সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামুদ্রিক প্রাণী থেকে নোভেল করোনা ভাইরাস (Coronavirus) সংক্রমণ নিয়ে চিনের ইউহানের বাজারকে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। বাদুড়ের মাংস খাওয়া নিয়েও বহু নিন্দে সইতে হয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে করোনার বাড়বাড়ন্তে আরও চিন্তা বাড়াল সাম্প্রতিক সমীক্ষা। বলা হচ্ছে, জঙ্গল থেকে প্রাণী শিকার করে তা বাজারে বিক্রির মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। বিশেষত বাজার থেকে যখন রেস্তরাঁয় রান্না হয়ে প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে আরও। আর এতে সবচেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। তাই সেসব দেশকে সতর্ক করে দিলেন বিজ্ঞানীরা।
মার্কিন এবং ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাস বন্যপ্রাণীদের উপর কতটা প্রভাব ফেলে, সে বিষয়ে একটি গবেষণা করছিলেন। তাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বলা হচ্ছে, প্যাঙ্গোলিন, বনবিড়ালের পাশাপাশি একধরনের বুনো ইঁদুরও করোনা ভাইরাসের বাহক। সাধারণত, এসব বন্যপ্রাণী শিকার করে, বাজারে বিক্রি হয় খাদ্যের চাহিদা রয়েছে বলে। কিন্তু বিপদ লুকিয়ে এরই মধ্যে। বাজার থেকে কেনার পর রেস্তরাঁর ফ্রিজারে তা কিছুদিন থাকে। তারপর রান্না হয়ে, প্লেটে সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। এই স্তরেই সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে বলে জানা গিয়েছে সাম্প্রতিক গবেষণায়। কোন স্তরে কতটা সংক্রমণের ঝুঁকি, তার একটা শতকরা হিসেবও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, খামারে ৬ শতাংশ, বিক্রেতাদের কাছে ২১ শতাংশ, বাজারে ৩২ শতাংশ এবং রেস্তরাঁয় ৫৬ শতাংশ ঝুঁকি রয়েছে রোগ ছড়ানোর।
ভিয়েতনামের মতো দেশে খাদ্যতালিকায় ইঁদুর থাকা নিত্যদিনের ব্যাপার। কখনও জঙ্গল থেকে, কখনও বা বাজার থেকে কিনে ভিয়েতনামবাসী ইঁদুরের বিভিন্ন পদ রান্না করে থাকে। সেখানকার ইঁদুর খামার থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে চলেছে গবেষণার কাজ। নিউ ইয়র্কের বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ সারা ওলসন বলছেন, ”ওদের শরীরে যে ভাইরাসটি আছে, তা মানুষের জন্য তেমন বিপজ্জনক নয়। তবে এই পদ্ধতিতে মানুষের কাছে পৌঁছতে পৌঁছতে ভাইরাসটা তার শক্তি অনেকখানি বাড়িয়ে তোলে। তখনই বিপদ বাড়ে।”
করোনা আবহে বিশ্বজুড়েই আপাতত বন্যপ্রাণীদের বাজার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। চিন যদিও সামুদ্রিক বাজার নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে তা বন্ধ রেখেছে। একইসঙ্গে বন্যপ্রাণী শিকার, মাংস জমিয়ে রাখাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এমনকী ওষুধ তৈরির জন্যেও তা শিকার করা যাবে না। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশ কতটা এই পরামর্শ মেনে চলবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.