Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bengal School Band

মস্তিষ্কে অক্সিজেনে ঘাটতি মারাত্মক বিপদ ঘটাতে পারে, সাবধান করছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক

সময় থাকতে সতর্ক হোন। জেনে রাখুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

Bengal School Band becomes first to represent India in Switzerland's Basel Tattoo Festival | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:July 19, 2022 7:43 pm
  • Updated:July 19, 2022 7:43 pm  

ব্রেনের নার্ভ পর্যাপ্ত অক্সিজেনে সচল থাকে। অভাবে নানা সমস্যার উৎপত্তি হয়। সে ব্যাপারেই জানাচ্ছেন কলকাতা ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের কনসালট্যান্ট নিউরোলজিস্ট ডা. সন্তোষ ত্রিবেদী। তাঁর কথা লিপিবদ্ধ করলেন মৌমিতা চক্রবর্তী।

সঠিক কাজের জন্য আমাদের মস্তিষ্কের প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রাণবায়ু অর্থাৎ অক্সিজেন, যা দেহের শক্তি উৎপাদন ও বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার মূল উৎস। মস্তিষ্কের কোষগুলোতে অক্সিজেনের (Oxygen) অভাব হলে সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। অক্সিজেনের ঘাটতি বা হাইপক্সিয়ায় ব্রেনে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও অক্সিজেন প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে কোষগুলো খুব দ্রুত মরে যায়। যার পরিণতি মারাত্মক।

Advertisement

sleep-apnia-check-1

সবচেয়ে বেশি যে কারণে এমন হয়
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ হাইপক্সিয়া অর্থাৎ ঘুমের সময় শ্বাসনালিতে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া চলাকালীন ফুসফুসে অক্সিজেন প্রবেশ বাধাপ্রাপ্ত হলে মস্তিষ্কেও তার প্রভাব সর্বাধিক পড়ে। প্রধানত, ঘুমের বেশ কিছু পর্যায় থাকে, যথাক্রমে NREM বা নন র‌্যাপিড আই মুভমেন্ট এবং REM বা র‌্যাপিড আই মুভমেন্ট। ঘুমের প্রথম পর্যায় হল NREM যা অল্প জেগে থাকা অবস্থা থেকে গভীর ঘুমের দিকে অর্থাৎ REM পর্যায়ে চলে যায় যা স্লিপ হাইপোক্সিয়ার মূলস্থল। 

সাধারণত মধ্যবয়সি মানুষ যাঁদের বয়স ৪০-৫০ এর মধ্যে, মোটা বা স্থূলকায় মানুষ, উচ্চ রক্তচাপের রোগী এবং যাঁরা মদ ও ধূমপানে অভ্যস্ত, তাঁদের মধ্যে এই রোগের প্রাচুর্য বেশি হয়। এঁদের ঘুমের REM পর্যায়ে নাক দিয়ে অক্সিজেন ঢুকে শ্বাসনালির পিছনের দেওয়ালের পেশি অর্থাৎ নাসাফ্যারিনজিয়াল পেশিগুলোর টোন কমিয়ে দেয় ও দেহে অক্সিজেন সরবরাহকারি নালিকে সংকুচিত করে বাধা তৈরি করে। দেহের সবচেয়ে বেশি অক্সিজেন চাহিদাসম্পন্ন অংশ হল ব্রেন, হার্ট ও কিডনি। সুতরাং শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে এই অঙ্গগুলোই সর্বপ্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘদিন মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।

obstructive-sleep

[আরও পড়ুন: হঠাৎ দরদর করে ঘামে অস্বস্তি হচ্ছে? বড় অসুখের লক্ষণ নয় তো!]

কী করে বুঝবেন?
ব্রেনে অক্সিজেনের ঘাটতির শুরু দিকে লক্ষণ খুব নিঃশব্দে আসে। তাই সাধারণত রোগী সেটা বুঝতে পারে না। প্রথমে হালকা নাক ডাকার লক্ষণ থেকে ধীরে ধীরে সেই সমস্যা বাড়তে থাকে। শ্বাসনালি সংকুচিত হয়ে হাওয়া চলাচলের রাস্তা যত সংকীর্ণ হতে থাকে, তত নাক ডাকা বাড়তে থাকে। একসময় শ্বাসনালি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে বিশালমাত্রায় অক্সিজেন ঘাটতি হলে রোগীর প্রচণ্ড নাক ডাকা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় আর রোগী নিঃশব্দে ঘুমোয়। সঙ্গে প্রচণ্ড ছটফট করতে থাকে। যা স্লিপ অ্যাপনিয়া হাইপোক্সিয়ার চরম পর্যায়। ব্রেনের সঙ্গে শরীরে অক্সিজেন লেভেলও তলানিতে এসে দাঁড়ায়। ফলস্বরূপ রোগীর সকালে ঘুম থেকে উঠে মাথাযন্ত্রণা, অর্ধসম্পন্ন ঘুমের ভাব, ঝিমুনি, কার্যে অনীহা, বমিভাব, ক্লান্তির মতো উপসর্গ সারাদিন চলতে থাকে এবং শরীরের সমস্ত এনার্জি শেষ হয়ে যায়। সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেলিওর ও স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে।

sleep-apnia-check

আরও অন্যান্য কারণ
১) হঠাৎ কোনও মানুষের কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের জন্য ব্রেনে রক্ত সরবরাহ ও রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অক্সিজেন মস্তিষ্কের কোষ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। ফলে কোষগুলোর ক্ষতি হয় ও হাইপোক্সিক ইনজুরি হয়।
২) পেরিনাটাল হাইপোক্সিক ইনজুরি অর্থাৎ জন্মের সময় সদ্যোজাত শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই না কাঁদলে তার ব্রেনে অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে ধরে নেওয়া হয়। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে HIE বা হাইপোক্সিক ইসকেমিক এনসেফালোপ্যাথি বলা হয়। অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে এই সব শিশুদের মধ্যে স্নায়ুর সমস্যা দেখা যায়।

চিকিৎসা
হঠাৎ নাক ডাকা বন্ধ হয়ে যাওয়া, সকালে মাথা যন্ত্রণা, কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়ার মতো লক্ষণে তৎক্ষণাৎ ইএনটি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। পলিসোমনোগ্রাফি নামক টেস্টের মাধ্যমে শ্বাসনালিতে কতটা জায়গা বাধা সৃষ্টি করেছে বা হাইপোক্সিয়ার পরিমাণ, রোগীর ঘুমের NREM ও REM-এর মতো ঘুমের সমস্ত পর্যায়ের চুলচেরা পর্যবেক্ষণ, এমনকী, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কত তাড়াতাড়ি ৯০-এর নিচে নেমে যাচ্ছে, প্রভৃতি সম্পর্কে জানা যায়।

এই মেশিন সারারাত ধরে রোগীর দেহে সংযুক্ত করা থাকে। এই পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে রাতে ঘুমানোর সময় রোগীর নাকে ও মুখে বাইপ্যাপ ও সি-প্যাপ মেশিন লাগিয়ে এবং কৃত্রিম পদ্ধতিতে পরিমিত চাপ সৃষ্টি করে শ্বাসনালির অবরুদ্ধ পথকে প্রশস্ত করার চেষ্টা করা হয়। ফলস্বরূপ সারারাত ধরে শরীরের সঙ্গে মস্তিষ্কেও সমান পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছতে পারে ও ঘুমের ব্যাঘাত হয় না। মুখের পিছনের ভাগে নাসাফ্যারিনজিয়াল পেশিগুলোর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাইপ্যাপ মেশিন অসফল হলে ও অক্সিজেনের মাত্রা নামতে থাকলে অপারেশন জরুরি।

ফোন – ৪০৩০৯৯৯৯

[আরও পড়ুন: পাউডার, ক্রিম, লোশন থেকে সাবধান! মাঙ্কিপক্স নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement