মেনোপজের (Menopause) পর রজঃস্বলা নন, কিন্তু হঠাৎই একদিন ব্লিডিং হলে অ্যালার্মিং। সতর্ক করলেন গাইনোকলজিস্ট ডা. শ্যামল রক্ষিত।
মেনোপজের পর ব্লিডিং বা রক্তস্রাব হলে সেটা বেশ চিন্তার। কখনওই সেটা সাধারণভাবে নেওয়া উচিত নয়। একদিনও যদি এমন হয় তা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এই অবহেলার কারণে আজকের দিনে নানারকম জটিল সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা যদি প্রথমেই ধরা পড়ে বা এই লক্ষণ দেখেই রোগী সজাগ হন তা হলে রোগ সারিয়ে তোলা সহজ হত।
মেনোপজ কখন, বুঝবেন কীভাবে?
একটা বয়সের পর ঋতুস্রাব এক-দু’মাস বন্ধ মানেই কি মেনোপজ? তা নয়। সাধারণত ৪৫ বছর বয়সে মেনোপজের সম্ভাবনা দেখা দেয়। বর্তমানে সেই বয়সটা বেড়ে হয়েছে ৫০ বছর। কম করে যদি ছয় মাস ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে তাহলেই তাকে আমরা মেনোপজ বলতে পারি। আবার অনেক সময় অন্য কারণেও মাসিক বন্ধ হতে পারে। তখন তা কিন্তু মেনোপজ নয়।
হরমোন পরীক্ষা করলে LH, FSH করলেই মেনোপজ নিশ্চিতকরণ করা যায়। মেনোপজের পর হঠাৎ করেই ব্লিডিং শুরু হলে আড়ালে ক্যানসারও লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধান হতে হবে।
হঠাৎ ব্লিডিংয়ে কী চিন্তা?
সাধারণত ক্যানসারের ভয়টাই বেশি থাকে। দেখা যায় অনেকেরই অন্য কারণে ব্লিডিং হয়, লোকাল ইনফেকশন থেকে হতে পারে, একটি ছোট পলিপ থেকে হতে পারে, আবার অনেক সময় সেনাইল ভেজাইনাইটিস থেকে হতে পারে বা জরায়ু ক্যানসার থেকেও অনেক সময় হতে পারে, তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষা আছে। সাধারণত প্যাপস্মিয়ার পরীক্ষা দ্বারা ক্যানসার নির্ণয় করা সম্ভব।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
যাদের আগে থেকে হাইপার ইস্ট্রোজেনিক সিনড্রোম আছে যেমন, পলিসিস্টিক ওভারি যদি কম বয়স থেকে থাকে, যদি ইউটেরাসে টিউমার বা জরায়ুমুখে কোনও রোগ যেটা আগে ধরা পড়েনি, হতে পারে ফাইব্রয়েড – পরবর্তীকালে বিশেষত মেনোপজের পর এদের হঠাৎ ব্লিডিং হতে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখলে সাবধান?
পোস্ট মেনোপোজ্যাল ব্লিডিংই শুধু নয়, এই সময় সাদাস্রাব নিঃসৃত হলেও চিন্তার। যদিও সামান্য কোনও সংক্রমণ থেকেও এমন হতে পারে, আবার সার্ভিক্স ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণও এমন হতে পারে। এছাড়া অনিয়মিত ঋতুস্রাব বা অনেক সময় সহবাসের পর ব্লিডিং দেখা যায় তো সেটা আরও বেশি চিন্তার বিষয়। পোস্ট মেনোপোজ্যাল এই সব হলে সাবধান হওয়া উচিত।
কখন চিকিৎসা প্রয়োজন?
ছয় মাস, আট মাস মাসিক বন্ধ থাকার পর ব্লিডিং হলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই লক্ষণ থাকলে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ মতো বিভিন্ন রকম পরীক্ষা প্রয়োজন। যেমন, স্পেকুলাম পরীক্ষা, কল্পস্কোপি বা প্যাপস্মিয়ার। আবার কারও ক্ষেত্রে ফাইনাল এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপসি করার পরামর্শও দেওয়া হয়।
কী করণীয়?
প্রথমেই ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিতে হবে। উপরিউক্ত টেস্ট করতে হবে। যদি প্যাপস্মিয়ার করে কোনওরকম ভয়ের কারণ না মেলে সেক্ষেত্রে নিয়মিত চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থেকেই সুস্থ হওয়া সম্ভব। যাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল হয়, তাদের জন্য পোস্ট মেনস্ট্রুয়াল ব্লিডিং নিয়ন্ত্রণ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ইউটেরাস ও ওভারি বাদ দিয়ে দেওয়াই ভাল।
ফোন – ৯৪৩৪২১০১৬৯/৯৯৩২৬৯৫০৫০
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.