সুমিতা ভাস্কর: সরকারি-বেসরকারি নানা স্বাস্থ্য বিমা থাকলেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলে বিলের একটা বড় অংশ রোগীর পরিবারকেই বহন করতে হচ্ছে। আবার রোগী যদি হাসপাতালে ভরতি না হয়ে বাড়ি থেকে চিকিৎসা করান তাহলে চিকিৎসার জন্য কোনও রকম বিমার টাকাই পাচ্ছেন না। অথচ বর্তমান অবস্থায়, সমস্ত রোগীকে হাসপাতালে জায়গা দিতে হলে আপৎকালীন সংকটাপন্ন রোগীদের হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে না। তা হলে কিংকর্তব্য? করোনার নতুন বিমা।
হ্যাঁ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে করোনার জন্য বিশেষ চিকিৎসা বিমা চালু করার নির্দেশ দিয়েছে দেশের বিমা নিয়ামক সংস্থা ‘IRDAI’। দেশের Insurance Regulatory and Development Authority-র নির্দেশের ভিত্তিতেই জুলাই থেকে এই বিমা সুবিধার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দেশজুড়ে গত কয়েক মাসে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি ও তার চিকিৎসার জন্য দেশের মানুষ যাতে বিমার সুবিধা থেকে কোনওভাবে বঞ্চিত না হন তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা করেছে বিমা নিয়ামক সংস্থা। প্রধানত দু’ধরনের বিমার প্রস্তাব করা হয়েছে। একটিতে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে চিকিৎসার জন্য সুবিধা পাবেন বিমাকারী। অপরটিতে ‘স্ট্যান্ডার্ড বেনিফিট’ অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকা প্রিমিয়ামে মানুষকে তাই সুরক্ষার আশ্বাস দিচ্ছে ‘করোনা রক্ষক’ ও ‘করোনা কবচ’।
কী বিশেষত্ব?
‘করোনা কবচ’ নামের এই বিশেষ বিমায় সমস্ত সংস্থাকে অভিন্ন নিয়ম অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে ‘IRDAI’। সাড়ে তিন মাস থেকে সাড়ে ন’মাস পর্যন্ত মেয়াদে এই বিমা করতে পারবেন গ্রাহকরা। একা কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য একজোটে এই পলিসি করা যায়। পরিবার বলতে যিনি বিমা করছেন তিনি নিজে, তাঁর স্বামী বা স্ত্রী, বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং ২৫ বছর পর্যন্ত বয়সের বাবা-মায়ের উপর নির্ভরশীল সন্তান।
‘করোনা রক্ষক’ নামের স্ট্যান্ডার্ড বেনিফিট পলিসিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাওয়া যাবে চিকিৎসার জন্য। ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমা করতে পারবেন গ্রাহকরা। অর্থাৎ যে সংস্থা থেকেই এই বিমা করা হোক না কেন, তার জন্য প্রিমিয়ামের টাকার বড় রকমের হেরফের হওয়ার ঝুঁকি থাকছে না। COVID-19 সংক্রমণ থেকে শুরু করে ‘কো-মরবিডিটি’, অর্থাৎ অন্য কোনও রোগের কারণে এই সংক্রমণের বাড়তি ঝুঁকি থাকলেও তাতেও বিমার সুবিধা মিলবে। পুরনো কোনও অসুস্থতা থাকলে তাতেও কোনও সমস্যা হবে না বিমার টাকা পেতে, এমনই নির্দেশ। এছাড়া যাঁরা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করাতে চান তাঁরাও প্রতি ১৪ দিনের মেয়াদে চিকিৎসার জন্য সমস্ত খরচ পাবেন। অন্য মেডিক্লেমের ক্ষেত্রে সংস্থাগুলি যা কোনওভাবেই দিতে চাইছিল না।
উপসর্গ না থাকলেও সুবিধা পাবেন?
বহু করোনা (CoronaVirus) আক্রান্ত মানুষ ‘অ্যাসিম্পটোম্যাটিক’ অর্থাৎ সংক্রমণের লক্ষণ-রহিত হওয়ার কারণে তাঁরাও এর অন্তর্ভুক্ত হননি এতদিন। এমনকী অনেকে চিকিৎসার খরচের ভয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে পারছেন না বলেও অভিযোগ। সাধারণ স্বাস্থ্যে বিমায় যেমন অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বা PPE-র মতো বেশ কিছু ‘ইন অ্যাডমিসেবেল’ জিনিস যুক্ত থাকে না, কোভিডের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সংস্থা এগুলোর খরচও বহন করছে। যাঁরা এই ধরনের বিমার কথা ভাবছেন তাঁরা বিমা করার সময় এই তথ্যগুলো একবার ঝালিয়ে নেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.