Advertisement
Advertisement
lood Pressure Ayurveda

রক্তচাপ বশে থাকবে আয়ুর্বেদের গুণে, অবহেলা করলে পরিণতি হতে পারে মারাত্মক

এমন সমস্যা থাকলে ওষুধ বন্ধ করা নিষেধ।

Cure Blood Pressure by Ayurveda | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 8, 2023 4:00 pm
  • Updated:August 8, 2023 4:00 pm  

লাইফস্টাইল ডিজিজ থাকলে ওষুধ বন্ধ করা নিষেধ। হাই ব্লাড প্রেশার (High Blood Pressure) তার মধ্যে একটি। একটু অবহেলা করলে প্রাণের ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। আয়ুর্বেদিক উপায়ে নিয়ন্ত্রণের পথ দেখালেন চিকিৎসক অচিন্ত‌্য মিত্র। 

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন আজকের দিনে প্রায় সকলেরই সমস্যা। এখন সকলের জীবনযাপন এমন পর্যায়ে গিয়েছে, যার ফলে অল্পবয়সে বা ত্রিশোর্ধ্বরাও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অসুখ সঠিক সময় নির্ণীত না হলে ও উপযুক্ত চিকিৎসা না করলে প্রাণসংশয় পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।

Advertisement

Blood-Pressure 1

রক্ত সঞ্চালন পরিবর্তনের কারণগুলির মধ্যে অন‌্যতম হল রক্তনালিতে বাধা। নানা কারণে রক্তনালির দেওয়ালে রুক্ষতা ও কঠিনতা বৃদ্ধি পায় যা রক্ত সঞ্চালনের পথকে সংকুচিত করে। খারাপ কোলেস্টেরল অতিমাত্রায় অবাঞ্ছিতভাবে রক্তনালিতে জমা হতে হতে নালির পথ ক্রমশ সরু হতে থাকে। ফলত হার্টে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সমস্যা তৈরি করে।

রক্তচাপ বৃদ্ধির জন‌্য দায়ী
খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলী।
ভাজাভুজি খাওয়া, অত‌্যধিক চর্বিজাতীয়, গুরু, অতিলবণাক্ত, কটুরস ইত‌্যাদি খাবার ও পানীয় রক্তচাপ বৃদ্ধি ঘটায় ও অন‌্যান‌্য রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত পরিশ্রম, মানসিক চিন্তা/চাপ, রাত জাগা, দিনের বেলা ঘুমানো, প্রাকৃতিক (মল-মূত্র ইত‌্যাদি) বেগ ধারণ, ক্রোধ ইত্যাদি রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
স্থূলতা বা মেদরোগ, মদ‌্যপান, ধূমপান ইত‌্যাদি থেকেও সমস্যা বাড়ে।
আগন্তুক কারণ: অহিতকর কর্ম, হিংসাত্মক কর্ম, অভিচার বা চিন্তাহীন কর্ম, অভিসঙ্গ যেমন কাম, দুশ্চিন্তা, ক্রোধ, ভয়, শোক, মানসিক আঘাত ইত‌্যাদি।
অন‌্যান‌্য কারণ: ব‌্যক্তিগত প্রকৃতি, বয়স, মানসিক সত্ত্ব, শারীরিক ও মানসিক বল ইত‌্যাদি।

tension-baja

আয়ুর্বেদে নিয়ন্ত্রণের উপায়
উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসায় মূলত দু’দিক বিচার বিবেচনা করে করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ জীবনশৈলী থাকলে প্রতিরোধমূলক বা প্রোফাইল‌্যাকটিক চিকিৎসা এবং উচ্চরক্তচাপ থাকলে তার নিরাময়মূলক চিকিৎসা দরকার। শরীরে রক্ত প্রবাহের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সর্পগন্ধামূল বিশেষ কার্যকর। অনেক ক্ষেত্রে রক্তচাপ কমাতে মূ্ল হিসাবে পুনর্নবা, গোক্ষুর, কুশ ব‌্যবহার করা হয়। স্ট্রেস বা হতাশানাশক হিসাবে বচ, জটামাংসী, অশ্বগন্ধা, ব্রাহ্মী, সুশনি ইত‌্যাদির ব‌্যবহার করা যেতে পারে। রক্তের চর্বি বা কোলেস্টরলকে নিয়ন্ত্রণ করার জন‌্য রসুন, শুদ্ধ গুগ্গুল, মেথি বিশেষ উপকারী। হার্টের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে অর্জুন ছাল সর্বশ্রেষ্ঠ।

[আরও পড়ুন: ইয়েলো বেলিডে সাপের আতঙ্ক, দিঘা যাওয়া কতটা নিরাপদ? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা]

প্রচলিত ওষুধ ও তার মাত্রা
সর্পগন্ধা মিশ্রণ – ৫০০ মি.গ্রা থেকে ১ গ্রাম পর্যন্ত দিনে হাল্কা গরম জলে।
প্রভাকর বটি – ১২৫ মিগ্রা থেকে ২৫০ মিগ্রা দিনে ১-২ বার খেতে হবে, হার্ট ভাল রাখতে।
গোক্ষুরাদি গুগ্গুল – ৫০০ মিগ্রা থেকে ১ গ্রা দিনে হবার হাল্কা গরম জলের সঙ্গে পান করতে হবে।
চন্দ্রপ্রভাবটি – ৫০০ মিগ্রা থেকে ১ গ্রা দিনে ২ বার হাল্কা গরম জলসহ পান।
অশ্বগন্ধামূল চূর্ণ (২ গ্রাম) ও অর্জুনছাল চর্ম (২ গ্রাম) দিনে ২ বার গরম দুধে পাক করে খেতে হবে।
অর্জুন ক্ষীরপাক- বিশেষত বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে উপকারী। কেবলমাত্র অর্জুন ছাল চূর্ণ (২ গ্রাম-৩ গ্রাম) দিনে ২ বার ১/২ কাপ গরম দুধে পাক করে খেতে হবে।
ঊষিরাদি চূর্ণ ও জটামাংসী চূর্ণ – ১.৫ গ্রাম করে নিয়ে ক্বাথ তৈরি করে খেলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
তগর চূর্ণ, জটামাংসী ও অর্জুন ছাল চূর্ণ- ১ গ্রাম করে নিয়ে দিনে ২ বার খেলেও ভাল ফল মেলে।
ঘরোয়া চিকিৎসা হিসাবে প্রাথমিকভাবে – পুনর্নবা শাকের রস ১৫-৩০ মি.লি ব‌্যবহার করা যেতে পারে বিশেষ যেখানে শোথ থাকে।
সজনে গাছের পাতা- এর রস বা শুকনো পাতা ক্বাথ বানিয়ে ১৫-৩০ মি.লি. খেলে অনেকক্ষেত্রে রক্তচাপ হ্রাস করতে সহায়তা করে। হাল্কা যোগাসন ও ধ‌্যান/মেডিটেশন বিশেষভাবে উপকারী।

Ayurveda-Treatment-1

কী করবেন না
অতিরিক্ত বা আলাদাভাবে কোনও প্রকার লবণ বা লবনাক্ত খাবার খাওয়া ও পানীয় বর্জন করতে হবে।
কোনওরকম তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন ও মদ‌্যপান ত্যাগ করতে হবে।
অধিক রাত জাগা ও অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক্স গ‌্যাজেট যেমন – মোবাইল, ল‌্যাপটপ টিভি ইত‌্যাদির ব‌্যবহার কমাতে হবে।
কোল্ড ড্রিংস, আইসক্রিম ও ফাস্ট ফুডে অতিরিক্ত আসক্তি নয়।
নিজে নিজে বিভিন্ন OTC (Over the counter) ওষুধের ব‌্যবহার নয়।
কোনও পূর্বে জানা রোগ থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা করানো।
যষ্টিমধু, সোমলতা, লেবু জাতীয় ফল, শুকনো মশলা ও ভেষজ অধিক দিন ধরে সেবন করলে রক্তচাপ বাড়াতে পারে।

ভাল থাকতে
সুষম ও সাধারণ ঘরোয়া খাবারে নিজেকে অভ‌্যস্ত করা।
একটি স্বাস্থ‌্যকর জীবনশৈলী অনুপালন করা। কমপক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম অত‌্যন্ত প্রয়োজন। সকাল বা বিকালে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা হালকা ব‌্যায়াম, যোগাসন,
হাঁটা ও মেডিটেশন করলে হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে। রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া ও ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠলে সারাদিন শরীর ও মন প্রাণবন্ত থাকে ও রক্তচাপ ঠিক থাকে।
দিনচর্য‌া (daily regimen), রাত্রিচর্য‌া (night regimen) ঋত্তচর্য‌া (seasonal
regimen) সঠিকভাবে পালন করলে এই ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
চল্লিশোর্ধ্বদের অ‌ত‌্যন্ত বছরে এক বার স্বাস্থ‌্যপরীক্ষা করানো খুব জরুরি। উচ্চ রক্তচাপের রোগীর নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। কেন রক্তচাপ বাড়ল তা দেখতে হবে, উচ্চ রক্তচাপকে অবহেলা করলে তার পরিণতি ভয়ংকর হতে পারে।

[আরও পড়ুন: অপরিষ্কার মুখগহ্বরই কি ওরাল ক্যানসারের বাড়বাড়ন্তের কারণ? জবাব দিলেন বিশেষজ্ঞ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement