প্রীতিকা দত্ত: কোভিড আক্রান্ত বাচ্চাদের হার্টে ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল। এমনটাই জানাচ্ছে একটি মার্কিন গবেষণা। গবেষকদের মতে, করোনাভাইরাস (CoronaVirus) খুদেদের হার্টে এতটাই ক্ষতি করতে পারে যে, সারা জীবন তাকে নিয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে দৌড়তে হতে পারে।
প্রথমে শোনা গিয়েছিল, করোনার (COVID-19) আবহে আপনার ছোট্ট সোনা নিরাপদ। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকের তথ্য বলছে, মার্কিন মুলুকে মোট আক্রান্তের ৯ শতাংশই বাচ্চা। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে করোনা অত মারাত্মক নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে ‘মাইল্ড’ উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার সম্পূর্ণ উপসর্গহীন।
সম্প্রতি দ্য ল্যানসেটের ইক্লিনিক্যাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্র। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ সায়েন্স সেন্টারের চিকিৎসক অ্যালভারো মরেইরা জানাচ্ছেন, উপসর্গহীন কোভিড আক্রান্ত শিশুদের তিন-চার সপ্তাহ পর থেকে মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোমের (এমআইএস- সি) সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এমআইএস-সি আক্রান্ত শিশুকে ICU-তে রেখে চিকিৎসা করতে হয়। আসলে এক্ষেত্রে বাচ্চাদের হার্টের পেশিগুলি আক্রান্ত হয়ে ‘মায়োকার্ডাইটিস’ হয়। দ্রুত চিকিৎসা না করালে হার্ট ফেলিওর হয়ে মারা যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।
টেক্সাসে ২০২০ সালের জানুয়ারি এক তারিখ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ৬০০-র বেশি কোভিড আক্রান্ত শিশুদের উপর গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। দেখা গিয়েছে, কোভিডের কোনও লক্ষণ প্রকাশ পাক বা না পাক হার্টের সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। হার্টে একধরণের প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন দেখা যায়। ফলে হার্টের রক্তনালি খানিকটা প্রসারিত হয়। সামগ্রিকভাবে বাচ্চাদের হার্টের কার্যকারিতা কমতে থাকে। তার জেরেই কোভিড মুক্ত হলেও হাসপাতালে ফিরে ফিরে আসতে হচ্ছে অনেককেই।
কলকাতার বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুমনা দত্ত কাঞ্জিলাল অবশ্য বলছিলেন, “এ রাজ্যে করোনা আবহে শিশুদের মধ্যে কাওয়াসাকি ডিজিজ বাড়ছে। জাপানি এই অসুখেও কিন্তু মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম বেশ সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এবং শিশুদের হার্টে তার প্রভাব পড়ছে। একটা সময় কাওয়াসাকি ডিজিজ ইউরোপ, আমেরিকাতে দেখা যেত।” বর্তমানে তা পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে বলেও জানান ডা. দত্ত কাঞ্জিলাল। কোভিড ১৯ ভাইরাসের সঙ্গে সরাসরি কাওয়াসাকি ও কাওয়াসাকির মতো উপসর্গযুক্ত অসুখের সম্পর্ক আছে, বলে দাবি করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.