Advertisement
Advertisement
চোখের জলে করোনা

চোখের জলেও লুকিয়ে থাকতে পারে করোনার বিষ? জানুন কী বলছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা

চোখ দিয়ে জল পড়লে কি কোভিডের উপসর্গ হতে পারে?

Coronavirus can be in Eye droplets! Here's what Experts says
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:June 12, 2020 12:24 pm
  • Updated:June 12, 2020 12:24 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: হাঁচি-কাশি তো বটেই, চোখের জলেও লুকিয়ে থাকতে পারে করোনার বিষ! অতএব, কান্না পেলেও চেপে রাখুন। পাবলিক প্লেসে চোখের জল নৈব নৈব চ! নিদান দিচ্ছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা। জ্বর, কাশি, গলাব্যথার পাশাপাশি কোভিডের অন্যতম উপসর্গ ‘পিংক আই’ বা কনজাংটিভাইটিস। বাংলায় যাকে ‘চোখ ওঠা’ বা ‘জয় বাংলা’ বলে। যদিও এই উপসর্গটি বাকিদের তুলনায় সংখ্যালঘু। তবু ডাক্তারবাবুরা সচেতন করেছেন আম জনতাকে। জানিয়েছেন, কারও চোখ লাল দেখলেই সাবধান। তাঁর থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। চোখ থেকে জল পড়লেও সাবধান। এগুলো কোভিডের উপসর্গ হতে পারে।

সমস্যা হল, জুন-জুলাইয়ের এই সময়েই কনজাংটিভাইটিসের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। বর্ষা শুরু হলে আরও বাড়বে। এমনটাই জানালেন কলকাতার ‘রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজি’-র সহকারী অধ্যাপক ডা. চন্দনা চক্রবর্তী। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “কোভিড পজিটিভ রোগীদের ১-৩ শতাংশের কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। চোখ লাল নয়, তবু চোখ দিয়ে জল পড়ছে, এমন ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। চোখের জল ধরে নিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। ভাইরাস থাকলে তা ধরা পড়ে যাবে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে বড় ভূমিকা রক্তের গ্রুপের, জেনে নিন কারা নিরাপদ, কাদেরই বা ভয় বেশি]

একই বক্তব্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চক্ষুবিভাগের প্রধান ডা. সৌম্যস্বরূপ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি জানালেন, করোনারোগীর ‘ড্রপলেট’-এ ভাইরাস থাকার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ, ঘামে ৮০ শতাংশ এবং চোখের জলে ৭০ শতাংশ। সুতরাং চোখের জল ‘কালচার’ করলেও ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়বে। আরআইও-র একদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। অন্যদিকে ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’। দু’ জায়গাতেই এখন কোভিড টেস্ট হয়। ট্রপিক্যালে আরটিপিসিআর যন্ত্রে, মেডিক্যালে ট্রুন্যাটে। আরআইও-র প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. হিমাদ্রি দত্ত জানিয়েছেন, ট্রপিক্যালে চোখের জল পাঠিয়ে ‘কালচার’ করা যেতেই পারে। তবে, বিষয়টি ‘র‌্যান্ডম’ হলে ভাল হয়।

কনজাংটিভাইটিসের রোগী দেখলেই এখন ‘আরআইও’-তে আইসোলেশনে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে। হিস্ট্রি নেওয়া হচ্ছে। জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট আছে কি না দেখা হচ্ছে। কোনও কোভিড রোগীর সংস্পর্শে ওই রোগী এসেছেন কি না তা-ও জানার চেষ্টা হচ্ছে। চন্দনা জানিয়েছেন, চোখে থাকা নেত্রনালির পথ ধরে নভেল করোনা শরীরে ‘এন্ট্রি’-ও নিতে পারে। চোখের জলেরও করোনা টেস্ট চোখের উপরে কনজাংটাইভা নামে এক ধরনের ঝিল্লি থাকে। সেখানে সংক্রমিত ব্যক্তির ‘ড্রপলেট’ এসে পড়লেও কোভিডের সম্ভাবনা তৈরি হয়।

[আরও পড়ুন: করোনাকে দূরে রাখতে পারে ‘জুম্বা ডান্স’! পথ বাতলালেন বিশেষজ্ঞরা]

আরআইও-তে এখন রোজ ৭০-১০০ জন রোগী আসছেন বহির্বিভাগে। তার মধ্যে ১০-১২ জনের কনজাংটিভাইটিস পাওয়া যাচ্ছে। চোখ থেকে জল পড়ার সমস্যা নিয়েও অনেকে আসছেন। তাই, কোনও ঝুঁকি নিচ্ছেন না ডাক্তারবাবুরা। পিপিই পরেই রোগী দেখছেন। ফেস শিল্ড, ব্রিদ শিল্ডও থাকছে। চোখের পাওয়ার নির্ণয়ের লেন্সগুলি স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে স্লিট ল্যাম্পও। অস্ত্রোপচার হলে তো কথাই নেই। কোভিড টেস্ট মাস্ট। এবার চোখের জলের নমুনাও যাবে ল্যাবরেটরিতে।
কনজাংটিভাইটিস ও চোখের জল নিয়ে চিন-সহ বহু দেশে গবেষণা হয়েছে। ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ অপথালমোলজি-তেও বেশ কয়েকটি আর্টিকল বেরিয়েছে। ডাক্তারবাবুরা এখন কনট্যাক্ট লেন্স পরতে বারণ করেছেন। জানিয়েছেন, যাঁদের চশমা নেই তাঁরা পাওয়ারহীন গ্লাস ব্যবহার করুন। ফেস শিল্ড পরুন। আর ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। আর কোনওভাবেই চোখে হাত দেবেন না।

[আরও পড়ুন: কপালেই লেখা করোনার ভবিষ্যৎ, তৃতীয় নেত্রের মেলাটোনিনে ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা বিজ্ঞানীদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement