। তখন পচনকারী ও অন্যান্য ক্ষতিকারক ব্যাক্টিরিয়া, ছত্রাক ভাত নষ্ট করতে পারে না। পেটের সুস্থতায় গাঁজায়িত খাবার পান্তা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই খাবার পেটে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে। বাংলাদেশের একটি গবেষণা সংস্থার দাবি, পান্তাভাতে রয়েছে ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-১২। রয়েছে অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা খাদ্য হজম করতে সহায়তা করে এবং বহু রোগ প্রতিরোধ করে। এ ভাতে রয়েছে হাড় ও পেশিশক্তি বৃদ্ধির উপাদান ক্যালশিয়াম। তবে পান্তা কিডনি ও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এমনটাই জানালেন রাজাবাজারের শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠের অধ্যাপক ডা. প্রদ্যোত বিকাশ কর মহাপাত্র। বললেন, হাইপার টেনশন বা বাতরোগে ভুগছেন এমন মানুষদের পান্তা এড়িয়ে চলা উচিত। তাছাড়া, পান্তায় পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকায় কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রেও বিপজ্জনক। তাঁর পর্যবেক্ষণ, পান্তাভাত পিত্তকে শমন করে। জলীয় সাম্য বজায় রাখে। শরীর ঠান্ডা করে। ভাল ঘুম হয়। কিন্তু যেহেতু শরীরে রসভাব বাড়ায় তাই ভারী শরীরের মানুষদের পান্তা এড়িয়ে চলা উচিত। পান্তাভাতের প্রশংসা করলেন পিজি হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত ডায়াটিশিয়ান কল্পনা চৌধুরি। তবে তাঁর সাবধানবাণী, পান্তাভাত তৈরিতে যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জল ব্যবহার করা হয়। ভাল করে ঢেকে রাখা হয়।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement