অভিরূপ দাস: মাকড়সা কামড়ালে স্পাইডার ম্যান । তেমনই নাকি টিকা (Covid-19 Vaccine) নেওয়ার পর চুম্বক ম্যান! শিলিগুড়ির নেপাল চক্রবর্তী, তেহট্টের প্রবীর মণ্ডল, বসিহাটের শংকর প্রামাণিক। তাঁদের সকলেরই দাবি, টিকা নিয়েই তাঁদের গায়ে আটকে যাচ্ছে লোহার বস্তু। এমনটা সম্ভব?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো ফিজিক্সের অধ্যাপক সুখেন দাসের কথায়, কিছু চিকিৎসায় রোগীকে ড্রাগের সঙ্গে কোনও ম্যাগনেটিক মেটেরিয়াল খাওয়ানোর পরে বাইরে থেকে ম্যাগনেটিক (Magnet) ফিল্ড অ্যাপ্লাই করে চিকিৎসা করা হয়। যেটা পোজিট্রন এমিসন টোমোগ্রাফি এবং কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি বা পেট সিটি স্ক্যানে করা হয়। কিন্তু টিকা নেওয়ার পর শরীরে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হওয়ার ঘটনার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক শান্তনু ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, শরীরে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হলেও টিকার জন্যেই হয়েছে বলা যাবে না। এর মানে দুটো ঘটনা গায়ে গায়ে হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, একটা অন্যটার জন্য দায়ী। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ উত্তম মজুমদার জানান, মাত্রাতিরিক্ত উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার কারণেই এই অনুভূতি হচ্ছে। আদৌ এর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।
ঘটনার সূত্রপাত মহারাষ্ট্রে। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরই নাকি শরীর চুম্বকে পরিণত হচ্ছে বলে দাবি করেন নাসিকের এক প্রৌঢ়। তাঁর দাবি, শরীরে স্টিলের চামচ, ছোট থালা ইত্যাদি বাসনকোসন ছোঁয়ালেই তা আটকে যাচ্ছে! করোনা টিকার (COVID vaccine) দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরই এই আজব ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে বলে দাবি তাঁর। তবে স্রেফ ভিনরাজ্যেই নয়। বাংলায়ও একদিনে তিনজন ‘চুম্বক ম্যানে’র খোঁজ মেলে। রবিবার সকালে প্রথম খবরটা আসে শিলিগুড়ি থেকে। তারপরই আসানসোল (Asansol), নদিয়ার (Nadia) পলাশীপাড়া এবং বসিরহাটেও খোঁজ মেলে ম্যাগনেট মানুষের। এঁদের মধ্যে দু’জন আবার কোভিশিল্ড (Covishield) নিলেও একজন আবার নিয়েছিলেন কোভ্যাক্সিনের (Covaxin) ডোজ। যদিও এই চুম্বকত্বের সঙ্গে করোনা টিকার কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। সে যে যাই বলুন না কেন দেশজুড়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে ‘ম্যাগনেট ম্যান’ রহস্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.