ছবি: প্রতীকী।
রোজকার দুষ্টুমি চলুক। কিন্তু তার মাঝেই শিশুকে দু’-তিনটে কলা খাওয়ান। এই ফলের পুষ্টিগুণ এনার্জিতে ভরপুর। শিশুর ভাল থাকার জন্য কলা অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এব্যাপারেই জানাচ্ছেন ডায়েটিশিয়ান সোমালি বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিশুদের ডায়েট পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়া খুবই দরকার। না হলে শিশুর সঠিক বৃদ্ধি সম্পন্ন হয় না। আর শিশুর পুষ্টিকর ডায়েটের তালিকায় অন্যতম কলা। কারণ, কলা হল শরীরের এনার্জির অন্যতম সোর্স। এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন এ, বায়োটিন। এছাড়া কলায় ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম। কলায় গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ ও সুক্রোজ ইত্যাদি ন্যাচারাল সুগারের উপস্থিতি রয়েছে। যা শরীরের এনার্জি বাড়াতে জরুরি। শিশুর শরীরে এই ফলের ভাল প্রভাবই সর্বাধিক।
শিশুর শরীরে কলার উপকারিতা
১. সরাসরি এনার্জি- শিশুরা সারাদিন ছোটাছুটি করে, দুরন্তপনা করে। তাই ওদের এনার্জি দরকার প্রচুর। সারাদিনের ক্লান্তির পর একটা কলা দ্রুত চাঙ্গা করে দিতে পারে। তাই শিশুদের সারাদিন চনমনে রাখতে রোজ একটা করে পাকা কলা খাওয়াতে হবে। বিশেষ করে শিশুকে খেলাধুলো করার পর একটা কলা খেতে দেওয়া খুবই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এতে করে শিশু কখনওই ক্লান্তিবোধ করবে না।
২. হজমশক্তি ঠিক রাখে- কলার মধ্যে যে ফাইবার রয়েছে তা হজমশক্তি ঠিক রাখতে দারুণ কাজ করে। এতে ‘পেকটিন’ নামক ফাইবার রয়েছে। জলে দ্রবীভূত এই ফাইবার শরীরে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেটকে সিম্পল সুগারে পরিণত করে দিতে পারে। রোজ একটা করে কলা খেলে শিশুর মলের সমস্যাও প্রতিহত হয়। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা দূর করা সম্ভব হয়। এছাড়া কলা খেলে পেট ভরে থাকে অনেকক্ষণ।
৩. হাড় ও চোখের জন্য ভাল- কলাতে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে। এই পটাশিয়াম, সোডিয়ামকে লঘু করে দেয়। শিশুর ডায়েটে সোডিয়াম থাকতেই পারে। কলা খেলে তা নিউট্রালাইজ হয়ে যায়। ফলে শিশুর হাড় শক্ত হয়। এছাড়া শিশুদের প্রস্রাবের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম বেরিয়ে যায়। কলা খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়, হাড় শক্ত হয়। এছাড়া রোজ কলা খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। কলাতে ভিটামিন এ উপস্থিত, যা চোখের জন্য ভাল। যে কোনও অসুখের হাত থেকে রেটিনা সুরক্ষিত রাখে।
৪. রক্তাল্পতা রোধ করে- যাদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকা ঠিকমতো উৎপাদন হয় না তারা রক্তাল্পতায় ভোগে বেশি। শিশুর ডায়েটে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি ১২ ও কপার যথেষ্ট পরিমাণে থাকা দরকার। যা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। কলা এই সব পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তাই হিমোগ্লোবিন তৈরির পাশাপাশি অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে কার্যকর।
৫. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়- শিশুর মস্তিষ্কের অন্যতম ফুয়েল কলায় উপস্থিত। কলাতে থাকা পটাসিয়াম ব্রেনে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। এতে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে। সমীক্ষার তথ্য, কলা মনঃসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। কলার শেক বানিয়ে স্কুলে নিয়ে গেলে অথবা পড়াশোনা করার মাঝে খেলে উপকার মেলে। কলার কেক বানিয়েও খাওয়া যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.