সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশা ছিল অনেক। কিন্তু তা হতাশায় পরিবর্তিত হতে বেশি সময়ও লাগল না। নোভেল করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আনা প্রতিষেধক Remdesivir-এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ডাহা ফেল। প্রয়োগের মাঝেই অনেকের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। WHO’র তরফে এ কথা জানা গিয়েছে। এর আগেও ভাইরাস দমনে Remdesivir ব্যর্থ হয়েছে। বছর দুই, তিন আগে আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে এই ওষুধটিই প্রয়োগ করা হয়েছিল। তা পাশ করতে পারেনি।
খুব আশা নিয়ে Remdesivir কে প্রতিষেধক হয়ে ওঠার পরীক্ষায় নামানো হয়েছিল। শুরু হয়েছিল ব়্যান্ডম ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। এক মাস পর দেখা গেল, ওই ওষুধ খেয়ে ১৩.৭ শতাংশ মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়েছে। তুলনায় অন্য গ্রুপের ওষুধে মৃত্যুর হার কিছুটা কম – ১২.৮ শতাংশ। এই পরীক্ষা নিয়ে সাফল্য দাবি করে নিজেদের ওয়েবসাইটে দিয়েও তা তুলে নিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। তবে এই ব্যর্থতা কিছুতেই মেনে নিতে চাইছে না। তাদের দাবি, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ নিয়ে প্রকাশিত সমীক্ষার রিপোর্টে নির্দিষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। এমনকী নিজেদের সাফল্য প্রমাণের ততটা সুযোগও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন সংস্থার কর্তারা। তাই তাঁরা জানিয়েছেন যে ট্রায়াল চলবেই। তা বন্ধ হবে না। কারণ, ভবিষ্যতে এটা সাফল্যের মুখ দেখতে পারে।
সংস্থার এই দাবিতে আংশিক সহমত পোষণ করেছেন লন্ডনের মহামারি বিশেষজ্ঞ স্টিফেন ইভানস। তাঁর মতে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ খুব একটা বেশি হয়নি। তাই তার সাফল্য বা ব্যর্থতা এখনই স্থির করে নেওয়া উচিত হবে না। আরও বেশি পরিমাণে টেস্ট করা প্রয়োজন। ইভানস বলছেন, যদি এমনটা হয় যে ড্রাগটি একেবারে প্রাথমিক স্তরে কাজ করছে, অর্থাৎ রোগী করোনা পজিটিভ হওয়ার পরই এই ওষুধ প্রয়োগে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে, তাহলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তার কার্যক্ষমতা নিয়ে সংশয় থাকবে।
এর আগে শিকাগোর একটি হাসপাতাল ওষুধের প্রয়োগ নিয়ে সাফল্যের দাবি করেছিল। আমেরিকার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেসও একই পথে হেঁটেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত সাফল্য এল না। আগে যেহেতু ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছিল Remdesivir, তাই এর উপর বিশেষ ভরসা রাখতে চাইছেন না অনেকে। ফলে এই মুহূর্তে করোনা যুদ্ধে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ছাড়া বিশেষ আশা দেখাতে পারল না কোনও ওষুধই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.